<p>ইসরায়েলি কারাগারে একজন ফিলিস্তিনি চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ফিলিস্তিনি বন্দি সমিতিগুলো এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। চার মাসেরও বেশি সময় আটক থাকার পর ইসরায়েলি কারাগারে তার মৃত্যু ঘটে। ইসরায়েলি জেল পরিষেবাও নিশ্চিত করেছে, গত ১৯ এপ্রিল ইসরায়েলের ওফার কারাগারে মারা যান ডা. আল-বুর্শ।</p> <p>৫০ বছর বয়সী ডা. আদনান আল-বুর্শ আল-শিফা হাসপাতালের অর্থোপেডিকসের প্রধান ছিলেন। এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে ইসরায়েল বলেছে, জাতীয় নিরাপত্তার কারণে তাকে আটক করা হয়েছিল। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিশদ কোনো বিবরণ দেওয়া হয়নি এবং জেল পরিষেবার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।</p> <p>এদিকে ফিলিস্তিনি বন্দি বিষয়ক আইনি সহায়তা গোষ্ঠীগুলো বৃহস্পতিবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ডা. আল-বুর্শের মৃত্যু একটি ‘হত্যা’। তার মৃতদেহ এখনো ইসরায়েলি হেফাজতে রয়েছে।</p> <p>ডা. আল-বুর্শ গাজার বৃহত্তম চিকিৎসাকেন্দ্র আল-শিফা হাসপাতালে অর্থোপেডিকসের প্রধান ছিলেন। যেখানে ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছিল। ডা. আল-বুর্শ অস্থায়ীভাবে উত্তর গাজার আল-আওয়াদা হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় তাকে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করে নিয়ে যায়। সহকর্মীরা প্রয়াত চিকিৎসকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তাকে ‘সহানুভূতিশীল’ এবং একজন  ‘বীর’ বলে অভিহিত করেছেন।</p> <p>আল-শিফার পরিচালক ডা. মারওয়ান আবু সাদা বলেছেন, ‘তার মৃত্যুর সংবাদ মানব আত্মার পক্ষে সহ্য করা কঠিন।’ আরেক সহকর্মী ডা. সুহেল মাতার তাকে গাজার সব হাসপাতালের প্রতিটি অর্থোপেডিক বিভাগের জন্য ‘সেফটি ভালভ’ বলে অভিহিত করেছেন। ডা. মাতার বিবিসিকে বলেছেন, ‘তার মতো মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কারণ এই চিকিৎসক সারা জীবন নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন এবং নিজের খরচে বহু কাজ করেছেন।’</p> <p>তিনি তার প্রয়াত সহকর্মীকে এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যিনি কখনোই কাজ নিয়ে ক্লান্তি বোধ করেননি। তিনি সবাইকে ভালোবাসতেন এবং তার মুখের হাসি কখনো ফুরাত না।</p> <p>পশ্চিম তীর এবং গাজায় মানবাধিকার পরিস্থিতির বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেস্কা আলবানিজ বলেছেন, তিনি ডা. আল-বুর্শের মৃত্যুর খবরে ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’। ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষার জন্য কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।</p> <p>গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে ইসরায়েলের হাতে নিহত মেডিক্যালকর্মীদের মোট সংখ্যা এখন ৪৯৬ জন। এতে আরো বলা হয়, আরো এক হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছেন এবং ৩০৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চিকিৎসকেন্দ্রগুলো আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সুরক্ষিত হলেও হামলা চলছে। ইসরায়েল অভিযোগ করেছে, হামাস তাদের সামরিক অভিযানের জন্য হাসপাতালগুলো ব্যবহার করছে। তবে হামাস তা অস্বীকার করেছে। </p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>