নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে তিন পার্বত্য জেলার মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে সাংগ্রাই উৎসবে মেতে উঠেছেন। হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী লোকজ সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে বান্দরবানে সপ্তাহব্যাপী সাংগ্রাই উৎসব শুরু হয়েছে। এদিকে পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে প্রাণের উৎসব বৈসাবি চলছে। পাহাড়ে বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ উপলক্ষে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই উৎসব চলবে।
কালের কণ্ঠের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—
খাগড়াছড়ি : গতকাল চাকমাদের মূল বিজুতে মূলত ঘরে ঘরে অতিথি আপ্যায়ন করা হয়। বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার ছাড়াও বহু শাক-সবজি দিয়ে তৈরি ‘পাজন’ পরিবেশন করা হয়। আজ সোমবার গয্যাপয্যার মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী চাকমাদের বিজু উৎসব শেষ হবে। এদিকে গতকাল চৈত্রসংক্রান্তির দিনে হারিবৈসুর মধ্য দিয়ে ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসবের সূচনা হয়েছে।
রবিবার সকালে জেলা সদরের খাগড়াপুরে খাগড়াছড়ি খালের স্বচ্ছ পানিতে গঙ্গা মায়ের উদ্দেশে ফুলপূজা করে ত্রিপুরারা। এদিন শিশু ও কিশোরীরা নদীতে নতুন বুননের কাপড় ভাসিয়ে দেয়।
এ ছাড়া চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে হাজারো ত্রিপুরা নর-নারী মানতের উদ্দেশ্যে ভিড় জমিয়েছেন দুর্গম দেবতা পুকুরে। সেখানে তিন দিনব্যাপী তীর্থমেলার উদ্বোধন করেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান।
এদিকে সাংগ্রাই উপলক্ষে মারমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভুইয়া।
বান্দরবান : পাহাড়ি মারমাদের কাছে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছর বরণ করাকে প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক একটি উৎসব হলো সাংগ্রাই। গতকাল বান্দরবান পৌর শহরের রাজার মাঠে সাংগ্রাই উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মিজ শামীম আরা রিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। শোভাযাত্রায় মারমা, চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, ত্রিপুরাসহ বান্দরবানে বসবাসরত ১১টি পাহাড়ি সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পোশাক ও পরিচ্ছদ পরে বিভিন্ন প্রাণীর ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেয়।
লামা-আলীকদম (বান্দরবান) : লামা কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে মাহা সাংগ্রাই উদযাপন কমিটির আহবায়ক পিন্টু মং মার্মা জানান, আজ সোমবার থেকে শুরু হবে সাংগ্রাই উদযাপনের বিভিন্ন কর্মসূচি। ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহ্যবাহী পানি খেলা।