<p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসপাতালের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের জমি নিয়ে বিরোধ। সেই বিরোধের আক্রোশ এসে পড়েছে লাশের ওপর। নজিরবিহীন এমন এক অমানবিক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন গাজীপুরের একসময়ের জনপ্রিয় মেয়র, বর্তমান মেয়রের ছেলে ও উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে দেড় মাস ধরে বেওয়ারিশ লাশ দাফন বন্ধ রেখেছেন তিনি। অথচ আগে বছরের পর বছর ধরে হাসপাতালের বেওয়ারিশ লাশ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এই কবরস্থানে দাফন করে আসছিল। জমি নিয়ে বিরোধে বর্তমানে ওই কবরস্থানে নাম-পরিচয়হীন লাশ দাফন বন্ধ রেখেছেন তিনি। তাহলে এত বছর ধরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে কিভাবে লাশ দাফন হয়ে আসছিল</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে জাহাঙ্গীর আলম উল্টো সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, হাসপাতালের লাশ হাসপাতালকেই দাফন করতে হবে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সীমানাপ্রাচীরের পাশেই সিটি করপোরেশনের কবরস্থান। টিনশেড মর্গের মেঝেতে ১৪ দিন ধরে পড়ে থাকা বেওয়ারিশ লাশে পচন ধরে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। বারবার চিঠি দিয়ে ও মৌখিকভাবে অনুরোধ করা হলেও লাশ দাফনের উদ্যোগ নিচ্ছে না সিটি করপোরেশন। লাশে পচন ধরায় নিরুপায় হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে এগিয়ে এসেছে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। হাসপাতাল থেকে কয়েক গজ দূরের ওই কবরস্থানে ঠাঁই মিলছে না বেওয়ারিশ লাশের। শুধু জাহাঙ্গীর আলমের আক্রোশে বেওয়ারিশ লাশের অন্তিম ঠিকানা হচ্ছে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের রায়েরবাজার কবরস্থানে। এভাবে গত দেড় মাসে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম হাসপাতালটির সাতটি বেওয়ারিশ লাশ দাফন করেছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের এমন অমানবিক অচরণে স্তম্ভিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. লুত্ফর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে মন্তব্য না করতে আমাদের ওপর নির্দেশ আছে। আপনারা মেয়রের উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলুন।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিটি করপোরেশনের একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসপাতালের বেওয়ারিশ লাশ সিটি করপোরেশন বছরের পর বছর দাফন করে আসছে। বর্তমান মেয়রের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম জেদ করে বেওয়ারিশ লাশ দাফন করতে দিচ্ছেন না। লাশ পচে গেলেও মেয়রের মন গলছে না। বিষয়টি নিয়ে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারাও বিব্রত। আমরাও জানি না তিনি লাশের ওপর কেন এত ক্ষুব্ধ।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নগর ভবন, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সিটি করপোরেশনের কবরস্থান ঘুরে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিটি করপোরেশনের কবরস্থানের উত্তর ও উত্তর-পূর্ব কোণে তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজের একাডেমিক ভবন, হোস্টেল, ডাক্তার কোয়ার্টার, ডাক্তার ডরমিটরি ভবন তৈরি হচ্ছে। এ সময় হাসপাতালের জন্য অধিগ্রহণ করা জমিতেও সীমানাপ্রাচীর দেয় কর্তৃপক্ষ। এতেই সৃষ্টি হয় বিপত্তি। মৌখিকভাবে সিটি করপোরেশন ৫৯ শতাংশ জমি নিজেদের কবরস্থানের বলে দাবি করলেও ওই জমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি করে সীমানাপ্রাচীর দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হন সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বর্তমান মেয়রের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম। ফলে বন্ধ করে দেওয়া হয় বেওয়ারিশ লাশ দাফন।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১২ সালে সরকারি ব্যবস্থাপনায় গাজীপুর মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করা হয়। পরে ২০১৪ সালে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের নাম অনুসারে হাসপাতালটির নামকরণ করা হয় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্পের আওতায় ১২.২৯৫ একর জমি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর হাসপাতালের ৫৯ শতাংশ জমিতে সীমানাপ্রাচীর দিতে বাধা দেন তখনকার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। আর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মন্তব্যের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই অডিওতে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করতে শোনা যায় তাঁকে। এর পরই মেয়র পদ হারান জাহাঙ্গীর আলম।