<article> <p style="text-align: justify;">দেশের প্রধান সমস্যা দুর্নীতি। দেশের অর্থনীতিকে গিলে খাচ্ছে সর্বগ্রাসী দুর্নীতি। গত কয়েক দশকে দুর্নীতি কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। এসব প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতিকে এখন দুর্নীতি বলেই মনে করা হয় না। বরং অনেকেই এটাকে তাদের প্রাপ্য বলে মনে করে। বেশির ভাগ সরকারি প্রকৌশল অফিসে ঠিকাদারকে তাঁর সম্পাদিত কাজের জন্য প্রাপ্য বিলের একটি নির্দিষ্ট অংশ (৫ থেকে ১৫ শতাংশ) বাধ্যতামূলকভাবে দিয়ে দিতে হয়। বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, সিএনজি-ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ বেসরকারি যানবাহন ও ব্যবসা পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশকে দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক বা মাসিক ভিত্তিতে ঘুষ দিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে অগ্রিম ঘুষ প্রদানের জন্য রীতিমতো টোকেন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">রাস্তায় পুলিশ যানবাহন আটকালে অগ্রিম পরিশোধিত ঘুষের টোকেন দেখালেই হয়। এমনকি আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যেও ঘুষ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ ধারণ করেছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীকে আইনি লড়াই শুরুই করতে হয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেআইনি অর্থ প্রদানের মাধ্যমে। ২০১০ সালের মার্চ মাসে Asian Human Rights Commission কর্তৃক প্রকাশিত জার্নাল Article-2-এর ভলিউম ৯ সংখ্যা ১-এ বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এম শামসুল হক  Anti-Corruption Mechanism in Bangladesh শিরোনামের প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘কোন মামলা তালিকার অগ্রভাগে নেওয়ার জন্য কিছু বেঞ্চ কর্মকর্তা ৫০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন।</p> </article> <p style="text-align: justify;">এটা সবাই জানে, কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করে না। মামলা তালিকাভুক্ত হওয়ার পর মামলার ফাইল তত্ত্বাবধানকারীকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দেওয়া না হলে তা বিচারপতির সামনে উপস্থাপন করা হয় না। একটি রিট মামলা কিংবা ফৌজদারি মোশন দায়ের করা হলে শুনানির জন্য আইনজীবীকে তিন থেকে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ কর্মকর্তাকে উৎকাচ প্রদান করা হলে দায়েরের দিনই শুনানির ব্যবস্থা করা হয়। আর উৎকাচের পরিমাণ বেশি হলে তত্ক্ষণাৎ শুনানি অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা হয়।’</p> <article> <p style="text-align: justify;">আগে দুর্নীতিবাজদের মধ্যে সংকোচ ও ভীতি কাজ করত। এখন তা একেবারেই উধাও। দূর্নীতিবাজরা বুক ফুলিয়ে চলে। দুর্নীতি করে অর্থবিত্তের মালিক হয়ে দুর্নীতিবাজরা এখন রাজনীতি করে, এমপি-মন্ত্রী হয়। অনেক সরকারি কর্মকর্তা চাকরিজীবনে দুর্নীতি করে অবসর গ্রহণের পর পত্রিকার কলামে, টক শোতে দুর্নীতি, সুশাসন, গণতন্ত্র বিষয়ে জাতিকে নসিহত করে। আগে যেসব ক্ষেত্রে মানুষ দুর্নীতির কথা চিন্তাও করত না, ধীরে ধীরে সেখানেও দুর্নীতি ঢুকে পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ঘুষ প্রদান অশ্রুত-অচিন্তনীয় বিষয় ছিল। উৎকাচ এখানেও ঠাঁই করে নিয়েছে। দুর্নীতি এখন এতটাই গা সওয়া হয়ে গেছে, অনেকেই একে আর অপরাধ বলেই মনে করে না। অনেককেই বলতে শুনেছি, অমুক লোক ‘টাকা খেলেও’ ভালো মানুষ, কাজ করে দেয়। দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতির অর্থে কানাডায় গড়ে উঠেছে ‘বেগম পাড়া’। আর প্রসারিত হচ্ছে মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ‘সেকেন্ড হোমে’ বিনিয়োগ ও নাগরিকত্ব অর্জনের নতুন প্রবণতা।</p> <p style="text-align: justify;">কোনো দুর্নীতিবাজকে ধরার পর এবং তা পত্রপত্রিকায় আসার পর কিছু রাজনীতিবিদ ও সুধী কলাম, টক শোতে কথার তুবড়ি ছোটান। তা থেকে প্রতীয়মান হয়, এ দেশে এর আগে কোনো দিন দুর্নীতি হয়নি। অন্য সব সরকারের শাসনামল দুর্নীতিমুক্ত এবং দুধে ধোয়া তুলসীপাতা ছিল। ১৯৯০ সালে গণ-আন্দোলনের মুখে রাষ্ট্রপতি এরশাদের পতনের পর দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে মোট ৪৩টি মামলা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। জাপানি নৌযান কেনায় অনিয়মের অভিযোগে  করা মামলায় নিম্ন আদালতে এরশাদের তিন বছর এবং পরে হাইকোর্টে আপিলে সাজা কমে দুই বছরের কারাদণ্ড হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর দুই বছর কারাগারে কাটানোয় এরশাদকে নতুন করে আর ওই মামলায় দণ্ড ভোগ করতে হয়নি।