নরসিংদী পৌর নির্বাচন

নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি এমপির তিন প্রার্থী!

হায়দার আলী ও মনিরুজ্জামান, নরসিংদী থেকে
হায়দার আলী ও মনিরুজ্জামান, নরসিংদী থেকে
শেয়ার
নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি এমপির তিন প্রার্থী!

নরসিংদীর পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন স্থানীয় এমপির তিন ঘনিষ্ঠজন। মেয়র পদে সদর আসনের এমপি নজরুল ইসলাম হীরুর ঘনিষ্ঠ চারজন মনোনয়নপত্র দাখিল করার পর একজনের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে এখন আছেন তিনজন। এই প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় আওয়ামী নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বিরক্ত ও বিব্রত।

তাঁরা এ কারণে নৌকা প্রতীকের পরাজয়ের আশঙ্কা করছেন। 

ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বলছেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী যাঁকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন, সেই প্রার্থীকে পরাজিত করতেই মাঠে জোরালোভাবে কাজ করছেন আওয়ামী লীগেরই এমপি নজরুল ইসলাম হীরুর ঘনিষ্ঠ তিন প্রার্থী। বিশেষ করে, নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করার মিশন নিয়েই মাঠে নেমেছেন তাঁরা। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা বলছেন, নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী একজনই—হারুন অর রশিদ।

আর নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পাশাপাশি বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন তিনজন। শুধু নৌকা আর ধানের শীষের প্রতীকের মধ্যে লড়াই হলে নৌকার জয় নিশ্চিত। কিন্তু বিদ্রোহী তিন প্রার্থী নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকলে নৌকার বিজয় কঠিন হয়ে যাবে। কারণ নৌকার সমর্থকদের ভোট কাটাকাটি হলে বিজয়ের পাল্লা বিএনপির দিকে ঝুঁকে যাবে।
তাই তাঁরা কেন্দ্র থেকে নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ সৃষ্টি কিংবা ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।

নরসিংদী পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে মোট সাতজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত হয়ে নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপত্র জমা দেন নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বাচ্চু। ধানের শীষের প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আসাদুল হক এবং স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) এস এম কাইয়ুম, নরসিংদীর মেয়র লোকমান হত্যার চার্জশিটভুক্ত আসামি ও শহর যুবলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফ হোসেন সরকার এবং শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রিপন সরকার। এর মধ্যে এস এম কাইয়ুম, আশরাফ হোসেন ও রিপন সরকার—তিনজনই এমপি হীরুর সমর্থিত নেতা বলে জানা গেছে।

নরসিংদীর আওয়ামী রাজনীতিতে দুটি গ্রুপ কাজ করছে বলে জানা গেছে। একটি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন ভুঁইয়া ও প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেনের ছোট ভাই, বর্তমান মেয়র কামরুজ্জামান কামরুলের গ্রুপ। অন্যটি এমপি হীরু ও লোকমান হত্যার আসামি মোন্তাজউদ্দিনের গ্রুপ।

নির্বাচনে নৌকার সমর্থন পেতে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে নরসিংদী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল এবং শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বাচ্চুসহ তিনজনের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়। অন্য পক্ষ থেকে তিনজনের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় লোকমান হোসেন হত্যার চার্জশিটভুক্ত আসামী আশরাফ হোসেন সরকারকে। যিনি লোকমান খুনের বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। সেই খুনের আসামিকে নৌকা প্রতীক দেওয়ার পর এমপি হীরু ও তাঁর সমর্থকরা খুশি হলেও জেলা আওয়ামী লীগসহ সব অঙ্গসংগঠনের বেশির ভাগ নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং বিষয়টি লিখিতভাবে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠান। বিষয়টি আমলে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব আশরাফ সরকারকে বাদ দিয়ে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বাচ্চুকে নৌকার টিকিট দেন। কেন্দ্র থেকে আশরাফ সরকারের মনোনয়ন বাতিল করায় হীরুর সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। নৌকার প্রার্থীর ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন চারজন। এর মধ্যে একজনের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ায় অন্য তিন প্রার্থী ভোটের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

