বিধবা পুত্রবধূকে পড়াশোনা শিখিয়ে বিয়ে দিলেন শাশুড়ি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিধবা পুত্রবধূকে পড়াশোনা শিখিয়ে বিয়ে দিলেন শাশুড়ি

উপমহাদেশে বিধবা বিবাহ নতুন কোনো ঘটনা নয়। এখন তো এটা বহুল প্রচলিত। কিন্তু বিধবা তরুণীকে যদি তার শাশুড়ি আবার বিয়ে দেয়- তাতে চোখ কপালে উঠবে বৈকি! মনে প্রশ্ন জাগে, এমন উদার মনের মানুষও পৃথিবীতে আছেন? বিয়ের ৬ মাসের মাথায় ছেলের মৃত্যু হয়েছিল। এরপর সদ্য বিধবা পুত্রবধূকে মায়ের মমতায় স্বাবলম্বী করে তোলেন শাশুড়ি।

তারপর তাকে ফের বিয়ে দেন। বিরলতম এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের রাজস্থানে।

বিয়ের ৬ মাসের মাথায় স্বামী মারা গেলে উপমহাদেশের সমাজে সদ্য বিধবার কপালে নানা দুঃখ লেখা থাকে। স্বামীর মৃত্যুর জন্য বিধবা মেয়েটিকেই দায়ী করা হয়।

তাকে 'অপয়া' বলা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে তেমনটা হয়নি। রাজস্থানের সেই পুত্রশোকাতুর মা এই পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়তে পারতেন। সদ্য বিধবা পুত্রবধূর উপর রাগ দেখিয়ে তার ওপর দায় চাপাতে পারতেন।
যেমনটা উপমহাদেশের বেশিরভাগ ঘরেই হয়ে থাকে। কিন্তু এসবের কিছুই হয়নি। \"\"

সুনীতার প্রথম স্বামী কমলা দেবীর কনিষ্ঠ পুত্র শুভম। ছবি : সংগৃহীত

২০১৬ সালের মে মাসে রাজস্থানের শিকরের কমলা দেবীর কনিষ্ঠ পুত্র শুভমের সঙ্গে বিয়ে হয় সুনীতার। বিয়ের পরই স্বামী এমবিবিএস পড়তে চলে যান কিরঘিজস্তানে।

ওই বছরই নভেম্বর মাসে ব্রেনস্ট্রোকে হয়ে মৃত্যু হয় শুভমের। সুনীতা তখন রাজস্থানে, শ্বশুরবাড়িতে। তার সঙ্গী এবং অভিভাবক বলতে শাশুড়ি কমলা দেবীই ছিলেন। সদ্য বিধবা তরুণীকে ভালো রাখার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা কমলা। \"\"

নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভোপালের ছেলে মুকেশের সঙ্গে সুনিতাকে আবারও বিয়ে দিয়েছেন কমলা দেবী। ছবি : সংগৃহীত

একজন শিক্ষিকা হিসেবে তিনি সুনীতাকে তার পড়াশোনা সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দেন এবং সবরকম সহযোগিতা করেন। শাশুড়ির উৎসাহেই সুনীতা স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে পুত্রবধূকে বিএড পড়ার জন্যও উৎসাহিত করেন কমলা। স্বামীকে হারানোর চার বছরের মধ্যে রাজস্থানেরই একটি স্কুলে ইতিহাসের শিক্ষিকার চাকরিও পেয়ে যান সুনীতা। কিন্তু একজন তরুণীর জীবন কি এভাবেই চলতে পারে? পাঁচ বছর ধরে পুত্রবধূকে স্বাবলম্বী করার পর কমলা দেবী তাই সিদ্ধান্ত নেন, সুনিতাকে আবারও বিয়ে দেবেন। \"\"

বিয়ের সাজে শাশুড়ি কমলা দেবীর সঙ্গে সুনিতা। ছবি : সংগৃহীত

যেমন ভাবা তেমন কাজ। পাত্র খুঁজতে নেমে পড়েন কমলা। সম্প্রতি পুত্রবধূর সঙ্গে তিনি ভোপালের ছেলে মুকেশের চার হাত এক করে দেন। মুকেশ পেশায় কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের হিসাবরক্ষক। নিজে হাতে পুত্রবধূকে সাজিয়েছেন কমলা। বিয়েতে সব আত্মীয়স্বজনকে নিমন্ত্রণ করেছেন। শ্বশুরবাড়িতেই বসেছে সুনীতার বিয়ের আসর। কন্যাদান করেছেন শাশুড়ি কমলা নিজে। এই ঘটনায় কমলা দেবীর প্রতি শ্রদ্ধায় অবনত হয়েছেন এলাকাবাসী থেকে শুরু করে ভার্চুয়াল দুনিয়া। \"\"

