এপ্রিল মাস। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদ। বনের মধ্যে ছায়া আছে, যে কারণে হাঁটতে কিছুটা সুবিধা হচ্ছে। যদিও সেদিন রাঙামাটির কাপ্তাই উদ্যানে পথ চলছি বেশির ভাগ সময় একটি ছড়ার মধ্য দিয়ে।
এপ্রিল মাস। গ্রীষ্মের তপ্ত রোদ। বনের মধ্যে ছায়া আছে, যে কারণে হাঁটতে কিছুটা সুবিধা হচ্ছে। যদিও সেদিন রাঙামাটির কাপ্তাই উদ্যানে পথ চলছি বেশির ভাগ সময় একটি ছড়ার মধ্য দিয়ে।
বসন্তে ফোটা ফুল তখনো কিছু আছে। তবে গ্রীষ্মের বুনো ফুলের প্রাধান্য অনেক। নানা প্রজাতির পাখি ফুলে ফুলে বিচরণ করছে।
বেগুনিগলা মৌটুসি বাংলাদেশের সুলভ আবাসিক পাখি। এদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আর্দ্র নিম্নভূমির প্রাথমিক বন এবং গৌন বন। এরা বাংলাদেশের ঘন চিরসবুজ পাহাড়ি বনে বিচরণ করে। বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট ও পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে প্রধানত দেখা যায়। বেগুনিগলা মৌটুসি সচরাচর জোড়ায় এবং একা চলে। বৃক্ষ, গুল্ম ও লতানো উদ্ভিদের ফুলে ঘুরে বেড়ায় এবং ফুলের মধু পান করে। লম্বা ও চিকন চঞ্চু দিয়ে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে। তারা পোকামাকড়ও ধরে, বিশেষ করে যখন ছানাদের খাবার দেয়। ১৭৬০ সালে ফরাসি প্রাণিবিজ্ঞানী মাথুরিন জ্যাকস ব্রিসন ফিলিপিন্সে সংগৃহীত একটি নমুনার ওপর ভিত্তি করে বেগুনিগলা মৌটুসির প্রথম বর্ণনা করেন।
এরা ক্ষীণ স্বরে ডাকে এবং বেশ চঞ্চল। প্রজনন মৌসুমে পুরুষ পাখি বৃক্ষের ডালে বসে সুমধুর সুরে গান গায়। ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসে বনের গাছের ডালে ডালে শেওলা ও মাকড়সার জাল দিয়ে ঝুলন্ত বাসা বানিয়ে দুই থেকে তিনটি ডিম পাড়ে। ডিম ফোটে ১৪-১৫ দিনে। নারী ও পুরুষ পাখি মিলে ছানাদের যত্ন নেয়। তবে শুধু মেয়ে পাখিটা ডিমে তা দেয়। বাংলাদেশ ছাড়াও এদের ভারত, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপিন্সে দেখা যায়।
লেখক : নিসর্গী ও পরিবেশবিদ, জার্মান এরোস্পেস সেন্টার
সম্পর্কিত খবর
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও গাজী গ্রুপের পরিচালক গোলাম মর্তুজা পাপ্পার একান্ত সহকারী (পিএস) কামরুজ্জামান হীরা (৪৬) গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাজধানীর রমনা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা শাখা ডিবি। পরে তাঁকে রূপগঞ্জ থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।
সন্ধ্যায় হীরাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা ‘গ’ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেদী ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রূপগঞ্জে কামরুজ্জামান হীরা ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক। গোলাম মর্তুজা পাপ্পার আশ্রয়ে তিনি চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়, জমি দখলসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড করতেন। কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করতেন, কিশোর-তরুণদের হাতে অস্ত্র ও মাদক তুলে দিতেন।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) পরিস্থিতি যেন ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। তালা ভেঙে হলে ওঠার দ্বিতীয় দিনে শিক্ষার্থীরা ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে যেমন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন, তেমনি পাল্টা ভিসির পক্ষে নেমেছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে অভিভাবকরাও একাত্মতা প্রকাশ করবেন বলে একটি ফেসবুক গ্রুপে দেখা গেছে। কুয়েট অ্যাডমিশন ইনফরমেশন ডেস্ক নামের ফেসবুক গ্রুপে আব্দুর রহমান নামের একজন বুধবার লিখেছেন, ‘সারা দেশে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখন সুন্দরভাবে চলছে, তখন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ব্যর্থ করার জন্য একটি চক্র খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে পেছন দিকে টেনে ধরছে।
এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা গতকাল বুধবার দুপুরে কুয়েটের দুর্বার বাংলা থেকে ভিসির বিরুদ্ধে নানা রকম স্লোগানসহ বিক্ষোভ মিছিল বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে প্রেস ব্রিফিং করেন। এ সময় তাঁরা স্পষ্ট ভাষায় জানান, কুয়েট ভিসি ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না।
এদিকে শিক্ষার্থীদের এক দফার দাবিকে অনৈতিক উল্লেখ করে গতকাল দুপুরে কুয়েটের সব শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ব্যানারে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। এর আগে প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষকদের মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১২টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দুর্বার বাংলায় যান।
