পরিবারের কাছে ব্যাংকক ভ্রমণের তথ্য লুকাতে পাসপোর্টের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
শেয়ার
পরিবারের কাছে ব্যাংকক ভ্রমণের তথ্য লুকাতে পাসপোর্টের পৃষ্ঠা ছিঁড়ে গ্রেপ্তার
সংগৃহীত ছবি

ব্যাংকক সফরের তথ্য পরিবারের কাছে গোপন রাখতে পাসপোর্ট থেকে কিছু পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেন এক ব্যক্তি। আর এমনটা করার ফলে নিজেই উল্টো বিপদের মুখে পড়েছেন। ভারতের পুনের ৫১ বছর বয়সী সেই ব্যক্তির নাম বিক্রম কে ভালেরাও। চট্টগ্রাপতি শিবাজি মহারাজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিবাসন কর্তৃপক্ষের কাছে আটক হয়েছেন তিনি।

 

অভিযোগ রয়েছে, নিজের পাসপোর্ট থেকে কিছু পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেছেন বিক্রম। এর মাধ্যমে নিজের আগের ব্যাংকক সফরের তথ্য পরিবার থেকে গোপন রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। সোমবার এই ঘটনা ঘটে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে প্রতারণার অভিযোগে মুম্বাই পুলিশ মামলা করেছে।

আরো পড়ুন
বাবা হারালেন হিরো আলম

বাবা হারালেন হিরো আলম

 

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে, রাজীব রঞ্জন কুমার নামক এক অভিবাসন কর্মকর্তা অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার ভাষ্যমতে, সোমবার ভোরে যাত্রীটি ইমিগ্রেশন কাউন্টারে পৌঁছালে তিনি এই অনিয়মটি লক্ষ্য করেন। যাত্রীটি তার পাসপোর্ট এবং বোর্ডিং পাস উপস্থাপন করার পর দেখা যায় তিনি ইন্দোনেশিয়া থেকে ভিয়েতনামের মাধ্যমে এসেছেন। আরও তদন্ত করার পর, অফিসার দেখেন যে পাসপোর্টের কয়েকটি পৃষ্ঠা নিখোঁজ।

এরপর অফিসার যাত্রীকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যান। এফআইআরের তথ্যমতে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় যাত্রীটি স্বীকার করেছেন যে তিনি প্রায় এক বছর আগে পাসপোর্টের কয়েকটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলেছিলেন যাতে তার ব্যাংককে পূর্ববর্তী ভ্রমণের বিবরণ পরিবার থেকে গোপন রাখা যায়।

এই কাজটিকে সরকারি ভ্রমণ নথিপত্রের অবৈধ হস্তক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ সাহার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইন-এর ১২ নম্বর ধারা এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ৩১৮(৪) ধারায় মামলা করা হয়েছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

প্রেমিকাকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রেমিকাকে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় যুবককে পিটিয়ে হত্যা
প্রতীকী ছবি

প্রেমিকাকে ইভটিজিং করায় প্রতিবাদ করেন যুবক। এর জেরে বেধড়ক পেটানো হয় তাকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে একদিন পর মারা যান তিনি। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে কলকাতার নিউটাউনের গৌরাঙ্গনগর এলাকায়।

পুলিশ জানায়, নিহত ওই যুবকের নাম সংকেত চট্টোপাধ্যায় (২৯)। পেশায় তিনি এসি টেকনিশিয়ান ছিলেন। গৌরাঙ্গনগর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে প্রেমিকার সঙ্গেই লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতেন। 

গত বুধবার মধ্য রাতে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়।

সে কারণে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান ওই তরুণী। তখন রাস্তায় স্থানীয় তিনজন মদ্যপ যুবক তাকে হেনস্তা করেন। সেটা দেখে প্রতিবাদ করেন সংকেত। তখনই ওই যুবকদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় তার।
এ সময় তাকে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। তরুণীর চিৎকারে আশপাশের মানুষও এগিয়ে আসেনি।

হতাশ হয়ে তিনি বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনকে ফোন করলে তারা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সংকেতকে এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে সংকেতের পরিবারের দাবি, দেড় বছর ধরে সংকেত তার বান্ধবীর সঙ্গে গৌরাঙ্গনগরের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। বুধবার মাঝরাতে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। সেটাই অশান্তির পর্যায়ে পৌঁছালে মাঝরাতে ওই তরুণী ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে রাস্তায় যান। তখন কয়েকজন যুবক ওই তাকে কুরুচিকর মন্তব্য করে বলে অভিযোগ। এমনকি তার শ্লীলতাহানি করা হয় বলেও অভিযোগ। আর সেটার প্রতিবাদ করতেই সংকেতকে প্রথমে ঘিরে ধরে পেটাতে শুরু করে। তারপর বাঁশ দিয়ে পেটানো শুরু হয়।

