<p>রাজধানী ঢাকায় জ্যামের কারণে বিরক্ত হয়নি, এমন মানুষ নেই। পুরো শহরের বিপর্যন্ত অবস্থা হয়ে যায় প্রায়ই। তবে গত ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে গেলে রাস্তায় ট্রাফিক সামলানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। অনেকের মতে, তখন জনজীবনে কিছুটা স্বস্তিরই আভাস মিলেছিল। বর্ষীয়ান অভিনেতা আফজাল হোসেনও তেমনটাই বললেন।</p> <p>মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ফেসবুকের এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে যখন ছাত্র-ছাত্রীরা রাস্তায় নেমে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছিল, সে সময়টাতে একদিন অফিসে দাঁড়িয়ে তিনতলা থেকে সে নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অবাক হয়ে দেখছিলাম। দেখছিলাম, আমাদের অনিয়মের শহর ছুঁ মন্তরে নিয়ম মেনে চলতে পারে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আফজাল হোসেন : অপরাজিত ৭০" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/07/24/1721832886-2415119482600384486297b0df720f4f.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আফজাল হোসেন : অপরাজিত ৭০</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/print-edition/rangberang/2024/07/19/1408305" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি আরো বলেন, ‘মানুষ ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন এই শহরের রাস্তায় কিভাবে চলাচল করে তা সবারই জানা। নিয়ম মানা কারো ধাঁতে নেই। দীর্ঘকাল ধরে অনিয়ম করতে করতে স্বাভাবিক চরিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে নিয়ম না মানা। যে যত বেয়াড়া, সে তত স্মার্ট এই শহরে।’</p> <p>অভিনেতার মতে, ‘রাস্তায় চলাচলের যত রকম নিয়ম আছে, কেউই মানতে পছন্দ করে না। করত না। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম, চাইলেই সব পারা যায়। মনে কথাটা ভেসে ওঠে, বাঙালি শক্তের ভক্ত নরমের যম। যে মানুষ যত উল্টোপাল্টা পুরো শহরজুড়ে বীরদর্পে করে থাকে, একই মানুষ ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে চলাচলের সময় চিরকালের ভদ্রলোকের মতো কড়ায় গণ্ডায় নিয়ম মানে। সেদিন ওপর থেকে দেখছিলাম, কেউ এগোনোর জন্য একটু অনিয়ম করতে চেয়ে গাড়ির মাথাটা লাইন থেকে অল্প বের করে দিতে চেয়ে যেই দেখেছে সামনে একটু দূরে কোনো ছাত্রকে দেখা যাচ্ছে, সাথে সাথে গাড়ি জায়গামতো ফিরিয়ে নিয়ে খুব ভালো মানুষ হয়ে যাচ্ছে।’</p> <p>তবে এখন আবারও সেই পুরনো জ্যামের চিত্র ফিরে এসেছে রাস্তাঘাটে। রাজধানীর বেশ কিছু পয়েন্টে ট্রাফিকব্যবস্থা যা ইচ্ছে তাই! এই পরিস্থিতি তুলে ধরে আফজাল হোসেন বলেন, ‘পথচলা স্বাধীন করে দেওয়া হলো। আবার শহর ও মানুষ নিজের চলা-বলা ফেরত পেয়ে গেল। সবাই চলছে নিজের ইচ্ছামতো, বলছেও যার যার যেমন ইচ্ছা তেমন করে।’</p> <p>এদিকে বাকস্বাধীনতা নিয়েও মন্তব্য করেছেন অভিনেতা। বিগত সরকারের সময়ে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন ছিল। অতীতের স্মৃতি আওড়ে আফজাল হোসেন বলেন, ‘একসময় সবাইকে কথা হিসাব করে বলতে হয়েছে। এখন যার যেমন খুশি বলা যায় বলে লাগামছাড়া কথা বলাবলি হচ্ছে। যখন বলা দরকার; বলা যায়নি। বিড়াল হয়ে কাটানো জীবনে হঠাৎ বাঘ হয়ে দেখানোর  সুযোগ মিলেছে। এখন মানুষ নিশ্চিত, নিজের গলায় বাঘের গর্জন দিলে কারো চোখ রাঙানি দেখতে হবে না বা ঘর চেপে ধরতে আসবে না কেউ।’</p> <p>তিনি বলেন, ‘আমাদের সভ্যতার ভব্যতার সীমা জানা নেই। অপমানজনক আচরণ, কথা বলায় আমাদের দক্ষতা সর্বজনবিদিত। এখন যেন বুক ফুলিয়ে অনুচিত কাণ্ড করা যায়। যেমন খুশি বলে ও করে মর্যাদা বৃদ্ধির সুবর্ণ সুযোগ এসেছে।’</p> <p> </p> <p>নির্দিষ্টভাবে কারো নাম উল্লেখ না করে আফজাল হোসেন বলেন, ‘গতকাল দেখতে পেলাম অসম্মান করে কথা বলা মানুষ টেলিভিশন চ্যানেলে খবর হয়েছে। বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তাকে পর্দায় হাজির করা হলো। টেলিফোনে দায়িত্বশীল, দেশপ্রেমিক দাবি করা মানুষটাকে বলতে শোনা গেল, সে উচিত কাজই করেছে, কোনো অন্যায় করেনি।’</p>