রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নির্দেশেই হত্যাকাণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের নির্দেশেই হত্যাকাণ্ড
ছবি: কালের কণ্ঠ

রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের অবগতি, সমন্বয় ও নির্দেশনায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত অভিযুক্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অবমাননা বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে জাতিসংঘ। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক সরকার এবং এর নিরাপত্তা ও গোয়েন্দাবাহিনী আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সহিংস উপায় ব্যবহার করে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এতে শতশত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং হাজার হাজার বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বলপ্রয়োগ করা হয়।

একইসঙ্গে নির্বিচারে আটক, নির্যাতন এবং অন্যান্য ধরনের নিগ্রহের ঘটনা ঘটে।

প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ওএইচসিএইচআর মনে করে, বিক্ষোভ এবং ভিন্নমত দমনে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের অবগতি, সমন্বয় এবং নির্দেশনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, জনগণের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ দমন এবং ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার প্রচেষ্টায় সাবেক সরকার সহিংসতাকে অবলম্বন হিসেবে বেছে নেয় এবং পদ্ধতিগতভাবে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে সাবেক সরকার এবং আওয়ামী লীগ ক্রমাগত সশস্ত্র কুশীলবদের সুসংহত করতে থাকে।

বিক্ষোভ দমনের প্রাথমিক চেষ্টা হিসেবে সরকারের মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং তার আশেপাশে ছাত্র-ছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর ছাত্রলীগ কর্মীদের লাঠি এবং ধারালো অস্ত্র এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আক্রমণে প্ররোচিত করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা আত্মরক্ষার চেষ্টা করলে প্রতিক্রিয়ায় সরকার আরও গুরুতর সহিংসতার পথ বেছে নেয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ পুলিশ আওয়ামী লীগ সমর্থকদের একটি সশস্ত্র দলের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করে এবং অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে শান্তিপূর্ণ ছাত্র বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি বড় বিক্ষোভ ।
 

এসব ঘটনার পর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতারা সাধারণ বিক্ষোভ এবং ঢাকা ও অন্যান্য শহরে সম্পূর্ণ বন্ধের ডাক দেয় যা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন লাভ করে। এর প্রতিক্রিয়ায়, তৎকালীন সরকার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আরো সহিংস হয়ে উঠে। এ কারণে জনজীবন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ, স্বাধীনতা এবং ব্যক্তির নিরাপত্তা লাভের অধিকার লঙ্ঘিত হয়। র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং পুলিশের হেলিকপ্টার আকাশ থেকে বিক্ষোভকারীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করে। পুলিশ, র‌্যাব এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মাঠে সামরিক রাইফেল এবং লোড করা শটগানের প্রাণঘাতী ছররাগুলি ছোড়ে।

সেইসাথে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কম প্রাণঘাতী অস্ত্র মোতায়েন করে। এই ক্রমঅবনতিশীল পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্রীয় সহিংসতার জবাবে বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে যাদের বেশিরভাগ সরকারি ভবন, পরিবহন অবকাঠামো এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা করে। ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় সরকার বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বল প্রয়োগের জন্য নিরাপত্তা বাহিনী জোরদার করার নির্দেশনা প্রদান করে। ১৯ জুলাই থেকে বিক্ষোভ শেষ হওয়া পর্যন্ত, বিজিবি, র‌্যাব এবং পুলিশ ঢাকা এবং অন্যত্র বিক্ষোভকারীদের উপর নির্বিচারে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে। এর ফলে সংবাদ সংগ্রহে আসা সাংবাদিকসহ অনেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় এবং আহত হয়। কিছু ক্ষেত্রে, নিরাপত্তাবাহিনী উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর খুব কাছ থেকে গুলি ছোড়ে।

পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা করে বিক্ষোভকারীদের দমাতে পারেনি। এতে বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। ২০ জুলাই সরকার সাধারণ কারফিউ জারি করে এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেনারা বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছোড়ে যা বিক্ষোভকারীদের নিহত বা গুরুতর আহত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেনি; কেবল একজন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। কিছু প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ থেকে জানা যায়, ৩ আগস্ট সেনাপ্রধানের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এক সভায় জুনিয়র সেনা অফিসারেরা বেসামরিক বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ প্রত্যাখ্যানের জন্য চাপ দিতে থাকেন এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে তারা অস্বীকৃতি জানান। তবুও সেনাবাহিনী আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের প্রতিরক্ষা সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে আরো সহিংস হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা পাল্টা আক্রমণের আশংকা ছাড়াই বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী বল প্রয়োগের অনুমতি পায়। এর মধ্যে ২০ ‍ও ২১ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধের সময় পুলিশ এবং র‌্যাব গুলি চালানোর পূর্ণ ছাড়পত্র পায়। এতে নিহত ও আহতের ঘটনা ঘটে। জুলাইয়ের শেষের দিকে, সেনাবাহিনীও ব্যাপক অভিযানে অংশ নেয়, যেখানে পুলিশ এবং র‌্যাব গণবিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে নির্বিচারে বিপুল সংখ্যক মানুষকে গ্রেপ্তার করে। সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য থেকে আরো জানা যায়, ৫ আগস্ট বিক্ষোভকারীরা যে ঢাকা মার্চের ডাক দেয় তা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে থামানোর জন্য সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং পুলিশকে একটি সরকারি পরিকল্পনা তৈরিতে অংশ নিয়েছিল। সেই পরিকল্পনা অনুসারে, পুলিশ অনেক বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা করে, কিন্তু সেনাবাহিনী এবং বিজিবি বৃহৎঅর্থে নিস্ক্রিয়ভাবে দাঁড়িয়েছিল এবং ফলে বিক্ষোভকারী নির্বিঘ্নে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

‘আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
‘আইন উপদেষ্টাকে জড়িয়ে নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা’
ড. আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া নামের একটি অনলাইন পোর্টালে ‘কাশ্মীর হামলার পর বাংলাদেশি আইন উপদেষ্টা লস্কর নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা, মানহানিকর এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ওই প্রতিবেদনে (বৃহস্পতিবার প্রকাশিত) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে লস্কর-ই-তৈয়বার শীর্ষ নেতার সঙ্গে সাক্ষাতের অভিযোগ আনা হয়েছে—যা আদৌ সত্য নয় এবং এর কোনো প্রমাণ নেই।

ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, হেফাজতে ইসলাম একটি বৈধ, নিবন্ধিত ওলামা সংগঠন, যারা বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

প্রতিবেদনটিতে যে ব্যক্তিদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হেফাজতে ইসলামের নেতা, যাদের কোনো আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই।

‘নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া যে তারিখ উল্লেখ করেছে, তার কমপক্ষে তিন দিন আগেই ড. নজরুল তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। বৈঠকটি ছিল সম্পূর্ণরূপে আইনি প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচার বিষয়ক আলোচনাভিত্তিক। যেখানে তারা তাদের বিরুদ্ধে পূর্ববর্তী সরকারের আমলে দায়ের করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার তালিকা উপস্থাপন করেন।

ছবি তোলার অনুরোধটি ছিল বৈঠকের আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে প্রথাগত।’

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো হেফাজতের বিরুদ্ধে আগের সরকারের নিপীড়নের বিষয়টি নথিভুক্ত করেছে এবং তা নিন্দা করেছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এতে স্পষ্ট যে এসব মামলা ছিল রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সেখানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার।

এতে বলা হয়, প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে যে ড. নজরুল ফেসবুকে একটি উসকানিমূলক পোস্ট করেছেন। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ওই পোস্টটি একজন ভারতীয় নাগরিকের ছিল, যিনি কাশ্মীর হামলার পর ভারতের নিরাপত্তাব্যবস্থার ত্রুটি নিয়ে সমালোচনা করেন।

ড. নজরুল পোস্টটি নিন্দাসূচক ক্যাপশনসহ শেয়ার করলেও, অপব্যাখ্যার আশঙ্কায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা নিজ উদ্যোগে মুছে ফেলেন।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আইন উপদেষ্টা পেহেলগ্রামের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান, শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও হামলার দ্রুত বিচার কামনা করেন। নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ার এই অসতর্ক ও অপ্রমাণিত প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নীতিমালা ও সত্যনিষ্ঠতা থেকে বিপজ্জনক বিচ্যুতি। আমরা সকল মিডিয়াকে দায়িত্বশীল প্রতিবেদন ও প্রকাশনার আগে সত্যতা যাচাইয়ের আহ্বান জানাই।’

মন্তব্য

পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
সংগৃহীত ছবি

রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে পৌঁছান তিনি।

এর আগে, শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে ইতালির উদ্দেশে কাতার ত্যাগ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি রোমে পৌঁছায়। সেখানে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান।