সংকেতের মৃত্যুর ঘটনায় সংকেতের বোন মহিমা বলেন, ‘‌মেয়েটিই আমার দাদাকে ফোন করে ডাকে। আমার দাদা আসে এবং তারপর ওকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই ছেলেগুলোর সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। তাকে বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়েছে। মেয়েটি তাদের কাছে অনুরোধ করলেও তারা শুনেননি।’

তিনি ক্রন্দনরত অবস্থায় বলেন, ‘তাদের শীঘ্রই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, উভয় পরিবারই এই বিয়েতে সম্মত হয়েছে।’

হাসপাতাল সূত্রে খবর, অতিরিক্ত রক্তপাতের জেরেই সংকেতের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ মামলা নিয়ে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এদিন দুপুরে একটি গোপন  আস্তানা থেকে শম্ভু মণ্ডল, সাগর দাস ও রাসু ঘোষ নামের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় নিউটাউন এলাকায় রীতিমতো হইচই শুরু হয়েছে।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস ও টাইমস অব ইন্ডিয়া

মন্তব্য

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা কতটুকু? (ভিডিওসহ)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা কতটুকু? (ভিডিওসহ)
ছবি : আনন্দবাজার

পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বৈরিতা চলমান। বহির্বিশ্বের কাছে ‘চিরশক্র’র তকমাও পেয়েছে তারা। সীমান্তে নিয়মিত সংঘাত ও একাধিকবার বড় ধরনের যুদ্ধেও জড়িয়েছে দেশ দুটি। কাশ্মীর ইস্যু এই সংঘাতের প্রধান কারণ।

সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পর্যটন এলাকায় নিরপরাধ মানুষের ওপর ঘটা এক সন্ত্রাসী হামলাকে কেন্দ্র করে আবারও মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে আসছে এমন নানা খবর।  

সন্ত্রাসী হামলার ওই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করছে ভারত। অন্যদিকে পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করছে।

এ নিয়ে দেশ দুটি পরস্পরের বিরুদ্ধে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে। নয়াদিল্লি পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল, সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত ও সীমান্ত বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছে। পাল্টা পদক্ষেপে ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে ইসলামাবাদ। এতে ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়া যাত্রীদের দেয়া এক সতর্কবার্তায় জানায়, আমেরিকা, ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের কিছু ফ্লাইট বিকল্প দীর্ঘ পথ ধরে যেতে হবে।

বিস্তারিত ভিডিও প্রতিবেদনে...

মন্তব্য
এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন

ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে পাকিস্তান

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে পাকিস্তান
ছবিসূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ বন্দুকধারী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক নতুন করে উত্তেজনার মুখে পড়েছে। এই ঘটনায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দেয়, যা পাকিস্তানের কড়া প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।

বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (এনএসসি) কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তানের পানিপ্রবাহে হস্তক্ষেপ ‘যুদ্ধ ঘোষণা’র শামিল হবে এবং তার জবাব দেওয়া হবে সর্বশক্তি দিয়ে—যার মধ্যে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিতও রয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তিকে এতদিন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরল সহযোগিতার নিদর্শন হিসেবে দেখা হতো।

এই চুক্তির আওতায় পাকিস্তান সিন্ধু নদব্যবস্থার পানি ব্যবহার করে, যা দেশটির কৃষিনির্ভর অর্থনীতির প্রাণ।

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিএস) পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলার জেরে চুক্তিটি ‘আপাতত স্থগিত’ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের লক্ষ্য হলো পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং দেশটিতে খাদ্য নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলা।

পাকিস্তান জানায়, কোনো পক্ষ একতরফাভাবে এই চুক্তি বাতিল বা স্থগিত করতে পারে না, কারণ এটি একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের স্থায়ী চুক্তি।

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পানির প্রবাহ বন্ধ বা সরিয়ে দেওয়া যুদ্ধ ঘোষণার শামিল হবে এবং তার জবাবে সম্পূর্ণ জাতীয় শক্তি ব্যবহার করা হবে।’

পরমাণু অস্ত্রের সম্ভাবনার কথা

প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন, ভারত যদি পাকিস্তানের পানি রোধে কোনও বাঁধ বা অবকাঠামো নির্মাণ করে, তাহলে পাকিস্তান সামরিকভাবে সেই স্থাপনা ধ্বংস করতে দ্বিধা করবে না। এক বিশ্লেষক বলেন, ‘জাতীয় শক্তির পূর্ণ ব্যবহার’ কথার অর্থ হলো, পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের পথেও যেতে পারে।

