‘১২৭ আওয়ারস’ : মৃত্যুর দুয়ারে টিকে থাকার এক অবিশ্বাস্য লড়াই
শঙ্খনীল দেব
শঙ্খনীল দেব
শেয়ার
‘১২৭ আওয়ারস’ সিনেমার একটি দৃশ্য
সিনেমা শুধু বিনোদনের মাধ্যমই নয়, বরং সিনেমা আমাদের বাস্তব জীবনকে ভিন্ন আঙ্গিকে দেখার সুযোগ করে দেয়। সিনেমা কাল্পনিক উপস্থাপনের মাধ্যমে দর্শকদের শুধু মুগ্ধই করে না, বরং অনুপ্রাণিতও করে। কখনো ভাবায়, কখনো বা আবেগে ভাসায়। আর সেই সিনেমা যদি তৈরি হয় সত্য ঘটনা অবলম্বনে, তাহলে তা হয়ে উঠে শিক্ষনীয়।
ইতিহাস, বীরত্ব, সংগ্রাম কিংবা বেঁচে থাকার লড়াই—এইসব গল্প যখন রূপালী পর্দায় উঠে আসে তখন তা শুধু সিনেমা নয়, হয়ে ওঠে এক অমূল্য অভিজ্ঞতা। তবে কিছু গল্প যেমন হুবহু সত্য ঘটনা থেকে নির্মিত, আবার কিছু গল্প নেওয়া হয় সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা বিভিন্ন বই-উপন্যাস থেকে। যেগুলো সত্য ঘটনার প্রতিচ্ছবি হিসেবেই ধরা হয়।
আরো পড়ুন
ইফতার আয়োজন করে বিপাকে বিজয়, থানায় অভিযোগ দায়ের
রুপালী পর্দায় সত্য ঘটনা অবলম্বনে অসংখ্য সিনেমা নির্মিত হয় প্রতি বছর।
যেখানে উঠে আসে বাস্তব জীবনের সত্য। পর্দায় গল্প আকারে হাজির হলেও বাস্তবে রয়েছে তার অস্তিত্ব। যা গল্প হলেও সত্যি। আজকের আয়োজনে থাকছে এমন এক সিনেমার গল্প যা বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে লিখিত এক বইয়ের আঙ্গিকে নির্মিত হয়েছে।
যার নাম ‘১২৭ আওয়ারস’।
২০১০ সালে মুক্তি পায় ড্যানি বয়েল পরিচালিত ‘১২৭ আওয়ারস’। বায়োগ্রাফিক্যাল, সারভাইভাল ড্রামা কিংবা অ্যাডভেঞ্চার ড্রামা- এইসব জনরার সিনেমাপ্রেমীদের জন্য যা ছিল এক দারুণ উপহার। সিনেমাটি অ্যারন রালস্টনের বাস্তব জীবনের ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। অ্যারন একজন দুঃসাহসী পর্বতারোহী ও অভিযাত্রী, যিনি একদিন একাই ক্যন্যনল্যান্ডস ন্যাশনাল পার্কে অভিযানে যান।
কিন্তু দুর্ঘটনাবশত তিনি একটি সংকীর্ণ গিরিখাতে পড়ে যান আর তার ডান হাত বিশাল একটি পাথরের নিচে আটকে যায়। এমতাবস্থায় তিনি নিজের হাত কোনোভাবেই সেখান থেকে বের করতে ব্যর্থ হন। আটকা পড়ে যান সেই গভীর উপত্যকায়। একদম একাকী।
অ্যারন রালস্টন (ছবি : ইন্টারনেট)
দেখতে দেখতে ভয়াবহতম এক পরিবেশে ৫ দিনের বেশি বা ১২৭ ঘণ্টা ধরে তিনি একাই সেখানে আটকে থাকেন। খাবার নেই, পানি প্রায় শেষ, বাঁচার কোনো উপায় নেই। ধীরে ধীরে তিনি বুঝতে পারেন, যদি মুক্ত হতে চান তাহলে নিজের হাত কেটে ফেলাই একমাত্র উপায়! এছাড়া তিনি বের হতে পারবেন না। বরণ করতে হবে মৃত্যুকে। ১২৭ ঘন্টা ধরে পাথরের নিচে চাপা পড়ে যাওয়া হাতের সংবেদনশীলতাও কমতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের হাত কেটে ফেলতে সক্ষম হন। আর সেই জলপ্রপাত থেকে জীবিত বের হন।
জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহতম দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরে অ্যারন ২০০৪ সালে তার আত্মজীবনী ‘বিটুইন আ রক অ্যান্ড আ হার্ড প্লেস’-এ তার দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লিখেছিলেন। যে বইটি অবলম্বনে নির্মিত হয় সিনেমাটি। ড্যানি বয়েল চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য রচনা করেন এবং পরিচালনা করেন। এই সিনেমায় জেমস ফ্র্যাঙ্কো অসাধারণ অভিনয় করেছেন। বলতে গেলে পুরো সিনেমা প্রায় এককভাবে তার পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভরশীল এবং তিনি দারুণভাবে তা ফুটিয়ে তুলেছেন। তার একাকীত্ব, ভয়, মানসিক যুদ্ধ, আশা আর বাঁচার তীব্র আকাঙ্ক্ষা দর্শকের হৃদয়ে গভীর দাগ কাটে।
পরিচালক ড্যানি বয়েল নির্মাণে দেখিয়েছেন মুন্সিয়ানা। ক্যামেরার কাজ, রোমাঞ্চকর মুহুর্তকে বাস্তবের প্রতিচ্ছবির রুপ দেওয়া এবং বাস্তবসম্মত উপস্থাপনা দর্শককে পুরো গল্পের মধ্যে ডুবিয়ে রাখে। সেই সঙ্গে সংগীতের আবহ গা ছমছমে এক পরিবেশ তৈরি করে যা সেই মুহুর্তের ভয়াবহতা তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে।