বউমাকে 'লক্ষ্মী' বলে সব শাশুড়িই ঘরে আনেন। কিন্তু পুত্রবধূর জীবন নিয়ে ভাবেন কয়জন শাশুড়ি? ছবি : সংগৃহীত

স্থানীয় গণমাধ্যমকে কমলার প্রতিবেশিরা বলেছেনন, সুনীতাকে প্রথম দিন থেকেই ঘরের লক্ষ্মী বলে ডাকতেন তার শাশুড়ি। ছেলের থেকেও বেশি ভালবাসতেন বউমাকে। তবে মুখে বলা এবং কাজে করে দেখানোর মধ্যে এক কথা নয়। সহজও নয়। কমলা সেই কঠিন কাজ করে দেখিয়েছেন। বউমাকে 'লক্ষ্মী' বলে সব শাশুড়িই ঘরে আনেন। কিন্তু পুত্রবধূর জীবন নিয়ে ভাবেন কয়জন শাশুড়ি? এই অন্যরকম শাশুড়ির গল্প নিয়ে বলিউডে সিনেমা হবে কিনা জানা নেই; তবে মানুষের মনে তিনি থেকে যাবেন অনেকদিন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ধর্ষণের শাস্তি কোন দেশে কেমন?

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ধর্ষণের শাস্তি কোন দেশে কেমন?
সংগৃহীত ছবি

সম্প্রতি ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। ধর্ষকদের শাস্তি নিয়ে আওয়াজ তুলছে মানুষ। আইনি ব্যবস্থা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।

অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠছে দেশে ধর্ষকদের শাস্তির বিধান কী? এর বাইরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ধর্ষণের মতো অপরাধের শাস্তির বিধানগুলোও আলোচনায় আসছে।

কেউ কেউ আইন সংশোধনের কথাও বলছেন।

বাংলাদেশে ধর্ষণের শাস্তি বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে নির্ধারিত। বর্তমানে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ২০২০ সালে বাংলাদেশ সরকার ধর্ষণের শাস্তি কঠোর করে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন’ সংশোধন করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র : 

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ভিন্ন ভিন্ন শাস্তির বিধান রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ধর্ষণের শাস্তি নির্ভর করে অপরাধের ধরন ও রাজ্যভেদে আইন অনুযায়ী। সাধারণত ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে।

রাশিয়া : 

রাশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি কঠোর। দোষী সাব্যস্ত হলে ২০ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

চীনে ধর্ষণের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। যদি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মেডিক্যাল পরীক্ষায় প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কোনো দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড বা আজীবনের জন্য নপুংসক (castration) করে দেওয়া হয়।

সৌদি আরব : 

সৌদি আরবে ধর্ষণের শাস্তি ইসলামী শরিয়াহ আইনের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।

সাধারণত অপরাধ প্রমাণিত হলে শিরচ্ছেদ (শিরোচ্ছেদ) করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে শরিয়াহ আইন অনুসরণ করা হয়, যেখানে দোষী সাব্যস্ত হলে পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

আফগানিস্তান : 

আফগানিস্তানে ধর্ষণের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জনসমক্ষে গুলি করে হত্যা করা হয়।

উত্তর কোরিয়া : 

উত্তর কোরিয়ায় ধর্ষণের অপরাধে দোষী প্রমাণিত হলে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

মালয়েশিয়া : 

মালয়েশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর। এখানে ধর্ষণের দোষী সাব্যস্ত হলে সরাসরি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

ভারত : 

ভারতেও যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তির বিধান রয়েছে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে।

মিশর : 

মিশরে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ফাঁসিতে ঝোলানোর বিধান রয়েছে।

ইরান :

ইরানে ধর্ষককে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ফাঁসিতে ঝোলানো এবং কখনও কখনও পাথর ছুড়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

রমজান মাসে নরসিংদীতে টিকার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
রমজান মাসে নরসিংদীতে টিকার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
সংগৃহীত ছবি

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে নরসিংদীর রায়পুরায় খাদ্যসামগ্রী উপহার বিতরণ করা হয়েছে। শনিবার (৮ মার্চ) উপজেলার সিরাজনগর উম্মুলকুরা মাদরাসা মাঠে ২০০ জন গ্রামবাসীর মধ্যে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়। 