ধানের শীষের প্রার্থী হারুন অর রশীদ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মৃত সামসুউদ্দিন আহমেদ এছাকের ছেলে। বিএনপির মধ্যে বর্তমানে খুব বেশি কোন্দল নেই। পাশাপাশি নৌকার প্রার্থীর ভোট কাটতে তিন বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে থাকার সুবিধা তিনি পাবেন। এতে তিনি সহজে বিজয়ী হবেন বলে মনে করছে বিএনপি।

হতাশ আওয়ামী নেতাকর্মীরা বলছেন, যেখানে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে বলেছেন, যাঁরা বিদ্রোহী প্রার্থী হবেন আর তাঁদের যাঁরা মদদ কিংবা প্রশ্রয় দেবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখানে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সাহস কোথায় পান তাঁরা?

নৌকার প্রার্থী আমজাদ হোসেন বাচ্চু বলেন, ‘নৌকাকে পরাজিত করতে নয়, আমাদের নেত্রীকে পরাজিত করতে ওরা মাঠে ষড়যন্ত্র করছে। আমার নেত্রী আমাকে নৌকা দিয়েছেন। সেই নৌকার বিরুদ্ধে তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাঠে নেমেছেন।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এমপি হীরুর ঘনিষ্ঠরা নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতেই মাঠে। আর এই সুযোগ নেবেন বিএনপির প্রার্থী।’ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান শামীম নেওয়াজ বলেন, ‘নরসিংদী পৌর নির্বাচনে যাঁরা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তাঁরা সবাই স্থানীয় সাংসদ হীরু সাহেবের আশীর্বাদপুষ্ট। উনার প্ররোচনায়ই তাঁরা প্রার্থী হয়েছেন। সম্প্রতি উনি নিজে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করতে নানা ফন্দি আঁটছেন, যার বাস্তব প্রমাণ বিএনপির প্রার্থীও তাঁর নাতি। কোনো কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরিয়ে নিতে বাধ্য হলে বিএনপির প্রার্থীকে মৌন সমর্থন দিয়ে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে তিনি চেষ্টা করবেন।’

শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, ‘আমি দুবার মেয়র ছিলাম নরসিংদীতে। কিন্তু আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি দল থেকে, দেওয়া হয়েছে আমজাদ হোসেন বাচ্চু ভাইকে। আর নেত্রীর মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতেই আমরা কাজ করছি। নেত্রীর নির্দেশের বাইরে কখনো যাইনি, আগামীতেও যাব না। কিন্তু নেত্রীর প্রার্থীকে পরাজিত করতে তিনজন বিদ্রোহী প্রার্থী এখন মাঠে নেমেছে। এরা কারা সেটা নরসিংদীবাসী জানে।’

জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জি এম তালেব হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা মানে জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে অমান্য করা। যারা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদের বিরুদ্ধে দল থেকে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

পাবনায় ইউএনওর সামনেই ৪ জামায়াত নেতাকে মারধর

    অভিযুক্ত চারজনকে বিএনপির শোকজ
নিজস্ব প্রতিবেদক ও পাবনা প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক ও পাবনা প্রতিনিধি
শেয়ার
পাবনায় ইউএনওর সামনেই ৪ জামায়াত নেতাকে মারধর

পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) সামনেই উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরসহ চার নেতাকে মারধর করেছে বিএনপি নেতারা।

এরপর হাঙ্গামা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগে দলের চার নেতাকর্মীকে শোকজ করেছে বিএনপি।

গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামানের কার্যালয়ে মারধরের ঘটনা ঘটে।