এদিকে কুয়েট শিক্ষার্থীদের এক দফায় একাত্মতা প্রকাশ করে খুলনা নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি নগরীর শিববাড়ী মোড়ে গতকাল মানববন্ধন করে। কুয়েটে হল বন্ধ রেখে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নামে মামলা ও বহিষ্কারের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। তার আগে মঙ্গলবার রাতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বছরের জুনের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ প্রশাসন সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। তারই অংশ হিসেবে শিগগিরই ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ কমপক্ষে ২৪ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হবে। নির্বাচনের আগে পর্যায়ক্রমে বাকি জেলাগুলোয় ডিসি পদে পরিবর্তন আনার পরিকল্পনাও রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ভোটের আগেই পুরো মাঠ প্রশাসন গুছিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে শিগগিরই ঢাকাসহ অন্তত দুই ডজন জেলায় নতুন ডিসি পদায়ন করা হবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ভোটের সময় রিটার্নিং অফিসার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)।
সূত্র জানায়, ভোটের সময় ডিসি-ইউএনওর দায়িত্বে যাঁদের রাখা হবে, সেসব কর্মকর্তার ব্যক্তিগত তথ্য ছাড়াও তাঁদের পারিবারিক তথ্য একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নতুনদের পদায়ন করতে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন ‘আপাতত এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কালের কণ্ঠকে জানান, কয়েক দফায় ১৯৫ জনকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হলেও উপস্থিত ছিলেন ১১৫ জন। ৪০ শতাংশ কর্মকর্তাই ডিসি হতে আগ্রহী নন বলে সাক্ষাৎকার দিতে আসেননি। ২৮তম ব্যাচের ১৩০ জনসহ মোট ২২০ জনের সাক্ষাৎকার বাকি রয়েছে। যদিও ২৮তম ব্যাচ থেকে এখনো ডিসি পদে পদায়নের জন্য ফিটলিস্ট তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। গত ২০ মার্চ ২১ জন ডিসি যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। এই ২১ জনসহ আরো তিন-চারজন ডিসিকে প্রত্যাহার করা হতে পারে। তাঁদের জায়গায় শিগগিরই নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হবে। অর্থাৎ আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময় ২৫, ২৭ ও ২৮তম ব্যাচের কর্মকর্তারাই ডিসি হিসেবে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে ২৪তম ব্যাচের ২৬ জন, ২৫তম ব্যাচের ২৫ জন এবং ২৭তম ব্যাচের ১৩ কর্মকর্তা ডিসির দায়িত্বে আছেন। ২৪তম ব্যাচের ২৬ জনের মধ্যে ২১ জন সম্প্রতি যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২১ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী প্রশাসন সাজানো শুরু করবে সরকার। এ জন্য খুব সতর্কতার সঙ্গে কর্মকর্তাদের বাছাই করা হচ্ছে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়াদের এ ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার চিন্তা রয়েছে। সম্প্রতি ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৪৩ জন সাবেক ডিসিকে ওএসডি ও ২২ জনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৪ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ডিসিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে সরকার। এই সিদ্ধান্তের পর নির্বাচনকালীন ডিসি হওয়ার আগ্রহ অনেকটাই কমে গেছে কর্মকর্তাদের। এ কারণে ফিটলিস্টে নাম থাকার পরও অনেকে সাক্ষাৎকার দিতে আসছেন না বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
রাজনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। প্রায় দেড় দশক পর দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন। পাকিস্তানের পক্ষে বৈঠকে অংশ নিতে গতকাল বুধবার ঢাকায় এসেছেন ওই দেশটির পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকের জন্য কোনো নির্দিষ্ট এজেন্ডা নির্ধারণ করা হয়নি। আলোচনার সময় পারস্পরিক স্বার্থের সব ক্ষেত্রই আলোচনার আওতায় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ-পাকিস্তান পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে সর্বশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ২০১০ সালে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বার্তা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, আজকের বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক দৃঢ় করার প্রস্তাব থাকবে। পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ইস্যুতে সমন্বয় বাড়াতে একটি যৌথ কমিশন গঠনের প্রস্তাব তুলতে পারে। অন্যদিকে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য পাকিস্তানকে বিশেষায়িত কর্মসূচির প্রস্তাব দিতে পারে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আজকের বৈঠকের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
চলতি মাসের শেষ দিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ঢাকা সফর করবেন। ২০১২ সালের পর এটি কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম সফর হবে।