উপহারসামগ্রীর ফুড প্যাকেজের মধ্যে ছিল চাল, তেল, ডাল, চিনি, ছোলা, আটা, খেজুর ও বিস্কুট।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টার্কিস করপোরেশন অ্যান্ড কর্ডিনেশন এজেন্সি (টিকা) এর কান্ট্রি ডাইরেক্টর শেভকি মের্ত বারিশ।

তিনি বলেন, ‘এই উপহার তুরস্কের জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য ভালোবাসার প্রতীক।’

এ উদ্যোগের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান ইয়ুথ অপরচুনিটিস-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিওও ডা. ওসামা বিন নূর গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে টিকাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতার নিদর্শনস্বরূপ নরসিংদীর বিখ্যাত শাকসবজি উপহার প্রদান করেন। উক্ত মানবিক উদ্যোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে আনন্দ ও কৃতজ্ঞতার সঞ্চার করেছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সবুজ রঙের অমূল্য রত্ন পান্না, কেন এত জনপ্রিয়?

    পান্নার সবচেয়ে প্রধান বৈশিষ্ট্য তার উজ্জ্বল সবুজ রঙ
শেয়ার
সবুজ রঙের অমূল্য রত্ন পান্না, কেন এত জনপ্রিয়?
সংগৃহীত ছবি

পান্না বা এমেরাল্ড বা তার সুন্দর সবুজ রং দিয়ে হাজার বছর ধরে মানুষকে মুগ্ধ করে আসছে। বর্তমান সময়ে সবাই বিশেষ করে নারীরা পান্নার ভক্ত।  
চলুন জেনে নেওয়া যাক কেন পান্না সবার কাছে এত প্রিয় এবং চাহিদাপূর্ণ।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব
এমেরাল্ড প্রাচীনকাল থেকেই মূল্যবান।

মিসরে ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রথম পান্নার খনি খনন করা হয়েছিল। মিসরের রানি ক্লিওপেট্রার এই রত্নের প্রতি গভীর ভালোবাসা ছিল। তিনি প্রাসাদে পান্নার তৈরি গয়না ব্যবহার করতেন এবং অতিথিদের উপহার দিতেন। প্রাচীন রোমে পান্নাকে সৌন্দর্য এবং ভালোবাসার দেবী ভেনাসের সঙ্গে তুলনা করা হতো।
রোমান সম্রাট নেরো এমেরাল্ড গ্লাস দিয়ে গ্ল্যাডিয়েটর ম্যাচ দেখতেন। ইনকা এবং আজটেক সভ্যতা এ রত্নকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করত এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহার করত।

অনন্য সৌন্দর্য
পান্নার সবচেয়ে প্রধান বৈশিষ্ট্য তার উজ্জ্বল সবুজ রং। এটি নীলাভ-সবুজ থেকে গভীর সবুজ পর্যন্ত হতে পারে।

এই রঙটি পাওয়া যায় বেরিল খনিজের মধ্যে থাকা ক্রোমিয়াম এবং ভ্যানাডিয়ামের কারণে। 

জ্যোতিষশাস্ত্র
পান্নার সঙ্গে জ্যোতিষশাস্ত্রের সম্পর্ক রয়েছে। পান্নাকে বুধ গ্রহের রত্ন হিসেবে গণ্য করা হয়। যা বুদ্ধিমত্তা ও যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং অর্থনৈতিক সাফল্য আনতে পারে। পশ্চিমা জ্যোতিষশাস্ত্রে মে মাসে জন্মগ্রহণকারী ব্যক্তিদের জন্য পান্না একটি শুভ রত্ন এবং এটি তাদের ভাগ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।

তাই অনেকে পান্না বসানো আংটি পরিধান করেন।

সাংস্কৃতিক প্রভাব ও গয়না তৈরিতে ব্যবহার
পান্না পৃথিবীর বিভিন্ন সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইদানীং ভারতে এটি বিয়ের গয়না তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে। মুঘল সম্রাটরা পান্নার প্রতি বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। এর সুন্দর সবুজ রং সোনা, প্লাটিনাম এবং সিলভারের মতো ধাতুর সঙ্গে খুব ভালো মানায়। পান্না অন্য রত্নের সঙ্গে মিলিয়ে যেমন ডায়মন্ডের সঙ্গে ব্যবহার করলে আরো আকর্ষণীয় হয়। 

