বল হাতে ছুটে চলা নিল ওয়াগনার ব্যাটসম্যানদের জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে ওঠেন। মাঠে তার হার না মানা পারফর্মেন্সের মতোই তার স্বভাবটাও অপ্রিতরোধ্য। পাকিস্তানের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে দুর্দান্ত বোলিং করে নিউজিল্যান্ডের জয়ে বড় অবদান রেখেছেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, পায়ের দুই আঙুলে চিড় নিয়ে তিনি ৪৯ ওভার বোলিং করেছেন! ব্যথানাশক ইনজেকশন নিলেও শেষ পর্যন্ত তাকে চোটের কাছে হার মানতে হয়েছে।
কিন্তু প্রতিপক্ষ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ রিজওয়ানের চোখে তিনি একটা 'পাগল'
ম্যাচের প্রথম দিনেই ব্যাটিংয়ের সময় ডান পায়ের আঙুলে আঘাত পান ওয়াগনার। ব্যথা নিয়েই সেদিন ৩ ওভার বোলিং করেন। পরে এক্স-রে করিয়ে পায়ের দুই আঙুলে চিড় ধরা পড়ে। ওই চোট নিয়েই ওই ইনিংসে আরও ১৮ ওভার বোলিং করেন তিনি।
উইকেট নেন ২টি। দ্বিতীয় ইনিংসে বল করেন আরও ২৮ ওভার। যথারীতি লম্বা স্পেলে ব্যাটসম্যানের শরীর তাক করে একের পর এক বাউন্সার ছুড়ে যান। এবারও শিকার ২ উইকেট। তবে এখন তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হবে ৬ সপ্তাহ।
ক্রিকেটের প্রতি ওয়াগনারের এই নিবেদন দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক রিজওয়ান। তার কণ্ঠে শোনা যায় ওয়াগনারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা, 'আমি তাকে বলেছি, তুমি তো একটা পাগল! সে সত্যিই আলাদা একজন। তার মানসিকতা, তার আগ্রাসন দারুণ।'
নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও তার সতীর্থের প্রশংসায় পঞ্চমুখ, 'ক্রিকেট মাঠে সে যা করে, এসব নিয়েই লোকে তার হৃদয়ের বিশালতার কথা বলে আসছে।
কিন্তু পায়ের দুই আঙুল ভাঙা নিয়ে, প্রচণ্ড ব্যথা সয়ে, মাঠের বাইরে গিয়ে ইনজেকশন নিয়ে পা অসাড় করে সে মাঠে নেমেছে, আমরা তাকে সেভাবেই ব্যবহার করেছি। ওয়াগনারের পারফর্মেন্স ছিল খুবই, খুবই স্পেশাল। দল এটির প্রশংসাও করেছে। ওকে আমাদের দরকার ছিল মাঠে, সে তা করেছে।'
আর নিজের এই দুঃসাহসী মানসিকতা নিয়ে ওয়াগানর বলেন, তিনি নিজেকে কখনই ম্যাচ থেকে সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা করেননি। তার ভাষায়, 'আমি জানি, আজকের এই অবস্থানে আসতে কতটা কঠোর পরিশ্রম আমার করতে হয়েছে। মাঠের বাইরে বসে থেকে অন্যদের খেলতে দেখার কোনো ইচ্ছে তাই আমার নেই। আমি খেলার অংশ হতে চাই, নিজের ভূমিকা রাখতে চাই। যতক্ষণ না আমাকে স্ট্রেচারে করে বাইরে নিয়ে যাচ্ছে, আমি চেষ্টা করে যাব এবং সম্ভব সবকিছুই করব।'