আহত চার জামায়াত নেতা হলেন উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুক-ই আজম, সেক্রেটারি টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস এবং সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জামায়াতের এই চার নেতা ইউএনওর অফিসে যান কোনো একটি কাজে। কিন্তু ইউএনও অন্য একটি কাজে ব্যস্ত থাকায় তাঁরা অফিসে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী বালু উত্তোলন বন্ধ করেছেন কেন জানতে ইউএনওর কাছে যান। সেখানে আগে থেকেই বসে থাকা জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে।

এ কথা বলেই বিএনপি নেতারা ইউএনওর কক্ষ থেকে বের হয়েই আরো কয়েকজনকে ডেকে আনেন।

এর পরই বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, বাবু খাঁ, মানিক খাঁ, আব্দুল বাছেদ, আরিফ শেখসহ ৩০-৪০ জন বিএনপির ক্যাডার ইউএনওর কক্ষে ঢুকে ওই জামায়াত নেতাদের কিল-ঘুষি, লাথিসহ বেধড়ক মারধর করে। পরে তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনার পর কয়েক শ নেতাকর্মী ইউএনও অফিসে ছুটে আসেন।

বিষয়টি নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত নেতাদের বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দেনদরবার চলে।

সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস, সদস্যসচিব শেখ আব্দুর রউফ ও যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, যারা আজকের ঘটনার সঙ্গে জড়িত এসব সন্ত্রাসী আমাদের দলের হতে পারে না। আমরা বলেছি যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে। এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও আলোচনা করা হবে।

উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক কে এম হেসাব উদ্দিন বলেন, সুজানগরে বালু উত্তোলন বন্ধ করায় বিএনপির এসব ক্যাডার ইউএনওকে মারধর ও তুলে আনার জন্য গেছিল।

এ সময় জামায়াত নেতারা বাধা দিলে আমাদের চারজনকে তারা বেধড়ক মারধর করেছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা সাংগঠনিকভাবে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করব।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রধান অভিযুক্ত মজিবুর রহমান খান ও মানিক খানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, যেহেতু আমার কক্ষে মারধরের ঘটনা ঘটেছে ও সরকারি কাজে বাধা দানের ঘটনা ঘটেছে, কাজেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

চার নেতাকে শোকজ

পাবনার সুজানগরে ইউএনওর কার্যালয়ে প্রবেশ করে হাঙ্গামা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অশোভন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগে চারজনকে শোকজ করেছে বিএনপি। গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

শোকজ করা চার নেতা হলেন, উপজেলা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মজিবর রহমান, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবু খাঁ, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মানিক খাঁ এবং এন এ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. শাকিল খান।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযোগের ভিত্তিতে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে তাদের কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

 

 

মন্তব্য

উচ্চ মূল্যে সামুরাইয়ের দুর্গন্ধযুক্ত পানি বিক্রি করছে সান্তুর রেস্টুরেন্ট

এম আর মাসফি
এম আর মাসফি
শেয়ার
উচ্চ মূল্যে সামুরাইয়ের দুর্গন্ধযুক্ত পানি বিক্রি করছে সান্তুর রেস্টুরেন্ট

রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে বিশেষ পানি উল্লেখ করে ভারতীয় রেস্টুরেন্ট সান্তুর-এ বিক্রি করা হচ্ছে দুর্গন্ধযুক্ত খাবার পানি। রেস্টুরেন্টটিতে সামুরাই নামের ওই বোতলজাত পানি বিক্রি করা হয় উচ্চ মূল্যে। বাজারে অন্যান্য ব্র্যান্ডের আধা লিটার বোতলজাত পানি যেখানে ১৫ থেকে ২০ টাকায় পাওয়া যায়, সেখানে সান্তুর রেস্টুরেন্ট কাস্টমাইজড বলে আধা লিটার সামুরাই পানি বিক্রি করছে ৬০ টাকায়।

অভিযোগ উঠেছে, দুর্গন্ধযুক্ত ওই পানি খেয়ে অনেকের বমি হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