বিশ্বের প্রথম লাতিন আমেরিকান পোপ, পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য হতে চলেছে আগামীকাল শনিবার সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার সামনে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে। এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেবেন বিশ্বের নানা দেশের নেতারা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন। তা ছাড়া অন্য বিশ্বনেতাদের মধ্যে ফ্রান্সিসের জন্মভূমি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলি, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডি সিলভা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেবেন। চার্চের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেবেন ক্যাথলিক চার্চের কার্ডিনাল কলেজের ডিন জিওভান্নি বাত্তিস্তা রে।

জানা গেছে, শেষকৃত্যের শেষে তিনি ‘চূড়ান্ত সমর্পণ প্রার্থনা’ পাঠ করবেন, যার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পোপকে ঈশ্বরের হাতে সমর্পণ করা হবে।

এরপর পোপের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে রোমের সান্তা মারিয়া মেজিওর ব্যাসিলিকায়, যেখানে তাকে সমাহিত করা হবে।

পোপ ফ্রান্সিস প্রথা ভেঙে সেন্ট পিটার্সের বদলে রোমের সান্তা মারিয়া ব্যাসিলিকায় সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে পোপ ফ্রান্সিসের বহু পূর্বসূরির সমাধি আছে।

৮৮ বছর বয়সী পোপ ফ্রান্সিস চলতি বছরের প্রথম দিকে দুইবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন।

প্রায় এক মাস আগে তিনি হাসপাতাল থেকে ভ্যাটিক্যানের বাসায় ফিরেছিলেন।

ইস্টার সানডে উপলক্ষে রবিবার সেন্ট পিটার্স স্কয়ারেও হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু তার পরদিন সকালে ভ্যাটিকান তার মৃত্যুর খবর জানায়।

মন্তব্য

পোপ ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানাতে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পোপ ফ্রান্সিসকে শ্রদ্ধা জানাতে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় প্রধান উপদেষ্টা
সংগৃহীত ছবি

রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আগে শ্রদ্ধা জানাতে ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় প্রবেশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি রোমে পৌঁছায়। সেখানে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান।

বিশ্বের প্রথম লাতিন আমেরিকান পোপ, পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্য হতে চলেছে আগামীকাল শনিবার সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার সামনে উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে।

এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেবেন বিশ্বের নানা দেশের নেতারা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন। তা ছাড়া অন্য বিশ্বনেতাদের মধ্যে ফ্রান্সিসের জন্মভূমি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মিলি, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা ডি সিলভা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেবেন।

চার্চের সর্বোচ্চ ধর্মীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেবেন ক্যাথলিক চার্চের কার্ডিনাল কলেজের ডিন জিওভান্নি বাত্তিস্তা রে।

জানা গেছে, শেষকৃত্যের শেষে তিনি ‘চূড়ান্ত সমর্পণ প্রার্থনা’ পাঠ করবেন, যার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পোপকে ঈশ্বরের হাতে সমর্পণ করা হবে।

এরপর পোপের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে রোমের সান্তা মারিয়া মেজিওর ব্যাসিলিকায়, যেখানে তাকে সমাহিত করা হবে।

পোপ ফ্রান্সিস প্রথা ভেঙে সেন্ট পিটার্সের বদলে রোমের সান্তা মারিয়া ব্যাসিলিকায় সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে পোপ ফ্রান্সিসের বহু পূর্বসূরির সমাধি আছে।

 

৮৮ বছর বয়সী পোপ ফ্রান্সিস চলতি বছরের প্রথম দিকে দুইবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন।

প্রায় এক মাস আগে তিনি হাসপাতাল থেকে ভ্যাটিক্যানের বাসায় ফিরেছিলেন। ইস্টার সানডে উপলক্ষে রবিবার সেন্ট পিটার্স স্কয়ারেও হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু তার পরদিন সকালে ভ্যাটিকান তার মৃত্যুর খবর জানায়।

মন্তব্য

কাতার সফরকে স্বপ্নের মত বললেন চার ক্রীড়াবিদ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কাতার সফরকে স্বপ্নের মত বললেন চার ক্রীড়াবিদ
সংগৃহীত ছবি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সফর কাতার থেকে ফিরে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই সফরের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার, ফুটবলার শাহিদা আক্তার রিপা, ক্রিকেটার সুমাইয়া আকতার ও শারমিন সুলতানা। 

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কাতার সফরকে স্বপ্নের মত বললেন এই চার জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ। 

আফিদা খন্দকার বলেন, ‘আমরা খুবই খুশি হয়েছি যে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে  সফরসঙ্গী হিসেবে আমরা কাতারে গিয়েছি চারজন। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন থেকে আমরা চারজন যাবার সুযোগ পেয়েছি।

