প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে মায়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে, তবে এ প্রক্রিয়ায় সময় লাগবে। গতকাল মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ড. খলিলুর রহমান জানান, আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি সংগঠনটিকে একটি কার্যকর ও গতিশীল সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা আলোচনা শুরু করেছি। এমনকি আরাকান আর্মির সঙ্গেও যোগাযোগ হচ্ছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে মায়ানমারের সঙ্গে আলোচনায় তারা এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করেছে, যাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তারা আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা চাই, তারা যেন অন্তত আগামী রমজানের ইফতার নিজ দেশে করতে পারে—এটাই আমাদের লক্ষ্য।
’
তিনি আরো বলেন, প্রত্যাবাসনের আগে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি। এ জন্য আরাকানে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং যুদ্ধবিরতি অপরিহার্য। যুদ্ধাবস্থায় কাউকে ফেরত পাঠানোর মানে হলো তাদের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলা। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘের সহায়তা প্রয়োজন।
ড. খলিলুর রহমান জানান, ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ছয় দফায় বাংলাদেশ মায়ানমারকে আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছিল। সেই তালিকা থেকে দুই লাখ ৫০ হাজার জনকে মায়ানমার রিভিউ করেছে এবং এক লাখ ৮০ হাজার জনকে মায়ানমারের নাগরিক হিসেবে শনাক্ত করেছে। বাকি ৭০ হাজার জনের নাম-ছবি নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে, যা নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। অবশিষ্ট পাঁচ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই দ্রুত শুরু হবে।
তিনি বলেন, ‘চিহ্নিত এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাও সঙ্গে সঙ্গেই ফিরে যাবে না।
প্রত্যাবাসনের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে—তাদের কোথায় রাখা হবে, নিরাপত্তা কেমন থাকবে, জীবিকা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকবে কি না, এসব বিবেচনায় নিয়ে আমাদের এগোতে হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমরা যখন কোনো ভালো উদ্যোগ নিই, তখন কিছু সমস্যা হঠাৎ করে সামনে আসে। এতে আমাদের কাজকে অগ্রাহ্য করার চেষ্টা দেখা যায়। এটা এক ধরনের প্যাটার্নে পরিণত হয়েছে।’