দুর্গন্ধযুক্ত পানি বিক্রির এই বিষয়টি সামনে এসেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক অনুষ্ঠানে। বিবিএস আয়োজিত ভায়োলেন্স এগেনেস্ট উইমেন (ভাউ) শীর্ষক জরিপ প্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য খাবার সরবরাহের দায়িত্ব পায় গুলশানের সান্তুর রেস্টুরেন্ট। সেখানে প্রতিজনের খাবারের সঙ্গে বোতলজাত আধা লিটারের সামুরাই পানি সরবরাহ করা হয়।

অনুষ্ঠান শেষে খাবারের সঙ্গে ওই পানি খেয়ে একজনের বমির উপক্রম হয়।

আরমান নামের ওই ব্যক্তি বলেন, অনুষ্ঠানে নাশতা করার সময় উপস্থিত একজন গণমাধ্যমকর্মী পানিতে দুর্গন্ধের বিষয়টি সামনে আনেন। ওই গণমাধ্যমকর্মী জানান, পানিতে দুর্গন্ধ আর স্বাদ ওয়াসার লাইনের পানির মতো। পরে আমাকে টেস্ট করতে বললে অন্য একটি বোতল খুলে পানি মুখে নেওয়ার পর প্রচণ্ড দুর্গন্ধ পাই এবং বমির উপক্রম হয়। পরে আরেকজন গণমাধ্যমকর্মীও পানিতে দুর্গন্ধের অভিযোগ করেন।

এরপর উপস্থিত কয়েকজন পানিতে দুর্গন্ধের বিষয়টি খাবার সরবরাহকারী রেস্টুরেন্টের স্টাফ এবং বিবিএসের কর্মকর্তাদের নজরে আনেন। উপস্থিত বিবিএসের কর্মকর্তা এবং সান্তুর রেস্টুরেন্টের স্টাফরাও পানি পান করে একই রকম মত প্রকাশ করেন। তবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সান্তুর রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ইমরান পানি খেয়ে বলেন, কোনো দুর্গন্ধ নেই। এটি বিশেষায়িত পানি, এ কারণে এমন লাগছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিবিএসের কর্মকর্তারা জানান, পানিতে দুর্গন্ধ এবং স্বাদ স্বাভাবিক বোতলজাত পানির মতো না।

মূলত বিশেষায়িত বলে তারা নিম্মমানের পানি দিয়েছে। খাবারের প্যাকেটে তারা সামুরাই পানি দিলেও অনুষ্ঠানে খাওয়ার জন্য আলাদা মাম পানি দিয়েছে। তারা হয়তো এটা ইচ্ছাকৃত করেছে। কারণ খাবারের প্যাকেট নিয়ে অনেকে চলে যান, তাই অভিযোগ করার সুযোগ থাকে না। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকে পানিতে দুর্গন্ধের অভিযোগ তোলায় বাকি প্যাকেটগুলো থেকে সামুরাই পানির বোতল পরিবর্তন করে মাম পানি দেওয়া হয়।

দুর্গন্ধযুক্ত পানির বিষয়ে জানতে চাইলে সান্তুর রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ইমরান কালের কণ্ঠকে বলেন, পানি তো আমরা উৎপাদন করি না। আমরা খাবার সরবরাহ করি। পানি সামুরাই থেকে আনা হয়েছে। পানির যদি কোনো সমস্যা থাকে সেটা সামুরাই কম্পানির দোষ। পানিতে দুর্গন্ধের বিষয়টি উৎপাদনকারী কম্পানিকে জানানো হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সামুরাই পানি উৎপাদন করে ডাইনেস্টি ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ। এই পানি উৎপাদন হয় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে। প্রতিষ্ঠানটি সাকুরা নামে আরেকটি বোতলজাত পানিও উৎপাদন করে।