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এর মধ্যেই অধিগ্রহণ করা জমিতে সীমানাপ্রাচীর দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ২০২৩ সালের ২৫ মে সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর আলমের মা। মা মেয়র নির্বাচিত হলেও কার্যত ক্ষমতায় ফেরেন জাহাঙ্গীরই। আর তিনি হন মেয়র মায়ের উপদেষ্টা। এরপর ২০২৪ সালের মার্চ থেকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসা বিভিন্ন বেওয়ারিশ লাশ সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে দাফন বন্ধ করে দেন তিনি। </span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসপাতাল মর্গে লাশ ফ্রিজিং/সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই জানিয়ে বেওয়ারিশ লাশ দাফনে ২০ মার্চ সিটি করপোরেশনকে চিঠি দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর এক মাস অতিবাহিত হলেও এখনো সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন অ্যান্ড টক্সিকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মাযহারুল হক স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, মেডিক্যাল-লিগ্যাল কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রতিদিন কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এর আওতায় কখনো কখনো বেওয়ারিশ/অজ্ঞাতনামা লাশের ময়নাতদন্ত করতে হয়। ময়নাতদন্ত শেষে এসব বেওয়ারিশ/অজ্ঞাতনামা লাশের দাফন/সৎকার এত দিন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে হয়ে আসছিল। ময়নাতদন্ত শেষে লাশগুলো সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীরা নিজ উদ্যোগে মর্গ থেকে সংগ্রহ করে দাফন/সৎকার কার্যক্রম সম্পন্ন করে আসছিলেন। কিন্তু গত ১৩ মার্চ থেকে ময়নাতদন্ত হওয়া দুটি বেওয়ারিশ লাশ দাফন বা সৎকারের জন্য সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারীরা মর্গ থেকে আর গ্রহণ করছেন না।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">চিঠিতে আরো বলা হয়, সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এর কোনো কারণ বা ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। শুধু জানায় যে তারা আর কোনো লাশ দাফন বা সৎকারের জন্য গ্রহণ করবে না।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ প্রসঙ্গে হাসপাতালটির ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এ এন এম আল মামুন (রোমান) কালের কণ্ঠকে বলেন, চিঠি দেওয়ার এক মাস পরও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি চিঠির কোনো উত্তরও দেওয়া হয়নি। কিন্তু এটি একটি মানবিক বিষয় হওয়ায় বর্তমানে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলাগুলোর তদন্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নাম প্রকাশ না করে হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারী বলেন, সিটি করপোরেশন ও হাসপাতালের বিবাদে বেওয়ারিশ লাশগুলো কষ্ট পাচ্ছে। মৃত্যুর পর তারা পরিচয়ও পাচ্ছে না, মাটিও পাচ্ছে না। গাজীপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে তাদের কবর দেওয়া হচ্ছে। সবাইকে মরতে হবে। পরিচয়হীন মানুষগুলোকে নিয়ে সিটি করপোরেশনের এমন অমানবিক আচরণ বন্ধ করা উচিত।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গাজীপুর মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আগে বেওয়ারিশ লাশ সিটি করপোরেশন দাফন করত। দেড় মাস ধরে তা আর করছে না। লাশ দাফনের জন্য সিটি করপোরেশনের বাজেট থাকলেও বর্তমানে মহানগর পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে বেওয়ারিশ লাশ দাফনের জন্য সদর থানাকে জানায় ফরেনসিক বিভাগ। সদর থানা থেকে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে জানানো হয়। তারা এসে লাশ নিয়ে দাফন করে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বেওয়ারিশ লাশ দাফন করছে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম সূত্রে জানা গেছে, ২৬ মার্চ প্রথম শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে তিনটি বেওয়ারিশ লাশ আনা হয়। এর মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী, যাদের ওই দিনই রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ পর্যন্ত গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সাতটি বেওয়ারিশ লাশ এনেছে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। এর মধ্যে ছয়জন পুরুষ ও একজন নারী। সর্বশেষ গত সোমবার (২২ এপ্রিল) একটি বেওয়ারিশ লাশ আনা হয়েছে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জেলা সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক এস এম আনোয়ারুল করিম জানান, গাজীপুরের পুবাইল সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের একজন নিবাসী কিছুদিন আগে মারা যান। আশ্রয়কেন্দ্রের নিবাসীদের মৃত্যু হলে দীর্ঘদিন ধরে সিটি করপোরেশন লাশ দাফন করত। কিন্তু হঠাৎ করে সিটি করপোরেশন তাদের কবরস্থানে লাশ দাফন বন্ধ করে দেওয়ায় ওই নিবাসীর লাশ দাফনে সমস্যা সৃষ্টি হয়। