<p>এই যে এত এত গুঞ্জন। এখনো প্রায় প্রতিদিন উড়ন্ত সসার দেখার দাবি আসছে সংবাদ মাধ্যমে। এর কি আসলে ভিত্তি আছে? প্রোজেক্ট ব্লুবুক নামে একটা মিশন হাতে নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সেটার মূল উদ্দেশ্য ইউএফও দেখার দাবিগুলো খতিয়ে দেখা। </p> <p>কসমস খ্যাত অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট নীল ডি গ্রাস টাইসন মানতে নারাজ, এখনই ভিনগ্রহীরা এসে আনোগোনা করছে পৃথিবীতে। তাহলে কেন এত গুজব, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন টাইসন। তিনি চারটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন এসব ব্যাপারে। প্রথম ব্যাখ্যাতে তিনি দাবি করেছন, ইউএফও দেখার দাবি যারা করে তাদের বড় একটা অংশ মানসিকভাবে অসুস্থ। তাঁর দাবি এসব মানুষ আসলে কল্পনার জগতে বাস করেন।</p> <p><a href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/07/03/1402869"><span style="color:#2980b9;">আরও পড়ুন: ইউএফও : রহস্য নাকি গুজব: পর্ব ৪</span></a></p> <p>আরেক শ্রেণির লোক আছে, ইচ্ছে করেই ইউএফওর ব্যাপারে মিথ্যে রিপোর্ট করেন। আরেক শ্রেণির লোক, যাঁরা হয়তো দেখছেন-শুনছেন যা, যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক ও পর্যবেক্ষণ জ্ঞান না থাকার সাধারণ প্রাকৃতিক ঘটনাকেই রহস্যময় বলে মনে করছেন এবং সেভাবেই রিপোর্ট করছেন।</p> <p>আর চতুর্থ দলের লোকেরা হয়তো সবদিক থেকেই পারফেক্ট। তাদের সবকিছুই ঠিক ঠাক, তারা হয়তো আসলেই এমন কিছু দেখছেন, আপাতদৃষ্টিতে তার কোনো সমাধান নেই। প্রকৃত রহস্যময় ঘটনা সেগুলো। কিন্তু রহস্যময় ঘটনা, আপাতব্যাখ্যাহীন কোনো ব্যাপার মানেই সেটা ভিনগ্রহীদের ঘাড়ে দায় চাপাতে হবে, এমন দিব্যি কে দিয়েছে? এ প্রশ্নই রেখেছেন নীল ডিগ্রাস টাইসন। চোখের দেখা মানেই সেটা অকাট্য প্রমাণ এমন ভাবলে ভুল হবে বলে মনে করেন বিখ্যাত এই অ্যাস্ট্রোফিজিস্টি।</p> <p>তিনি লেটার্স ফ্রম অ্যান অ্যাস্ট্রাফিজিসিস্ট বইয়ে লিখেছেন: <br /> ‘মনে রাখতে হবে, কোনো দাবিদাওয়ার স্বপক্ষে প্রদত্ত অন্যান্য সাক্ষ্য প্রমাণের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল হল চাক্ষুষ সাক্ষ্য-প্রমাণ। কোর্ট-কাচারিতে চাক্ষুষ সাক্ষ্যের চূড়ান্ত মূল্য থাকলেও বিজ্ঞানের আদালতে চাক্ষুষ সাক্ষ্য প্রমাণ  মোটামুটি মূল্যহীন। অনেকদিন ধরেই মনোবিজ্ঞানীরা জানেন যে তথ্য আহরণের মাধ্যম হিসেবে মানবীয় ইন্দ্রিয়সমূহ খুবই অকার্যকর। কে সাক্ষ্য দিচ্ছেন সেটা বড় কথা নয়, বা তিনি যত সম্মানীয় ব্যক্তিই হোন না কেন, তিনি যদি মানুষ হন তাহলেই তাঁর পর্যবেক্ষণ ত্রুটিযুক্ত হতে বাধ্য। আরো মনে রাখতে হবে, যেসব ক্ষেত্রে প্রমাণের স্বপক্ষে তেমন কোনো জোরালো তথ্য থাকে না, সেই সব ক্ষেত্রে উৎসাহীদের তর্ক করার মানে হলো ‘ষড়যন্ত্র’ কিংবা ‘ধামাচাপা তত্ত্ব’ না জেনে তর্ক করা। এটা মনোবিজ্ঞানী কিংবা দার্শনিকরা অনেক আগে থেকেই জেনে গেছেন। নাসা স্পেস মিশনের কোনো কোনো ভিডিওতে স্পেস শাটলের জানালার বাইরে অন্যাখ্যাত কিছু বস্তুর আনাগোনা দেখা যায়।</p> <p>এ ধরনের ঘটনা ওপরের অন্য সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। এসব ভিডিও বেশ জেনুইন, তবে সাথে সাথে এটাও মনে রাখতে হবে ইউএর ‘ইউ’ অর্থ হলো ‘অজ্ঞাত’। যখন জানাই আছে, আপনি যেটা দেখছেন সেটা কী আপনি সেটা জানেন না, তখন সেটা জানেন বলাটা কোনোক্রমেই যুক্তিযুক্ত কোনো সিদ্ধান্ত পারে না। এমনকি ওই অজ্ঞাত উড়ন্ত বস্তুসমূহকে অবধারিতভাবে গ্রহান্তরের উন্নত প্রযুক্তিধারী ‘বুদ্ধিমান’ আগম্ভক, যারা গোপনে পৃথিবীবাসীকে দেখতে এসেছে, ধরে নেওয়াটাও কোনো যুক্তিতেই পড়ে না… …ওইসব উড়ন্ত বস্তু সত্যিই বুদ্ধিমান এলিয়েন হলেও, এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ নাই। এমন প্রমাণ চাই যা বিজ্ঞানের কাঠগড়ায় টিকে থাকবে। যেমন এলিয়েনরা বিভিন্ন মিডিয়া সেন্টারে আসছেন, তাদের উন্নত প্রযুক্তি আমাদের দেখাচ্ছেন, মিস্টার প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির সাথে রোজ গার্ডেনে চা-নাশতা খাচ্ছেন…’</p> <p>চলবে...</p> <p>সূত্র: স্পেস ডট কম</p>