সাবেক সিন্ধু পানি কমিশনার জামাত আলী শাহ মনে করেন, ভারতের এই সিদ্ধান্ত একটি রাজনৈতিক চাল।

তিনি বলেন, ‘চুক্তিটি একতরফাভাবে স্থগিত করা সম্ভব নয়। এর যে কোনো পরিবর্তনের জন্য দুই পক্ষের সম্মতি লাগবে।’ তবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, তারা ‘স্থগিত’ শব্দটি ব্যবহার করেছে ‘বাতিল’ নয়। তাদের বক্তব্য, পাকিস্তান যদি ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগ মেটাতে পারে, তাহলে চুক্তি পুনরায় কার্যকর হতে পারে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে উদ্ভূত নতুন উত্তেজনা দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে।

পানির মতো একটি মৌলিক উপাদান এখন দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সংঘাতের সম্ভাব্য কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবউন

মন্তব্য

খাদ্যে বিষক্রিয়া: ইন্দোনেশিয়ার বিনামূল্যের খাবার কর্মসূচি নিয়ে বিতর্ক

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
খাদ্যে বিষক্রিয়া: ইন্দোনেশিয়ার বিনামূল্যের খাবার কর্মসূচি নিয়ে বিতর্ক
ছবিসূত্র : এএফপি

ইন্দোনেশিয়া প্রায় ৮ কোটিরও বেশি স্কুল শিক্ষার্থীর জন্য বিনামূল্যে খাবার সরবরাহের একটি উদ্যোগ নিয়েছে। তবে বাস্তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোচ্ছে না। এই সপ্তাহে, রাজধানী জাকার্তার দক্ষিণে সিয়াঞ্জুর এলাকার দুটি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থী ফ্রি খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। যাদের অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও বেশিরভাগই এখন হাসপাতাল  থেকে ছাড়া পেয়েছে।

দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর নেওয়া অন্যতম প্রধান কর্মসূচি এটি। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্ভবত খাবার প্রস্তুতে কোনো সমস্যা ছিল। রান্না থেকে শুরু করে প্যাকিং ও ডেলিভারি পর্যন্ত জড়িত সকল ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

১৬ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানায়, ‘মুরগির তরকারি থেকে একটা বাজে গন্ধ আসছিল।

খাবার খাওয়ার পরে আমার মাথা ঘুড়ছিল এবং বমি বমি ভাব অনুভব করছিলাম।’

ইন্দোনেশিয়ার ২৮ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় ২১ বিলিয়ন পাউন্ড) এই কর্মসূচি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্পগুলোর একটি। এ ঘটনা খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ এবং সরকারবিরোধী প্রতিবাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।  গত ফেব্রুয়ারিতে  বাজেট কাটছাঁটের বিরুদ্ধে দেশটির হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমেছিল।

তাদের ক্ষোভের কেন্দ্রে ছিল প্রেসিডেন্ট প্রাবোওর এই ‘ফ্রি স্কুল মিল’ কর্মসূচি। বিক্ষোভে এক প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘শিশুরা ফ্রি খায়, বাবা-মা চাকরি হারায়।’

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি থেকে জনমনে অসন্তোষ

গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারে প্রাবোওর কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই কর্মসূচি। তিনি বিনামূল্যে খাবার সরবরাহের কর্মসূচিকে শিশুদের অপুষ্টিজনিত রোগ ‘স্টান্টিং’ মোকাবিলার একটি উপায় হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। যে রোগে ইন্দোনেশিয়ায় ৫ বছরের নিচে প্রায় ২০ শতাংশ শিশুরা আক্রান্ত হয়।

 

২০২৩ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমাদের শিশুরা আরো লম্বা হবে এবং সফল হয়ে উঠবে।’ গত অক্টোবর ক্ষমতা গ্রহণের পর এই কর্মসূচি এবং বিনামূল্যে স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও নতুন বাড়ি দেওয়ার মতো অন্যান্য জনপ্রিয় পদক্ষেপ তার জনপ্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করেছে। ক্ষমতায় যাওয়ার পরে প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই তার গ্রহণযোগ্যতা ৮০শতাংশে পৌঁছায়।