সার্টিফিকেটসহ পান্না কেনা
পান্না কেনার সময় নিশ্চিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ যে এটি আসল এবং উচ্চমানের। সার্টিফিকেটসহ পান্না একটি বিশ্বাসযোগ্য জেমোলজিক্যাল ল্যাবরেটরি থেকে প্রমাণিত হয়। যা এর বৈশিষ্ট্যগুলো যেমন- রং, স্বচ্ছতা, আকার এবং ওজন নিশ্চিত করে। 
যদি আপনি সুন্দর এ রত্নটি কেনেন তখন চারটি সি (রং, স্বচ্ছতা, কাট এবং ক্যারাট ওজন) মনে রাখুন। সার্টিফিকেটসহ কেনা হলে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে এটি আসল ও অমূল্য একটি রত্ন।

সূত্র : মিন্টলি

মন্তব্য
স্বরণ

পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালঙ্কারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালঙ্কারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
সংগৃহীত ছবি

ভারতীয় উপমহাদেশের ঊনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম পণ্ডিত ব্যক্তিত্ব মদনমোহন তর্কালঙ্কারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি লেখ্য বাংলা ভাষার বিকাশে বিশেষ অবদান রেখে গেছেন। তিনি বাংলার নবজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত হিসাবেও পরিগণিত। তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অধ্যাপক ছিলেন এবং বাল্যশিক্ষার জন্য একাধিক পাঠ্যপুস্তক রচনা করেন।

১৮১৭ খ্রিষ্টাব্দে নদীয়া জেলায় বেথুয়াডহরী, নাকাশীপাড়ার বিল্বগ্রামে এক হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মদনমোহন। তাঁর পিতার নাম রামধন চট্টোপাধ্যায় ও মাতার নাম বিশ্বেশ্বরী দেবী ৷ তার দুই সন্তান ছিল যাদের নাম ভুবনমালা ও কুন্দমালা।

আরো পড়ুন
সিদ্ধিরগঞ্জের আগুনের ঘটনায় আরো একজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৩

সিদ্ধিরগঞ্জের আগুনের ঘটনায় আরো একজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৩

 

মদনমোহন সংস্কৃত কলেজে শিক্ষাগ্রহণ করেছিলেন, সেখানে তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সহপাঠী ছিলেন। তিনি পরবর্তীতে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে শিক্ষা গ্রহণ করেন।

তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। পরবর্তীতে ১৮৫০ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার বিচারক নিযুক্ত হন। তিনি ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে মুর্শিদাবাদের এবং ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে কান্দির ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হয়েছিলেন।

আরো পড়ুন
ল্যানকার্ড-এর ব্যবহার

ল্যানকার্ড-এর ব্যবহার

 

তিনি ছিলেন 'হিন্দু বিধবা বিবাহ' প্রথার অন্যতম উদ্যোক্তা।

১৮৫৭ সালে প্রথম বিধবা বিবাহ হয়। ওই বিয়ের পাত্র শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন এবং পাত্রী ছিলেন কালীমতি। তাঁদের দুজনের সন্ধান ও যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে মদনমোহন তর্কালঙ্কার ছিলেন অন্যতম।  স্ত্রী শিক্ষার প্রসারে তার অবদান অনস্বীকার্য। ১৮৪৯-এ বেথুন কর্তৃক হিন্দু মহিলা স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে নিজের দুই মেয়েকে সেখানে ভর্তি করেন তিনি।
নিজে বিনা বেতনে এই স্কুলে বালিকাদের শিক্ষা দিতেন। ১৮৫০ সালে সর্বশুভকরী পত্রিকায় স্ত্রী শিক্ষার পক্ষে একটি যুগান্তকারী প্রবন্ধও লেখেন।

আরো পড়ুন
পুরান ঢাকায় সালিস বৈঠকে বোন জামাইয়ের হাতে ব্যবসায়ী নিহত

পুরান ঢাকায় সালিস বৈঠকে বোন জামাইয়ের হাতে ব্যবসায়ী নিহত

 

তিনি ১৪টি সংস্কৃত বই সম্পাদনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে রয়েছে, রসতরঙ্গিণী (১৮৩৪), বাসবদত্তা (১৮৩৬), শিশু শিক্ষা- তিন খণ্ড (১৮৪৯ ও ১৮৫৩)।

১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দের ৯ মার্চ (আজকের দিনে) কান্দিতে কলেরা রোগে মৃত্যুবরণ করেন।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