বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়তে সম্মত হয়েছে চীন। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বেইজিংয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানান চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশকে দেওয়া চীনের সব ধরনের ঋণের সুদ ২-৩ শতাংশ থেকে ১ শতাংশে কমানো, ঋণের অঙ্গীকার ফি পুরোপুরি বাদ দেওয়া ও ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ২০ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করার জন্য অনুরোধ জানান।
এ সময় ঋণ শোধে বাংলাদেশের ভালো রেকর্ডের প্রশংসা করে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঋণ শোধের মেয়াদ বাড়ানোর নীতিতে সম্মত হন এবং সুদের হার হ্রাসের অনুরোধ দেখার আশ্বাস দেন।
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর ৩ বছর ধরে চীনা বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ডিএফকিউএফ অ্যাক্সেস অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন তিনি।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) গণমাধ্যমকে জানায়, চলমান চীনা ঋণের সুদের হার ১ শতাংশে নামিয়ে আনতে ও ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ বছর করতে চীনকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। বেইজিংকে এসংক্রান্ত একটি চিঠিও দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে চীনা ঋণের সুদের হার ২ থেকে ৩ শতাংশ এবং পরিশোধের সময়সীমা ২০ বছর।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটার পর আরো তিন বছর চীনে বাংলাদেশের পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশের সুযোগ থাকবে, এমন নিশ্চয়তা দেন দেশটির মন্ত্রী।
বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসার জন্য চীনের কুনমিংয়ে তিন থেকে চারটি সরকারি হাসপাতাল নির্দিষ্ট করে দেওয়ার বিষয়ে দেশটির সরকারের সিদ্ধান্তের কথা উপদেষ্টাকে জানান ওয়াং ই।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এখানকার স্থিতিশীলতা, সংস্কার, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও উন্নয়ন উদ্যোগকে তার দেশ সমর্থন করে।
চীনের তিব্বত অঞ্চলের নদী ইয়ার্লুং সাংপো যেটি ভারতে ব্রহ্মপুত্র ও বাংলাদেশ যমুনা নামে প্রবাহিত হচ্ছে, তার জলপ্রবাহের তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ে আগে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল। এই স্মারকটি বাস্তবায়নের একটি পরিকল্পনা আজ বৈঠকের পর উভয় পক্ষ সই করে।
চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম, বাণিজ্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন।
উপদেষ্টার চীন সফর আগামী ২৪ জানুয়ারি শেষ হবে।