</p> <p style="text-align: justify;">জনতা টাওয়ার দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালত এরশাদকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। প্রায় ১৭ বছর পর হাইকোর্ট সাজা কমিয়ে এরশাদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ কোটি ৪৮ লাখ ৭০ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা করেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল চলাকালে এরশাদের সাড়ে তিন বছর কারাভোগ শেষ হওয়ায় আপিল বিভাগ পরে জরিমানার দণ্ড বহাল রেখে এরশাদকে অবশিষ্ট দেড় বছর সাজাভোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া স্বর্ণ চোরাচালান, টেলিকম দুর্নীতি, পোলট্রি ফার্ম দুর্নীতি মামলা, আয়কর ফাঁকি, জাহাজ কেনায় দুর্নীতি, রাজউকের প্লট বরাদ্দে অনিয়ম, হরিপুরে তেল অনুসন্ধানে দুর্নীতি এবং রাডার কেনায় দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরো ১৯টি মামলা ছিল এরশাদের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে কয়েকটিতে তিনি নিম্ন আদালত থেকে বেকসুর খালাস পান। কয়েকটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়।</p> <p style="text-align: justify;">বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে পাঁচবার শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত রাষ্ট্রের তকমা পেয়েছিল। হাওয়া ভবন দুর্নীতির প্রতিভূ হয়ে উঠেছিল। বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবারের একজন প্রয়াত সদস্যের দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত এবং সিঙ্গাপুরে পাচারকৃত প্রায় ২১ কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ ফেরত আনা হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">World Bank ও United Nations Office on Drugs and Crime (UNODC)-এর যৌথ প্রকাশনা Asset Recovery Handbook- এর ৫৩ ও ১৯৬ পৃষ্ঠায় এ বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। দুর্নীতির দায়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দণ্ডিত হয়ে কিছুদিন কারাভোগের পর প্রশাসনিক আদেশে জেলের বাইরে রয়েছেন। আর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুর্নীতির অভিযোগে দণ্ডিত হয়ে বহু বছর ধরে লন্ডনে অবস্থান করছেন। আমি জানি, এটুকু পড়ার পর কেউ কেউ আমাকে দলদাস, দলকানা, আওয়ামী দালাল কিংবা তার চেয়েও বড় গালি দিচ্ছেন। কিংবা বর্তমান সরকারের দুর্নীতি নিয়ে কেন লিখছি না, সে প্রশ্ন করছেন। দুর্নীতির দায়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অভিযুক্ত ও দণ্ডিত হয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি সভানেত্রী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিচার ও দণ্ডারোপ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা কিংবা তাঁর পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতি করে থাকলে ভবিষ্যতের সরকার তার বিচার করবে।</p> <p style="text-align: justify;">ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, ‘No one is above the Law.’ কিন্তু দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের মানসিকতা ‘পিক অ্যান্ড চুজ’ পলিসির মতো। অর্থাৎ কারো দুর্নীতির বিষয়ে সোচ্চার হই; আর কারো ক্ষেত্রে কেবল নীরব নয়, বরং তার পক্ষে সাফাই গাই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আদালতের রায়কে ফরমায়েশি রায় বলে বক্তৃতা-বিবৃতি দিই। বিচারককে হুমকি-ধমকি দিয়ে বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করে তুলি। এমন অবস্থা চলতে থাকলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সোনার পাথরবাটি।</p> <p style="text-align: justify;">দুর্নীতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বেশ তৎপর হয়েছে। কারো কারো দুর্নীতি নিয়ে দুদক তদন্ত করছে। কারো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। কারো বিচার চলমান। অনেকে এরই মধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের বিচার বিভাগের উদ্যোগও দৃশ্যমান। আমাদের উচ্চ আদালত গত ২ জুলাই সরকারি কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার ঘোষণা এবং সময়ে সময়ে তা দাখিলসংক্রান্ত বিধি কঠোরভাবে মানতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে অগ্রগতি জানিয়ে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতেও বলেছেন। আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন, ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার ১৩ বিধি কঠোরভাবে মানতে নির্দেশ দেওয়া হলো। বিধি অনুসারে সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিল এবং তা প্রকাশ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাসের দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এমন নির্দেশনা দিয়েছেন।