‘১২৭ আওয়ারস’ থেকে জীবন সম্পর্কিত অনেক শিক্ষা ও বার্তা পাবেন দর্শকরা। জীবন কখনো থেমে থাকে না, যত কঠিন পরিস্থিতিই আসুক মনোবল ধরে রাখলে সবকিছু সম্ভব। প্রাকৃতিক বিপদকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না, অভিযানে গেলে প্রস্তুতি থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সবচেয়ে জরুরি, বেঁচে থাকার ইচ্ছাই সবচেয়ে বড় শক্তি। এই সিনেমা শুধু একটি সারভাইভাল থ্রিলার নয়, এটি মানসিক শক্তি ও বেঁচে থাকার ইচ্ছাশক্তির এক অনন্য উদাহরণ। এটি দেখলে আপনার জীবন নিয়ে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য হবেন!
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনত্রী সাদিয়া আয়মান দাবি করে কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। গেল কয়েক দিনে এই অভিনেত্রীর দুই পোশাকে বিকৃত ৮টির বেশি ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। তবে ফ্যাক্ট চেক করে দেখা গেছে, ছবিগুলো সাদিয়া আয়মানের নয়।
রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, প্রচারিত ছবিগুলো ইন্টারনেট থেকে ভারতীয় এক নারীর ছবি সংগ্রহ করে সেগুলোতে এআই প্রযুক্তির সাহায্যে সাদিয়া আয়মানের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
পরে ছবিগুলো প্রচারও করা হয়েছে।
আরো পড়ুন
বেরোবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও নাম্বার টেম্পারিংয়ের অভিযোগ
রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধান বলছে, ‘স্নিগ্ধা সারথী’ নামের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি প্রকাশিত কিছু ছবির সঙ্গে জোড়া দিয়ে তা সাদিয়া আয়মান হিসেবে চালানো হয়। ছবিগুলোতে মুখমণ্ডল ছাড়া অন্য সব কিছুতে স্নিগ্ধার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে লোকেশন হিসেবে দেখা যায় ভারতের।
অর্থাৎ এই ছবিগুলোতে সাদিয়া আয়মানের মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপন করে আলোচিত ছবিগুলো তৈরি করা হয়েছে।
এ ছাড়া অন্য পোশাকে আরো কয়েকটি ছবি সাদিয়া আয়মানের নামে চালানো হয়েছে। রিউমর স্ক্যানার অনুসন্ধান বলছে, ‘দিল মারিয়ান নেহা’ নামের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত কিছু ছবির সঙ্গে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়। ছবিগুলোতে মুখমণ্ডল ছাড়া অন্য সব কিছুতে মিল খুঁজে পাওয়া যায়।
অ্যাকাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে লোকেশন হিসেবে দেখা যায় বাংলাদেশের।
পাশাপাশি একই নারীর টিকটক অ্যাকাউন্টে একই পোশাক পরিহিত তার একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যা আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবিগুলোর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
আমার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো সম্পর্ক নেই : ইমান ইসমাইল
বিনোদন ডেস্ক
বিনোদন ডেস্ক
শেয়ার
অভিনেত্রী ইমান ইসমাইল
গত মঙ্গলবার ভারতের কাশ্মীরে নেমে আসে এক কালো ছায়া! সেখানকার পেহেলগামে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন পর্যটক। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ পুরো ভারত, সাধারণদের পাশাপাশি শোক ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন বলিউড তারকারাও।
এ ঘটনায় নিন্দাকে সঙ্গে নিয়েই পাকিস্তানি অভিনেতাদের বয়কট করার ডাক উঠেছে মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিজে; বাদ নেই দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিজও। আর এই বয়কটের মুখে পড়ে রীতিমতো বিপাকে দক্ষিণী অভিনেত্রী ইমান ইসমাইল।
তাকে ‘পাকিস্তানের মেয়ে’ বলে সম্বোধন করার পাশাপাশি কটাক্ষ করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, রীতিমতো ভারত ছাড়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে তাকে।
আরো পড়ুন
সম্পর্ক ভেঙে গেছে সামিরা খান মাহির!
