এদেশের সফল একজন অভিনেত্রী শাবানা। এদেশের চলচ্চিত্রে কাজ করে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন আকাশসম। সফল ক্যারিয়ার শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এই অভিনেত্রী। স্থায়ীভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে থাকেন শাবানা।
তবে মাঝেমধ্যে দেশে আসেন। কয়েক বছর আগে শাবানা দেশে এসেছিলেন, সেসময়ই জানিয়েছিলেন তার একটা অপূর্ণ ইচ্ছের কথা।
কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে বলেছিলেন,‘সুভাষদত্ত আমাকে খুবই পছন্দ করতেন। বলতেন, তোমার মুখের আদলটা বেগম রোকেয়ার মতো।
আমি মনে মনে খুবই খুশি হয়েছি। কারণ এমন একজন নারীর সঙ্গে আমার তুলনা করছেন বিখ্যাত নির্মাতা, এটা আনন্দের বিষয়ই। সুভাষ দত্ত বলেছিলেন, আমি বেগম রোকেয়াকে নিয়ে একটি ছবি বানাবো, সেখানে তুমি অভিনয় করবে। আমারও ইচ্ছে হয়েছিল পর্দায় বেগম রোকেয়া হতে। ৩০ বছর আগে সেই ছবির শুটিং শুরুও হয়েছিল। কিন্তু শেষ হয়নি। শুটিং থমকে যায়, আর আমার বেগম রোকেয়া হওয়ার স্বপ্ন থমকে যায়। সেই অপূর্ণ ইচ্ছা আমাকে এখনো ভাবায়, আফসোস তৈরি হয়।’
‘বেগম রোকেয়া’ চলচ্চিত্রের মহরতও হয়েছিল।
হয়েছিল এক দিনের শুটিংও। কিন্তু ছবিটি আর এগোয়নি। বারিধারার বাসায় শাবানা কথা প্রসঙ্গে আফসোসের কথা বললেও এর নেপথ্যের কারণ বলতে গিয়েও বলেননি। তবে অনুমান করা যায় একেবারে রাজনৈতিক কারণে বেগম রোকেয়ার জীবনী নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায়, আর শাবানাও সেই অপূর্ণ ইচ্ছে নিয়ে এখনো আফসোস করেন।
শাবানা অভিনয় ছেড়ে দিয়েছেন প্রায় ২৫ বছর আগে। অন্যদিকে সুভাষ দত্ত প্রয়াত হয়েছেন এক যুগ আগে। এদিকে সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে শাবানার স্বামী ছবিটি আবার বানানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন। তবে শাবানার সেই ইচ্ছে পূর্ণ হচ্চ্যহে না। কারণ রোকেয়ার ছবি হলেও তাতে শাবানা থাকবেন না। গণমাধ্যমকে ওয়াহিদ সাদিক জানালেন, শাবানা এখন আর বেগম রোকেয়া চরিত্রে অভিনয়ের পর্যায়ে নেই। তা ছাড়া তিনি অভিনয়ে ফিরবেনও না।
শাবানার চলচ্চিত্রে আসা অনেকটাই ছিল নাটকীয়। কথা প্রসঙ্গে শাবানা শুরুর গল্প বলেছিলেন এভাবেই, “আমি তখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। আমার বাবার কাজিন ছিলেন এহতেশাম সাহেব। এক ঈদে বাসায় এসে বললেন, তোর মেয়েটাকে দে, আমার সিনেমায় অভিনয় করাব। বাবা বললেন, ও তো লাজুক, ও পারবে না। এহতেশাম সাহেব বললেন, পারবে, তুই দে। আমার রোলটা ছোট বোনের, একটাই দৃশ্য। দৌড়ে এসে বলতে হবে, ‘ভাইয়া ভাইয়া, আপুর বিয়ে।’ ভাইয়া বলবে, ‘তাই নাকি!’ শট দিলাম। এক টেকেই ওকে। এহতেশাম সাহেব বাবাকে বললেন, দেখলি আমি বললাম না, পারবে! এরপর তো বড় হয়ে ‘চকোরী’ করলাম, আমার প্রথম চলচ্চিত্র। সেই ছবিতে আমার পারিশ্রমিক ছিল পাঁচ হাজার টাকা। পরে তো কয়েক শ ছবি করলাম।”