সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের ‘জনতার দল’ নামে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দলটি আত্মপ্রকাশ করে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শামীম কামাল দলের চেয়ারপারসন হয়েছেন। দলটির আদর্শ হলো বাংলাদেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শামীম কামাল বলেন, ‘আমরা বাম বা ডান দিকে তাকাব না। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের লক্ষ্য নয়। আমরা ইতিহাসের অমীমাংসিত বিষয়গুলোতে যুক্ত হব না, আমরা সামনের দিকে তাকাতে চাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের সমালোচনা করতে চাই না।
আমরা ব্যবস্থার সমালোচনা করতে চাই। আওয়ামী লীগের আগেও এই দেশে ফ্যাসিবাদ বিদ্যমান ছিল। তবে আমরা ফ্যাসিবাদকে সমর্থন করব না বা কোনো ধরনের অন্যায়কে স্থান দেব না।’ দলটি তরুণ প্রজন্মের সবার জন্য বাধ্যতামূলক সামরিক প্রশিক্ষণ প্রণয়ন করতে চায় বলেও জানান তিনি।
শামীম কামাল বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রার্থীদের মধ্যে সততাকে অগ্রাধিকার দেব। এর অর্থ যদি ১০টি আসনে প্রার্থী দিতে পারি, তবে তা-ই করব। প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পর যদি আমরা তার দুর্নীতির প্রমাণ পাই, তখন দল থেকে বহিষ্কার করব।’
দলটির লক্ষ্য আগামী ১০ বছরের মধ্যে রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়া। সামরিক কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও এনজিও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দলটির কার্যক্রম তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছবে।
৭৪টি এনজিও কর্মীর একটি নেটওয়ার্ক গতকালের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে দলটিকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
কামাল বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন স্থায়ী সমাধান নয়। নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থাই স্থায়ী সমাধান। জানা গেছে, দলটির মুখপাত্র হবেন ডেল এইচ খান।
দলের আহ্বায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. শামীম কামাল বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক দর্শন ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনে নেতা তৈরি হতে দুই ঘণ্টাও সময় লাগে না। আমরা ঐতিহাসিকভাবে মীমাংসিত বিষয় নিয়ে অহেতুক তর্কে জড়াতে চাই না। আমরা শুধু সৎসাহসী শিক্ষিত দেশপ্রেমিক নিষ্ঠাবান মানুষ নিয়ে এগোতে চাই।’
জনতার দলের শীর্ষ নেতারা জানান, দল ঘোষণার আগে কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন পেশাজীবী ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেছেন। তাঁদের মধ্যে প্রভাবশালী নেতা ছাড়াও গত সংসদে নির্বাচিত স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এবং প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা রয়েছেন। দলটি আত্মপ্রকাশের জন্য এর আগে ঢাকা ক্লাবে ইফতার পার্টির আয়োজন করে। সেখানে দেশের বিভিন্ন পেশাজীবী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
দলের নেতারা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি বড় অংশ নতুন এই দলে রয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের ওই সদস্যদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের প্রতারিত মনে করছেন। তাঁরাও এই দলে যোগ দেবেন বলে নেতারা মনে করছেন।