গাছে পেরেক ঠুকে ব্যানার ও বিজ্ঞাপন লাগানো বন্ধের দাবিতে কাজ করছে জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে ক্ষেতলাল উপজেলার পাঠানপাড়া থেকে মাত্রাই-মোসলেমগঞ্জ রাস্তার মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে থাকা বিলবোর্ড, ফেস্টুন, ব্যানার সরিয়ে ফেলেন এবং গাছের গায়ে ঠুকানো পেরেক তুলে ফেলেন তারা।
এসময় সাধারণ মানুষকে গাছের গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করেন বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা । সেই সঙ্গে গাছ রক্ষায় আইনের বিষয়েও তুলে ধরেন।
তাদের এ কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেন ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত।
পেরেক ঠুকে টাঙানো ফেস্টুন, ব্যানার, পোস্টারসহ নানা রকম বিজ্ঞাপনে গাছ ভরে গেছে। বিশেষ করে সড়কের পাশের গাছগুলো প্রতিনিয়ত বিজ্ঞাপনদাতাদের নিষ্ঠুরতার শিকার হচ্ছে। গাছে পেরেক ঠুকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার লাগানোর ঘটনা দিন দিন বাড়ছে।
ফলে সড়কের পাশের গাছগুলো পড়েছে ঝুঁকির মুখে।
এমন পরিস্থিতিতে গাছ সুরক্ষায় নতুন আইন তৈরির কথাও বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তবে গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন ও ব্যানার লাগানো দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে তিন মাসের জেল, সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
২০০২ সালের ৭ জুলাই জাতীয় সংসদে গাছে পেরেক বিদ্ধ করে ব্যানার ও বিজ্ঞাপন বন্ধে একটি আইন পাস হয়। এছাড়াও পরিবেশ আদালতে এ সংক্রান্ত আইন রয়েছে কিন্তু আমরা কোনো আইনই কার্যকর করতে পারিনি। এ সংক্রান্ত আইনগুলো কার্যকরে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন তারা।
পরিবেশ কর্মী ও বসুন্ধরা শুভসংঘ ক্ষেতলাল,জয়পুরহাট শাখার সভাপতি এম রাসেল আহমেদ বলেন, ‘গাছেরও প্রাণ আছে, এটা কেউ অনুভব করছে না। রাস্তার পাশে অধিকাংশ গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন টাঙানোয় গাছের ক্ষতির পাশাপাশি সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রশাসনের নজর দেওয়া দরকার। যে-সব প্রতিষ্ঠান গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন লাগাচ্ছে, তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত। সেই সঙ্গে উচিত গাছে পেরেক ঠুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া নিষিদ্ধ করা।
ক্ষেতলাল বন কর্মকর্তা মতিয়র রহমান বলেন, পেরেক ঠুকলে গাছের জীবনীশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। কারণ গাছ শেকড়ের মাধ্যমে খাদ্য গ্রহণ করে। পেরেক ঠুকলে খাবার সংগ্রহে বাধা তৈরি হবে আর গাছের ওই অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তা দিয়ে ব্যাকটেরিয়া ও অণুজীব ঢুকে ধীরে ধীরে গাছ মরে যেতে পারে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ ক্ষেতলাল শাখার সহসভাপতি রাব্বিউল হাসান জিন্না, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মেহেদী হাসান, কার্যকরী সদস্য মোহসীন হাবীব ও জাহদ হাসান প্রমুখ।