এমন অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো এই বিতর্কের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন ইমান নিজেই। ইনস্টাগ্রামে এক পোস্ট করে অভিনেত্রী স্পষ্ট জানালেন, ‘ইন্টারনেটে যা রটেছে, তা একেবারেই বিভ্রান্তিকর।
আমার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো সম্পর্ক নেই।’
সেই ইনস্টাগ্রাম পোস্টে অভিনেত্রী ইমান আরো লেখেন, ‘প্রথমেই বলতে চাই, কাশ্মীরের পেহেলগামে যা ঘটেছে, তার তীব্র নিন্দা করি। স্বজন হারানো পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল। আর এবার বলতে চাই।
শুধু ঘৃণা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আমার নামে নানা রকম ভুল খবর ছড়ানো হয়েছে। এর বিরোধিতা করছি।’
আরো পড়ুন
হাসি শেয়ার করা গেলে কান্নাও শেয়ার করা যায়
অভিনেত্রী লেখেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমার এবং আমার পরিবারের সঙ্গে পাক সেনা এবং পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। আমি আমেরিকার বাসিন্দা এবং ভারতকন্যা। হিন্দি, তেলুগু, গুজরাটি এবং ইংরেজি বলতে পারি।
লস অ্যাঞ্জেলেসে জন্ম আমার। তবে আমার পরিবারের সবাই ভারতেই থাকতেন। সুতরাং যেটা রটেছে, তা একেবারেই বিভ্রান্তিকর।’
ঢাকা পদাতিকের ৩৮তম প্রযোজনা ‘ট্রায়াল অব সূর্য সেন’। আগামী ২৯ এপ্রিল, সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে ২৭ ও ২৮ এপ্রিল হবে নাটকটির মহড়া।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীর সেনানী মাস্টারদা সূর্য সেনের প্রহসনমূলক বিচার ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়বস্তুকে উপজীব্য করে নাটকটি মঞ্চে আনে ঢাকা পদাতিক।
‘ট্রায়াল অব সূর্য সেন’ নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দেন নাট্যজন মাসুম আজিজ। তার মৃত্যুর পর নব নির্দেশনার কাজটি করছেন অভিনেতা নাদের চৌধুরী।
গত বছর দিল্লিতে নাটকটির দুটি প্রদর্শনী হয়। সেখানেও বেশ প্রশংসা কুড়ায়।
এ বিষয়ে নাদের চৌধুরী বলেন, “‘ট্রায়াল অব সূর্য সেন’ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন নিয়ে ঐতিহাসিক একটি নাটক। এর রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রয়াত মাসুম আজিজ ভাই। পরবর্তীতে এই নাটকের কিছু কিছু জায়গায় প্রয়োজন সাপেক্ষে অলংকরণ করে আমি নবনির্দেশনার কাজটি করেছি। মাস্টারদা সূর্য সেন এই নাটকের প্রধান চরিত্র, এটি আমি রূপায়ণে করেছি।
ঐতিহাসিক এই নাটক এখনকার জেনারেশনের দেখা উচিত।”
এ নাটকের চরিত্র সংখ্যা প্রায় ৪০টি। এসব চরিত্র হলো সূর্য সেন, প্রীতিলতা, কল্পনা দত্ত, অম্বিকা রায়, নির্মল সেন, ব্রিটিশ উকিল, নেত্র সেন, বাঙালি উকিল প্রমুখ। এসব চরিত্র রূপায়ণ করছেন নাদের চৌধুরী, মাহবুবা হক কুমকুম, মনজুরুল ইসলাম নানটু, শাহনাজ পারভিন জয়া, মামুনুর রশীদ, শ্যামল হাসান, সাবিহা জামান, আক্তার হোসেন, তারেক আলী মিলন, আতিক, রবিউল মিলটন, আল আমিন, সুমন ঘোষ, নিপা প্রমুখ।