<p>রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক গুলশান বিভাগ। এতে মানুষের ভোগান্তি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে এলাকার চিরচেনা যানজটের রূপ এখন অনেকটাই পাল্টেছে। সড়কে ফিরেছে কিছুটা শৃঙ্খলা। স্বস্তিতে যাতায়াত করছেন নগরবাসী।</p> <p>এ পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে জানতে চাইলে ট্রাফিক গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার আব্দুল মোমেন বলেন, ‘বর্তমান ডিএমপি কমিশনারের অন্যতম প্রধান উদ্যোগ হলো সঠিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও যানজট নিরসন করা। মহাখালী এলাকার সমস্যা ও সমাধানের বিষয়গুলো শনাক্ত করে কিছু উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৭ মে থেকে শক্ত অবস্থানে নামে ডিএমপির ট্রাফিক গুলশান বিভাগ। চালকদের সঙ্গে কথা বলে এরই মধ্যে অভূতপূর্ব পরিবর্তন আসছে। বাসচালক ও যাত্রীরাও এই ব্যবস্থাপনায় অনেক খুশি। আমরা মনে করি, সবার সমন্বিত উদ্যোগে সম্পূর্ণ বদলে যাবে মহাখালী।’</p> <p>তিনি আরো জানান, তাদের সঙ্গে রয়েছেন পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের স্বেচ্ছাসেবকরাও। তারা টার্মিনালের সামনে এসে থামানো বাসগুলো অনত্র সরে যেতে সহায়তা করছেন।</p> <p>এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযানের ফলে এই এলাকার মূল সড়কে কমেছে যানজট, উধাও হয়েছে যত্রতত্র পার্কিং। ফলে শৃঙ্খলা ফিরতে শুরু করেছে মহাখালী রেলগেট, আমতলী ও কাকলী এলাকা পর্যন্ত। ফলে দৃশ্যত মহাখালী বাস টার্মিনাল লাগোয়া ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে যান চলাচলে গতি বেড়েছে।</p> <p>ট্রাফিক গুলশান দক্ষিণের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) এ এস এম হাফিজুর রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, মহাখালীকেন্দ্রিক যানজট নিরসনে তারা কাজ করছেন। টার্মিনালে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বাস, রাস্তার পাশে অবৈধ পার্কিং, টার্মিনালের ইনগেট ও আউটগেটে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব, টার্মিনালের সামনে অপ্রয়োজনীয় ইউটার্ন, সীমিত এলাকায় অতিরিক্ত তেল ও গ্যাসের পাম্প, এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মহাখালীতে নামার র‍্যাম্প স্থাপন, এলাকাগত সীমা নির্ধারণ ও সমন্বয়ের অভাবসহ বেশ কিছু সমস্যা চিহ্নিত করে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস নির্দিষ্ট স্টপেজ ছাড়া দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। যত্রতত্র বাস দাঁড়ানো ও যাত্রী ওঠানো-নামানো বন্ধে চালকদের সতর্ক করা হচ্ছে। না মানলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মামলা দেওয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহ থেকে কোনো সতর্কতা থাকবে না। নির্দিষ্ট স্টপেজে বাসের যাত্রী গণনা করা হবে। পরের স্টপেজে যাত্রী ওঠানোর আগে ওই সংখ্যা বেশি হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</p> <p>আজ বুধবার (৮ মে) সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ট্রাফিক পুলিশের অভিযানের কারণে মহাখালী এলাকা  অনেকটাই যানজট মুক্ত। এখন যেখানে-সেখানে বাস দাঁড়ানো ও যাত্রী ওঠানো-নামানো বন্ধ হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে পুলিশ। বাসগুলোকে শৃঙ্খলায় আনতে গুলশান ট্রাফিক বিভাগের ডিসির নির্দেশে মহাখালীতে নতুন করে ইনকামিং সড়কে একটি ‘বাস বে’ চালু করা হয়েছে। ‘বাস বে’ ছাড়া দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না কোনো যাত্রীবাহী বাস। শৃঙ্খলার স্বার্থে মহাখালীর সামনের সড়ক পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করলেই বাস থামিয়ে সাবধান করছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। নিয়ম না মানলে দেওয়া হচ্ছে মামলা। সংগত কারণেই এখন পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গেছে।</p> <p>সার্বিক পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, ‘মহাখালী বাস টার্মিনালের পেছনে অনেকখানি জায়গা অব্যবহৃত অবস্থায় আছে। সেই জায়গা মহাখালী টার্মিনালের সঙ্গে একীভূত করা গেলে এ এলাকায় যানজট আরো সমাধান হয়ে যাবে। এটা নিয়ে ট্রাফিক পুলিশ, পরিবহন মালিক-শ্রমিকপক্ষ এবং সিটি করপোরেশনের মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছে। আশা করছি সহসা এর সমাধান হবে।’</p>