প্রথম ধাপে জানুয়ারিতে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির আওতায় ২৬টি প্রদেশের ৫.৫ লাখ শিক্ষার্থীর কাছে ফ্রি খাবার পৌঁছেছে। তবে ইউসুফ ইসহাক ইনস্টিটিউট (আইএসইএএস)-এর ভিজিটিং ফেলো মারিয়া মনিকা উইহার্জা বিবিসিকে বলেন, এই কর্মসূচি সৎ উদ্দেশ্যে হলেও এর যে খবু বেশি প্রয়োজন আছে বিষয়টি এমন নয়। জানুয়ারি থেকেই বিভিন্ন বিষক্রিয়ার ঘটনায় কর্মসূচি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।

ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব নুসা তেংগারা প্রদেশের মিশেল নামে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিবিসিকে জানায়, আমরা কয়েকজন শিক্ষার্থী ফ্রি খাবার খাওয়ার পর পেটে ব্যথা অনুভব করেছিলাম। কারণ খাবারটি বাসি ছিল। এই ঘটনার পর অনেক অভিভাবক সন্তানদের জন্য বাসা থেকে খাবার পাঠানো শুরু করেন বলে জানান এক স্কুল কর্মকর্তা।

এই সপ্তাহে সিয়াঞ্জুরের বিষক্রিয়ার ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের আশ্বাস দিয়েছে। জাতীয় পুষ্টি সংস্থার প্রধান দাদান হিন্দায়ানা বলেন, ‘আমাদের মান উন্নত করতেই হবে।’

ইন্দোনেশিয়া অর্থনীতি সংস্কার কেন্দ্র-এর গবেষক এলিজা মার্ডিয়ান বিবিসিকে বলেন, ‘এই কর্মসূচি শুরু করার আগে যথাযথ ও গভীর পরিকল্পনার অভাব ছিল। তাড়াহুড়ো শেষ পর্যন্ত খাবারের মান ও কার্যকারিতা কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে জনগণের মধ্যে কর্মসূচিটি নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।’

১০ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প

এই কর্মসূচির বিশাল ব্যয়ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। চলতি বছরে ইন্দোনেশিয়া ফ্রি মিলের জন্য ১০ বিলিয়নেরও বেশি ডলার বরাদ্দ করেছে। অন্যদিকে ভারত বছরে ১.৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে ১২ কোটিরও বেশি শিশুদের বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করে—যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি। ব্রাজিলের কর্মসূচির ব্যয় একই রকম হলেও সেবা পায় ৪ কোটির মতো শিক্ষার্থী।

এই বিশাল খরচ সামলাতে প্রেসিডেন্ট প্রাবোও দেশের শীর্ষ ধনীদের সহযোগিতা চেয়েছেন এবং চীন থেকেও অর্থায়ন গ্রহণ করেছেন। তিনি এই কর্মসূচি ও অন্যান্য জনপ্রিয় প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলারের বাজেট কাটছাঁট করেছেন—যা একে আরো বিতর্কিত করে তুলেছে। এর ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের বাজেট অর্ধেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

যেসব কর্মকর্তারা বরখাস্ত হননি তারা অভিযোগ করছেন, এসি, লিফট এমনকি প্রিন্টার ব্যবহারে পর্যন্ত কাটছাঁট করতে বাধ্য করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বৃত্তি কার্যক্রম বাতিল হয়েছে এবং শ্রেণিকক্ষে পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে।

বন্দুংয়ে এক ছাত্র আন্দোলনকারী মুহাম্মদ রমাদান বিবিসিকে বলেন, ‘পেট ভরলেও যদি মস্তিষ্ক খালি থাকে, তাহলে সেটা সবচেয়ে খারাপ।’

দুর্নীতির ঝুঁকি

চ্যালেঞ্জ এখানেই শেষ নয়। মার্চে দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থা এই কর্মসূচিতে ঘিরে দুর্নীতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে, বাজেট ব্যবস্থাপনায়ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠতে শুরু করেছে। দক্ষিণ জাকার্তার এক খাবার সরবরাহকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে। তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে খাবার সরবরাহ করলেও এখনো কোনো অর্থ পাননি।

প্রেসিডেন্ট প্রোবোও অবশ্য এই কর্মসূচির পক্ষে। তিনি বলেন, ‘এই অভিযোগগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি এবং জনগণের এক টাকাও নষ্ট হবে না।’ তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সমস্যাটি অনেক গভীর।

ইন্দোনেশিয়ায় বড় আকারের সামাজিক সহায়তা কর্মসূচিগুলো ঐতিহাসিকভাবে ‘দুর্নীতিতে জর্জরিত’ বলে জানান ইন্দোনেশিয়ার অডিট বোর্ডের গবেষক বিশ্লেষক মুহাম্মদ রাফি বক্রি। তিনি বলেন, ‘এই বাজেট যত বড়, দুর্নীতির সুযোগও ততটাই বড়।’

সূত্র : বিবিসি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