সামুরাই পানিতে দুর্গন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে ডাইনেস্টি ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজার রাজীব কালের কণ্ঠকে বলেন, পানির কোয়ালিটি নিয়ে আমরা কম্প্রমাইজ করি না। পানিতে দুর্গন্ধ হওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমাদের পানি রাজধানীর বড় হোটেলগুলোয় সরবরাহ করা হয়। অভিযোগ ওঠার পর আমরা পানির স্যাম্পল কালেক্ট করে ল্যাবে পাঠিয়েছি। কী কারণে পানিতে দুর্গন্ধ হয়েছে সেটা ল্যাবটেস্টের পর বলা যাবে।

বোতলজাত আধা লিটারের এই পানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে ২৫ টাকায় কিনলেও সান্তুর রেস্টুরেন্ট বিক্রি করছে ৬০ টাকায়। অর্থাত্ কাস্টমাইজের কথা বলে প্রতি বোতলে লাভ করা হচ্ছে ৩৫ টাকা।

উৎপাদনকারী কম্পানির ম্যানেজার রাজীব বলেন, আমাদের উৎপাদিত আধালিটার পানির দাম ২৫ টাকা। খুচরা পাইকারি এক রেট। তাহলে সান্তুর রেস্টুরেন্ট কেন ৬০ টাকা বিক্রি করেএমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা আমাদের কাছ থেকে কাস্টমাইজড করে নেয়। এ কারণে যে দাম বলে সেটা লিখে দিতে হয়। আমরা কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজড করে দিই। 

উচ্চ দামে পানি বিক্রির বিষয়ে মন্তব্য জানতে সান্তুর রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার ফোন করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। রেস্টুরেন্টটির ম্যানেজার ইমরানও ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ সিন করেও কোনো জবাব দেননি।

বিষয়টি নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পানিতে দুর্গন্ধ এবং উচ্চ দামে বিক্রির বিষয়টি দেখা হবে। প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

মন্তব্য

‘আগে গভীর আছিল, অনে গরু ঘাস খায়’

    টাঙ্গুয়ার হাওরের ঐতিহ্যবাহী বিল ও কান্দা হারিয়ে যাচ্ছে
শামস শামীম, টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে এসে
শামস শামীম, টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরে এসে
শেয়ার
‘আগে গভীর আছিল, অনে গরু ঘাস খায়’
টাঙ্গুয়ার হাওরের জয়পুর, শ্রীলাইন তাহিরপুর এলাকায় উজাড় হয়ে যাওয়া কান্দা ও বাগমারা গ্রুপ জলমহাল ভরাট হয়ে এখন গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ছবি : কালের কণ্ঠ

টাঙ্গুয়ার হাওরপারের গ্রাম জয়পুরের কৃষক আলমগীর বাড়ির পেছনের বাগমারা জলমহাল দেখিয়ে বললেন, আমরা ছোটবেলা তনে দেখছি, টাঙ্গুয়ার আশপাশে বহুত জাগা গভীর আছিল। ই গভীর এখন বান্দের মাইট্যে ভরি গেছে। আগে পানি থাকত। অনে গরু ঘাস খায়, আমরার বাচ্চাকাইচ্চারা খেলে।

টাঙ্গুয়ার হাওরের মিঠাপানির মাছের আধার ঐতিহ্যবাহী বিল চোখের সামনে হারিয়ে যেতে দেখে এই কৃষকের কণ্ঠে আফসোস ঝরে। শুধু বাগমারা খালই নয়, ছড়ার বিলসহ অন্তত ১০টি বিল হারিয়ে যাওয়ার পথে। 

বিশ্ব ঐতিহ্য টাঙ্গুয়ার হাওর সুন্দরবনের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট। মাদার ফিশারিজ হিসেবে পরিচিত দেশের ছয়টি স্পটের একটি এই হাওর।

নয়কুড়ি কান্দার ছয় কুড়ি বিল এই প্রবাদটি টাঙ্গুয়ার হাওরের বিপুল মৎস্য সম্পদের ঐতিহ্যের আধার জলাশয় এবং উদ্ভিদবৈচিত্র্যের আধার কান্দার প্রতিনিধিত্ব করত। মাছের সঙ্গে নানা প্রজাতির জলজ-স্থলজ জীববৈচিত্র্যেরও বাস্তুসংস্থান ছিল বিল-কান্দায়। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণ ও অপরিকল্পিত ফসলরক্ষা বাঁধের মাটিতে এখন ভরাট হয়ে নয় কুড়ি বিলের হাওরটি সংকটে। জলাশয়গুলো শুকিয়ে এখন গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে।
চোখের সামনে উজাড় হচ্ছে কান্দা।