এটা আমাদের জন্য বড় পাওয়া। আমাদের দেশের ফুটবল বা ক্রিকেট বা অন্যান্য যেসব খেলা আছে সেগুলো যেন আমরা কাতারের সামনে তুলে ধরতে পারি। তারা আমাদের সাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি এবং সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।’

ক্রিকেটার সুমাইয়া আকতার বলেন, ‘আমরা যখন দেশের বাইরে যাই।

তখন ভিআইপি সুবিধা পাই। কিন্তু এবার প্রধান উপদেষ্টার সাথে আমরা গিয়েছি। আমরা অন্যরকম সুবিধা পেয়েছি। আমরা সেখানে অনেক ব্যস্ত সময় কাটিয়েছি।
প্রধান উপদেষ্টার অনেক অনুষ্ঠান নির্ধারিত ছিল। সেখানে অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার  বক্তব্য শোনার জন্য অনেক মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি । আমাদের যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে সেটি বলে প্রকাশ করা যাবে না। আমরা এই সফর নিয়ে অনেক বেশি খুশি।’

দোহায় আর্থনা সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশের নারী খেলোয়াড়দের জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতিও দেন কাতার ফাউন্ডেশনের সিইও শেখ হিন্দ বিনত হামাদ আল থানি।

কাতারে ফুটবল বেশি জনপ্রিয়। ক্রিকেট বিষয়ে খুব বেশি ধারণা নেই তাদের। কাতারের স্কুল পর্যায়ে ক্রিকেট শুরু হয়েছে। কাতার ফাউন্ডেশনের সিইও শেখ হিন্দকে ক্রিকেট সর্ম্পকে ধারণা দেন দুই ক্রিকেটার ক্রিকেটার সুমাইয়া আকতার ও শারমিন সুলতানা। 

এ বিষয়ে শারমিন সুলতানা বলেন, ‘আসলে সেখানে ক্রিকেট জনপ্রিয় না। ক্রিকেট নিয়ে তাদের ধারণা কম। আমাদের কথা শুনে তারা ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠে। শেখ হিন্দ বলেছেন, তারাও ক্রিকেট শুরু করবে। তারা বর্তমানে স্কুল পর্যায়ে ক্রিকেট শুরু করেছে। তারা চিন্তা ভাবনা করছে, কীভাবে পরের ধাপে যেতে পারে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলতে পারে। এটি নিয়ে তারা বেশি উৎসাহী ছিল।’

২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছিল কাতারের লুসাইলের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে। ওই স্টেডিয়ামও ঘুরে দেখেছেন বাংলাদেশর নারী ক্রীড়াবিদরা। লুসাইল স্টেডিয়ামে অভিজ্ঞতা নিয়ে আফিদা বলেন, ‘লুসাইল স্টেডিয়ামের সব কিছুই আমরা ঘুরে দেখেছি। মাঠে ঘুরেছি। ওই মাঠে আর্জেন্টিনা শিরোপা জিতে উল্লাস করেছে। আমরা ড্রেসিংরুমেও গিয়েছি। সেখানে ওয়ার্ম-আপের জন্য আলাদা ব্যবস্থা আছে। ড্রেসিংরুমের খেলোয়াড়দের অন্যান্য সুবিধাগুলো দেখে আমাদের খুবই ভালো লেগেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। 

চার ক্রীড়াবিদের কাতার সফর ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, চার ক্রীড়াবিদের কাতারে যাওয়ার মধ্য দিয়ে একটি আলাদা মাত্রা পেয়েছে।

সাধারণত সরকারি সফরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়ে থাকে। এবারও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবার যদি ক্রীড়াবিদরা না যেত, তাহলে ক্রীড়া নিয়ে আলোচনা হতো না। আমাদের এই ক্রীড়াবিদরা এবার সফরে যাওয়াতে তাদের নিয়ে আলাদাভাবে আগ্রহ সৃষ্টি এবং আলোচনা শুরু হয়েছে। আমরা মনে করি, এটি শুরু। কাতারে যারা স্পোর্টস কর্মকর্তা আছেন তাদের সাথে প্রধান উপদেষ্টা নিজে সরাসরি কথা বলেছেন। কাতার ফাউন্ডেশন স্পোর্টসের জন্য অনেক বড় ফ্যাক্টর।

সারা বিশ্বে ক্রীড়াঙ্গনে অনেক ক্ষেত্রেই তাদের বিনিয়োগ আছে এবং আমরা বিশ্বাস করি যে, এই সফরের মধ্যে দিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ স্থাপিত হল, এই যোগাযোগের ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে আমরা ক্রীড়াক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা পাব।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