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মেয়রের সঙ্গে কথা বলে ওই দিন রাতেই বিষয়টির সুরাহা হলে নিবাসীর লাশ দাফন করে সিটি করপোরেশন। কী নিয়ে সমস্যা হয়েছে তা জানতে না পারলেও জমি নিয়ে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডোম মোহাম্মদ আলী বলেন, লাশ দাফন নিয়ে দেড় মাস ধরে সমস্যা চলছে। আগে সিটি করপোরেশন সব বেওয়ারিশ লাশ নিজ উদ্যোগে তাদের কবরস্থানে দাফন করত। এখন সমাজসেবা বিভাগের লাশ ছাড়া অন্যগুলো করছে না। পুলিশের মাধ্যমে ঢাকা থেকে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম লাশ দাফন করছে। এতে মৃতদের দাফনে বাড়তি সময় লাগছে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মো. মাহবুব আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, বেওয়ারিশ লাশের দাফন নিয়ে গাজীপুরে জটিল সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের জমি নিয়ে সমস্যা হয়েছে। সিটি করপোরেশন-হাসপাতালের রেষারেষির কারণে এখন বেওয়াশির লাশগুলোকে এর কুফল ভোগ করতে হচ্ছে। আগে সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে লাশগুলো দাফন করা হতো। এখন সিটি করপোরেশন লাশ দাফনে দায়িত্ব নিচ্ছে না।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বর্তমানে এসব লাশ কিভাবে দাফন করা হচ্ছে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জানতে চাইলে তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মৃতদেহগুলো তো মর্গে ফেলে রাখা যাবে না। তাই আমরা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে দাফনের ব্যবস্থা করছি। সরকারি নিয়মানুযায়ী বেওয়ারিশ লাশগুলোর দাফনের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের। আমরা সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সুরাহা করার চেষ্টা করছি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বেওয়ারিশ লাশ দাফনে সিটি করপোরেশনের বরাদ্দ আছে। কিন্তু হঠাৎ করে কেন বেওয়ারিশ লাশ দাফন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের প্রধান উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যদি আমাদের চুক্তি হতো, তাহলে আমরা লাশ দাফন করতাম। হাসপাতালের সঙ্গে আমাদের কোনো চুক্তি নাই। তাই বেওয়ারিশ লাশগুলো আমাদের এখানে দাফন করার সুযোগ নাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের জমিতে লাশ দাফন করুক।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বেওয়ারিশ লাশ দাফন বন্ধ করার কোনো যৌক্তিক কারণ না দেখিয়ে উল্টো হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমার ঝামেলা (মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত) হওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কবরস্থানের একটি জমি দখল করে নিয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালের পাশেই একটি আদি খাল ছিল। সেটাও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছয় ফুটের ড্রেন করে স্ল্যাব দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><b><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বেওয়ারিশ লাশ দাফন বা সৎকারের নিয়ম কী</span></span></span></b></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০২১ সালের ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সভায় নিঃস্ব ও বেওয়ারিশ লাশ দাফনের ব্যয় নির্বাহের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এসংক্রান্ত এক আদেশে বলা হয়, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯-এর তৃতীয় তফসিলের ২৭-এর (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সিটি করপোরেশনকে নিজ খরচে নগরীতে নিঃস্ব ব্যক্তিদের মৃতদেহ দাফন কিংবা সৎকারের ব্যবস্থা করতে হবে। সে পরিপ্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব বাজেট থেকে নিঃস্ব ও বেওয়ারিশ লাশ দাফনের ব্যয় নির্বাহের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="text-autospace:none"><span style="vertical-align:middle"><span style="line-height:115%"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেওয়ারিশ লাশ দাফন ও সৎকারে ২০২০-২১ অর্থবছরে গাজীপুর সিটি করপোরেশন বরাদ্দ পেয়েছিল তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯০ হাজার টাকা বেড়ে তা চার লাখ ৫০ হাজার টাকায় দাঁড়ায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ আরো ৫০ হাজার টাকা বৃদ্ধি পায়। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ পর্যন্ত বরাদ্দের প্রায় দুই লাখ ২৩ হাজার টাকা ব্যয় করা হয়েছে।</span></span></span></span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>