আইইউসিএনের বায়োডাইভারসিটি অব টাঙ্গুয়ার হাওর : এ রামসার সাইট অব বাংলাদেশ দ্বিতীয় ভলিয়ামে বলা হয়েছে, টাঙ্গুয়ার হাওরে প্রায় ৫৪টি বিল (জলাশয়) ছিল। সূত্র মতে, টাঙ্গুয়ার হাওরের জলাশয়ের সম্মিলিত আয়তন প্রায় তিন হাজার ৬৫১.৮৭ হেক্টর। সর্বশেষ জরিপে বাফার জোনে ৪০টি ও কোর জোনে ৯টি জলাশয়ের উল্লেখ রয়েছে। সূত্র মতে, টাঙ্গুয়ার হাওরের মোট আয়তন ১৬০ বর্গ কিলোমিটার।

এর মধ্যে দুই হাজার ৮০২.৩৬ হেক্টরই স্থায়ী জলাশয় বা বিল। এখনো টাঙ্গুয়ার হাওর দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি হিসেবে বিবেচিত। আইইউসিএনের জরিপে এই হাওরে ১০৮টি কান্দা রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

সূত্র জানায়, ১৯৯৭ সালের এক জরিপে টাঙ্গুয়ার হাওরের বিলগুলোতে ৩৫ পরিবারের ১৪১ জাতের মাছ পাওয়া গিয়েছিল। দেশের মিঠাপানির মাছের অর্ধেক আছে এই হাওরটিতে। ছিল বিপন্ন মহাশোল মাছও। আলমের ডোহার নামের জলাশয়টি চিতল মাছের জন্য বিখ্যাত ছিল।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গুয়ার হাওর সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে পাটলাই নদীর দুই তীরে জাঙ্গাল কেটে হাওরের ফসলক্ষা বাঁধের মাটি কাটা হচ্ছে। কোথাও কোথাও মাটি কেটে খালের রূপ পেয়েছে কান্দা। কোথাও জমির রূপ পেয়েছে। অবাধে মাটি কাটার ফলে কান্দার মূল্যবান নানা প্রজাতির উদ্ভিদও বিলুপ্ত হচ্ছে। কমে যাচ্ছে গবাদিপশুর বিচরণস্থল ও উদ্ভিদবৈচিত্র্যের বাস্তুসংস্থান।

বাগমারা গ্রুপ জলমহালে গিয়ে দেখা যায়, কান্দার পশ্চিম-পূর্ব দিকের জলাশয় শুকিয়ে গেছে। বকের দল খাবার খাচ্ছে। জলাশয়ের পূর্বের অংশে গবাদিপশু চরছে। নারীরা লাকড়ি কুড়াচ্ছে। ভেসে উঠছে বর্ষায় মাছধরার কিরণমালা ছাই। টানেরগুল, মাঝেরগুল, লামারগুল বিলও শুকিয়ে গেছে। এগুলোর পাশাপাশি রাঙামাটি, সমসাগর, এরাইল্যাকুনা, নাইন্দা, সংসা, ছড়ার বিলও শুকিয়ে গেছে। বেরবেরিয়া বাগমারা বিলের আরো কয়েকটি গ্রুপ বিলও বিপন্ন।

