মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় এক মাসের মধ্যে ঘোষণার দাবি জানিয়েছে এক্স ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের পক্ষ থেকে আরো দাবি করা হয়েছে, মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর ফাঁসির রায় যেন উচ্চ আদালতে বহাল থাকে এবং রায় ঘোষণার সাত কার্যদিবসের মধ্যেই তা কার্যকর করা হয়। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় এক্স ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন।
‘শহীদ মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওসি প্রদীপের মৃত্যুদণ্ড অনতিবিলম্বে কার্যকর করার দাবি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা মামলার বিচার বিলম্বিত হওয়ার জন্য রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাবকে দায়ী করেন।
সংগঠনের সদস্যসচিব লেফটেন্যান্ট (অব.) সাইফুল্লাহ খান সাইফ বলেন, ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। তাতে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন এবং সাতজনকে খালাস দেওয়া হয়। বিচারিক কার্যক্রম মাত্র ৩০ কার্যদিবসে শেষ হয়।
বর্তমানে হাইকোর্টে আপিলের শুনানি চলছে।
সাইফুল্লাহ খান বলেন, ২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজারের টেকনাফে শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা। পরে সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে মামলা করেন এবং র্যাবের তদন্তে ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ‘ভয়ভীতির রাজত্ব’ কায়েম, কথিত ক্রসফায়ারে অন্তত ১৪৫ জনকে হত্যার অভিযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন সাইফুল্লাহ খান।
সংগঠনটি শিশু আছিয়া, পারভেজ, তোফাজ্জল এবং গত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যাসহ সব বিচার দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘বিচারিক প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের বৈষম্য বা প্রভাব মেনে নেওয়া হবে না। সিনহা হত্যা মামলার রায় যেন কেউ প্রভাবিত করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
সংগঠনের আহবায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়কে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই—রায় কার্যকরে কোনো হুমকি, প্রলোভন বা রাজনৈতিক চাপ যেন প্রভাব ফেলতে না পারে। সাত কার্যদিবসের মধ্যেই আমরা রায় কার্যকর দেখতে চাই।
’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শাখাওয়াত হোসেন, মেজর (অব.) রাজিবুল হাসান, ক্যাপ্টেন (অব.) শুভ আফ্রিদি, করপোরাল (অব.) তফসীর আহমেদ, নৌবাহিনীর সাবেক সদস্য সাইদ এবং সাবেক সৈনিক মো. নাইমুল ইসলাম।