<p>সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিজয়ী চার জনকে কার্যকরী কমিটির সংশ্লিষ্ট পদের দায়িত্ব নিতে বারণ করেছে বিএনপি পন্থী আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। বুধবার (২৭ মার্চ) তাঁদের চিঠি দিয়ে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।</p> <p>চার আইনজীবীর মধ্যে আছেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন; সমিতির সভাপতি পদে তাঁকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য তিন হলেন- মো. শফিকুল ইসলাম, ফাতিমা আক্তার, ফজলে এলাহী অভি। এ তিন জনকে সদস্য পদে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।</p> <p>চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র কেন্দ্রীয় নেতা, উপদেষ্টামন্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি/সম্পাদকদের এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিগত ৬ ও ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের পর গত ১০ মার্চ ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ন্যায়সংগত যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।</p> <p>এর পরিপ্রেক্ষিতে, আপনাকে/আপনাদের এই মর্মে জানানো যাচ্ছে যে, আপনি/ আপনারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৪-২৫ এর মেয়াদকালের দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকবেন। আপনি/আপনারা দলের দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে দলীয় এই সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে পালন করবেন।’</p> <p>প্রতি বছর সমিতির ১৪টি পদে নির্বাচন হয়ে থাকে। সভাপতি, সম্পাদকসহ সম্পাদকীয় পদ ৭টি। বাকি ৭টি সদস্য পদ। বরাবরের মত এবারও ১৪টি পদে নির্বাচনে নামে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। পেশাজীবী সংগঠন হলেও আওয়ামীপন্থী প্রার্থীরা সাদা ও বিএনপি পন্থীর নীল প্যানেলের প্রার্থী হিসেবে পরিচিত। গত ৬ ও ৭ মার্চ নির্বিঘ্ন ভোট হলেও ভোট গণনা কখন হবে এ নিয়ে বিবাদ তৈরি হয়। এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনাও ঘটে। পরিচিত দুই প্যানেলের বাইরে সম্পাদক পদের প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি সমিতির নির্বাচনে বহিরাগতদের দিয়ে সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হকসহ অন্য প্রার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে গত ৯ মার্চ ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন পরিচালনা উপ কমিটি। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী সংখ্যা গরিষ্ঠ জয় পেয়েছে আওয়ামীপন্থী সাদা প্যানেল। সম্পাদকসহ ছয়টি সম্পাদকীয় ও চারটি সদস্য পদে জয় পায় এ প্যানেলের প্রার্থীরা। আর সভাপতি ও তিনটি সদস্য পদে জয় পায় নীল প্যানেল অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা। ওইদিন মাহবুব উদ্দিন খোকন ও তাঁর অ্যাজেন্টরা ভোট গণনায় অংশ নিলেও বিএনপিপন্থী অন্য প্রার্থী বা তাঁদের কোনো অ্যাজেন্ট গণনায় অংশ নিতে দেখা যায়নি। ফলাফলে সভাপতি জয়ী হলেও গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে পুননির্বাচন দাবি করেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুননির্বাচনের জন্য যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার। সে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে নির্বাচিত চার জনকে সংশ্লিষ্ট পদের দায়িত্ব গ্রহণ না করতে বুধবার (২৭ মার্চ) চিঠি দেওয়া হয়। </p> <p>জানতে চাইলে এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শুনেছি এরকম একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। পুননির্বাচনের দাবি তো আমিই করেছিলাম। এখন পুননির্বাচন দিলে আমি ওয়েলকাম করবো। না দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সভাপতির দায়িত্ব আমার ওপর বর্তাবে। আলাদা করে দায়িত্ব নেওয়ার তো কিছু নাই।’ </p> <p>নির্বাচন পরিচালনা উপ কমিটির আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার পর বর্ষিক সাধারণ সভা করে নির্বাচিতদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয়। চলতি কমিটির মেয়দ শেষ হবে ৩১ মার্চ। </p> <p>নির্বাচন পরিচালনা উপ কমিটির আহ্বায়ক আবুল খায়ের কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ফলাফল তো ঘোষণা করাই হয়েছে। নির্বাচন পরিচালনা উপ কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব হস্তান্তরের দিন আমার সামান্য ভূমিকা আছে। ওইদিন নির্বাচিতদের নাম আবার ঘোষণা করা হবে। আগামী ২ এপ্রিল দায়িত্ব হস্তান্তর করার কথা আমাকে জানানো হয়েছে।’</p>