<article> <p style="text-align: justify;">বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ১২তম উপাচার্য হিসেবে আজ যোগ দিচ্ছেন প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক। তাঁর পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন কালের কণ্ঠর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শিমুল মাহমুদ</p> <p style="text-align: justify;"><strong>কালের কণ্ঠ : </strong>হতে চেয়েছিলেন সংসদ সদস্য, দায়িত্ব পেলেন উপাচার্যের। নতুন দায়িত্ব নিয়ে আপনার অনুভূতি কী? </p> <p style="text-align: justify;"><strong>ডা. দীন মো. নূরুল হক :</strong> সাধারণত এসব পদে কেউ এলে আগে থেকেই আঁচ করা যায়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে এ রকম কিছু ঘটেনি। আমি কখনো বিএসএমএমইউর ভিসি হব, এটা চিন্তাও করিনি। অর্ডার হওয়ার আগ পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। আমার যেহেতু স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা আছে, চাওয়া ছিল যদি সংসদ সদস্য হতে পারি তাহলে মানুষের জন্য আরো ভূমিকা রাখতে পারব। যাই হোক কোনো কারণে হয়তো সেটি হয়নি।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;"><strong>কালের কণ্ঠ : </strong>একজন উপাচার্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন কোন বিষয়কে প্রাধান্য দিতে চান? এ বিষয়ে আপনার নিজস্ব কোনো কর্মপরিকল্পনা আছে কি না?</p> <p style="text-align: justify;"><strong>ডা. দীন মো. নূরুল হক : </strong>বিএসএমএমইউ হলো শিক্ষক তৈরির কারখানা। আমার চাওয়া হলো আদর্শ শিক্ষক তৈরি করা। স্বাস্থ্যসেবাকে গুরুত্ব দেওয়া। কেউ যেন চিকিৎসাবঞ্চিত না হয়। এরপর এর সঙ্গে মানসম্পন্ন গবেষণার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এককথায় চিকিৎসা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও গবেষণা—এই তিন বিষয় প্রাধান্য দেওয়া হবে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এটা যেহেতু জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের প্রথম মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, আমি চাই এটি একটি গৌরবোজ্জ্বল বিশ্ববিদ্যালয় হবে, সব প্রভাবমুক্ত ও দুর্নীতিমুক্ত একটি প্রশাসন হবে, এখানে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা হবে। কেউ যেন এখানে এসে বঞ্চিত না হয়, চিকিৎসাসেবার নামে প্রতারিত না হয়। এ বিষয়গুলো অবশ্যই আমি নিশ্চিত করব।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;"><strong>কালের কণ্ঠ :</strong> বঙ্গবন্ধু সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল যে স্বপ্ন নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল, সে রকম হয়নি। বিশেষায়িত এ হাসপাতাল নিয়ে আপনার ভাবনা কী?</p> <p style="text-align: justify;"><strong>ডা. দীন মো. নূরুল হক : </strong>বঙ্গবন্ধু সুপার স্পেশালাইজড একটি বিশ্বমানের হাসপাতাল। দীর্ঘ সময়েও এটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা সম্ভব হয়নি। এর কারণগুলো আমাকে প্রথমে জানতে হবে, এরপর যত দ্রুত সম্ভব আমি ব্যবস্থা নেব। আমার ইচ্ছা আছে ‘ফি ফর ওয়ার্ক সিস্টেম’ চালু করা। অর্থাৎ কাজের বিনিময়ে পয়সা। যাঁরা সরকারি চাকরি থেকে সম্প্রতি অবসরে গেছেন, কিন্তু কাজ করতে চান তাঁদের থেকে সেবা নেওয়া। আরেকটি হলো, ‘টেকনোলজি ট্রান্সফার’। অর্থাৎ চিকিৎসকদের আরো দক্ষ করে গড়ে তুলতে বিশ্বমানের ফ্যাকাল্টিদের স্বল্পমেয়াদে ট্রেইনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>কালের কণ্ঠ :</strong> চিকিৎসকদের রাজনীতির অন্যতম কেন্দ্র হলো বিএসএমএমইউ। এখানকার অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে প্রায়ই পত্রিকায় শিরোনাম হয়। আছে নানা চ্যালেঞ্জও। কিভাবে মোকাবেলা করবেন?</p> <p style="text-align: justify;"><strong>ডা. দীন মো. নূরুল হক :</strong> আমি থাকি আর না থাকি কোনো দুর্নীতি হতে দেব না। আমার টাকা দরকার নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে অনেক আশা করে এখানে দিয়েছেন, আমি এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। আমি মনে করি, একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান যদি সৎ থাকে তাহলে অর্ধেক কাজ এমনিতে হয়ে যায়। তাহলে অন্যরা অসৎ হওয়ার সাহসই পাবে না। সুতরাং আমার ফেইল করার কোনো সুযোগ নাই। হয় আমি সুষ্ঠুভাবে চালাব না হয় আমি বলব যে আমি চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না। কিন্তু এখানে কোনো দুর্নীতি হতে দেব না।</p> <p style="text-align: justify;"><strong>কালের কণ্ঠ :</strong> বিদায়ি উপাচার্যের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয়ে তদন্তমূলক কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না? </p> <p style="text-align: justify;"><strong>ডা. দীন মো. নূরুল হক :</strong> আমাকে যদি কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে আমার চাওয়ায় কিছু আসে যায় না। কারণ এখানে একটা ভালো অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল রয়েছে, সিন্ডিকেট রয়েছে। সুতরাং এখানে হাত-পা বাঁধা, আইনের বাইরে কিছু করতে পারব না।</p> </article>