হাওরের লামাগাঁও, ভবানীপুর, শ্রীলাইন তাহিরপুর, জয়পুর, মন্দিআতা, গোলাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকার অধিকাংশ কান্দাই উজাড় হয়ে গেছে। জয়পুর গ্রামের কৃষক মো. নূরুল আমিন বলেন, এমন দিনও আসবে, হাওর ও জলাশয় খনন করা লাগবে। একই গ্রামের কৃষক মনির উদ্দিন বলেন, বিল চর অইগেছে। অনে পাখিও নাই মাছও নাই। বাঁধ দেওয়ানে বিল চর অইগিছে। একই গ্রামের আবুল কালাম বলেন, আস্তে আস্তে জাঙ্গাল কমতাছে। হাউরোর বান্দে মাটি কাইট্যা জাঙ্গাল শেষ হয়ে যাচ্ছে। গাছ কমতাছে, পাখি কমতাছে।

পরিবেশকর্মী শাহ কামাল বলেন, নদীর নাব্য কমে পলিমিশ্রিত পানি হাওরে ঢুকে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে হাওরের ভৌগোলিক অবস্থা ও প্রতিবেশ বিবেচনায় না নিয়ে বাঁধ নির্মাণও এই ক্ষতির কারণ। সুনামগঞ্জ পরিবেশ আন্দোলনের সহসভাপতি সাইফুল আলম সদরুল বলেন, কুগ মিশন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গঠিত পানি উন্নয়ন বোর্ড পরবর্তী সময়ে  যত বাঁধ, স্লুইস গেইট, হাওর রক্ষা বাঁধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে, সবখানে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ডেকে এনেছে।

প্রাণবৈচিত্র্য গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, হাওর-জলাশয়-নদী ভরাট হওয়ার দুইটি কারণ। একটি কারণ অভ্যন্তরীণ। এটা পাউবোর বাঁধের ফলে। আরেকটি কারণ আন্তরাষ্ট্রীয়। ভারতের মেঘালয়ের পাশে অবস্থিত হওয়ায় পলি-বালির স্তূপও আসছে। তাই আন্তরাষ্ট্রিক সংলাপের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম বলেন, ফসলরক্ষার প্রয়োজনে হাওরের কান্দা থেকে কিছু মাটি নেওয়া হয়। যদিও নীতিমালা অনুযায়ী টাঙ্গুয়ার হাওরে এমন কিছু করা উচিত নয়। তবে বিল ও নদী ভরাটের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন।

 

 

মন্তব্য
ডা. শফিকুর রহমান

নেতা নয়, নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় জামায়াতে ইসলামী

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নেতা নয়, নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় জামায়াতে ইসলামী
শফিকুর রহমান

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী নেতা নয়, নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। ক্ষমতা নয়, দুনিয়ায় আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে জামায়াত জোরালোভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামলীর বাদশাহ ফয়সল ইনস্টিটিউটে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াতের আমির।

দলটির ঢাকা মহানগরী উত্তরের মেডিক্যাল থানা আয়োজিত চিকিৎসকদের সম্মানে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, শাড়ি, লুঙ্গি বা খাদ্যদ্রব্য নয়, বরং এমনভাবে জাকাত দেওয়া উচিত, যাতে একজন ব্যক্তি স্বাবলম্বী ও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ইসলামী রাষ্ট্র না হওয়ায় সরকারি জাকাত ব্যবস্থাপনায় জনগণের আস্থা নেই, তাই মানুষ সরকারকে জাকাত দিতে চায় না।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, পবিত্র রমজান মাসেই মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাজিল হয়েছিল বলেই এই মাসের এত মাহাত্ম্য ও মর্যাদা।

তাই মানবজীবনের সব সমস্যার সমাধান করতে হবে কোরআনের আদর্শের ভিত্তিতেই। তিনি দ্বিন প্রতিষ্ঠায় চিকিৎসকদের দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণের আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে দলটির মেডিক্যাল থানা আমির ডা. স ম খালিদুজ্জামান বলেন, আমরা সবাই আল্লাহর বান্দা। তাই চিকিৎসাকে শুধু পেশা হিসেবে গ্রহণ করলে চলবে না, বরং তা মানবসেবা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) সেক্রেটারি অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম প্রমুখ।

 

 

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