</p> <p style="text-align: justify;">১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার সংশোধিত ১৩ বিধির ভাষ্য হলো, প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী চাকরিতে প্রবেশের সময় যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে তাঁর বা পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন বা দখলে থাকা শেয়ার সার্টিফিকেট, সিকিউরিটি, বীমা পলিসি ও মোট ৫০ হাজার টাকা বা ততধিক মূল্যের অলংকারসহ স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির ঘোষণা করবেন। প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী প্রতি পাঁচ বছর অন্তর প্রদর্শিত সম্পত্তির হ্রাস-বৃদ্ধির হিসাব বিবরণী যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাখিল করবেন। এই বিধিটি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হলে কারো পক্ষেই দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা সম্ভব হতো না।</p> <p style="text-align: justify;">৮ মার্চ, ১৯৭৫ টাঙ্গাইলের কাগমারীতে মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের শতকরা ২৫ ভাগ দুঃখ দূর হয়ে যাবে যদি দুর্নীতি বন্ধ হয়ে যায়। যার মধ্যে মনুষ্যত্ব আছে, সে-ই মানুষ হয়। সে জন্য আমি চাই মনুষ্যত্ব ফিরে আসুক। আজ দুঃখের সঙ্গে আমাকে বলতে হয়, আজকে যারা আমরা অনেকে দুর্নীতিবাজ হয়ে গেছি, তারপর আমরা দুর্নীতিবিরোধী বক্তৃতা করি। লজ্জায় মাথা নত হয়ে যায় আমার। আমি অনুরোধ করব যে আত্মশুদ্ধি করে মানুষ হও। তাহলে মানুষকে মানুষ করতে পারবা। আমার অনুরোধ ভাইয়েরা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চাই।’ ২৬ মার্চ ১৯৭৫ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত জনসভায় দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু শিক্ষিত সমাজের উদ্দেশে বলেন, ‘শিক্ষিতদের কাছে আমার একটা প্রশ্ন। আমি এই যে দুর্নীতির কথা বললাম, তা কারা করে? আমার কৃষক দুর্নীতিবাজ? না। আমার শ্রমিক? না। তাহলে ঘুষ খায় কারা? ব্ল্যাকমার্কেটিং করে কারা? বিদেশি এজেন্ট হয় কারা? বিদেশে টাকা চালান দেয় কারা? এই আমরা যারা শতকরা পাঁচজন শিক্ষিত। এই আমাদের মধ্যেই রয়েছে ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ। আমাদের চরিত্রের সংশোধন করতে হবে, আত্মশুদ্ধি করতে হবে। দুর্নীতিবাজ এই শতকরা পাঁচজনের মধ্যে, এর বাইরে নয়। যে ঘুষখোর, যে দুর্নীতিবাজ, যে মুনাফাখোর, যে আমার জিনিস বিদেশে চোরাচালান দেয়, তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।’</p> <p style="text-align: justify;">২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ সালে জাতীয় সংসদে এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘মেন্টালিটি চেঞ্জ করতে হবে। সরকারি কর্মচারী, মন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট আমরা জনগণের সেবক, আমরা জনগণের মাস্টার নই। মেন্টালিটি আমাদের চেঞ্জ করতে হবে। আর যাদের পয়সায় আমাদের সংসার চলে, যাদের পয়সায় আমরা গাড়ি চড়ি, যাদের পয়সায় আমরা পেট্রল খরচ করি, আমরা কার্পেট ব্যবহার করি, তাদের জন্য কী করলাম? সেটাই আজ বড় জিনিস। এত বড় দুর্ধর্ষ, এত বড় শক্তিমান, এত বড় বন্দুক, এত কামান, এত মেশিনগান, এত পাকিস্তানি সৈন্য, এত বড় তথাকথিত শক্তিশালী আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, ইস্কান্দার মির্জা, চৌধুরী মোহাম্মদ আলী বাংলার মানুষকে অত্যাচার করতে চেষ্টা করেছে বন্দুক দিয়ে, তার বিরুদ্ধে বিনা অস্ত্রে আপনাদের নিয়ে সংগ্রাম করে শেষ পর্যন্ত যদি উত্খাত করতে পারি, তাহলে কিছু দুর্নীতিবাজ, কিছু ঘুষখোর, কিছু শোষক, কিছু ব্ল্যাক মার্কেটিয়ার্স বাংলার মাটি থেকে উত্খাত করতে পারব না—এ কথা আমি বিশ্বাস করি না।’</p> <p style="text-align: justify;">যে সমাজে দুর্নীতি সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছে, দুর্নীতি গা সওয়া হয়ে গেছে, যে সামাজিক মূল্যবোধে দুর্নীতি খুব বড় কোনো অপরাধ নয়, দুর্নীতিবাজরা ঘৃণিত নয়, ঘুষ নিয়ে কাজ করে দিলে ভালো মানুষ হিসেবে চিহ্নিত হয়, যে সমাজে জেনে-বুঝে কারো কারো দুর্নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম হয়, সে সমাজ থেকে দুর্নীতিকে বিদায় জানানো সহজ হবে কি? দুর্নীতি সব সরকারের আমলে ছিল। দুর্নীতি নিয়ে পারস্পরিক দোষারোপ, নষ্ট-নোংরা রাজনীতি নয়। দুর্নীতি প্রতিরোধে হাতে হাত রেখে ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তুলি। দল-মত-নির্বিশেষে দুর্নীতিবাজদের বাংলার মাটি থেকে উৎখাত করি।</p> <p style="text-align: justify;"><em>লেখক : অধ্যাপক, আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়</em></p> <p style="text-align: justify;"><em>zhossain1965@gmail.com</em></p> </article>