বসুন্ধরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সুইমিংপুলের উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল রবিবার সকালে বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সুইমিংপুলটির উদ্বোধন করা হয়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে সাঁতার শেখার সুযোগ চালু হলো। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের বিশেষ নির্দেশনায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের শারীরিক সুস্থতা ও সার্বিক বিকাশে এটি একটি মূল্যবান উপহার হিসেবে বিবেচনা করছে কর্তৃপক্ষ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আনিছুর রহমানসহ শিক্ষক, অভিভাবক ও অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যক্ষ আনিছুর রহমান বলেন, ‘শুধু পাঠ্যবই নয়, শিক্ষার্থীদের সব দিক থেকেই প্রস্তুত করতে হবে। সাঁতার জীবনের জন্য এক অপরিহার্য দক্ষতা।
আমরা চাই, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুস্থ ও সচেতনভাবে গড়ে উঠুক। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি, আমরা চলতি বছরের ১ জানুয়ারি আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি। শুরু থেকেই এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাকটিভিটিতে গুরুত্ব দিচ্ছি। এটি আমরা তিন ভাগে ভাগ করেছি—একাডেমিক, স্পোর্টস এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্পোর্টসের বিষয়ে আমাদের সম্মানিত চেয়ারম্যান অত্যন্ত আগ্রহী। তিনি দেখেছেন, বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে খেলাধুলার বিশাল আয়োজন রয়েছে। সেই সুযোগ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। তারই অংশ হিসেবে বাচ্চাদের সাঁতার শেখার সুযোগ আমরা পেয়েছি। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী সব শিক্ষার্থীকে সাঁতার শেখাতে হবে এবং আমরা সেটি নিশ্চিত করব।
আজ থেকে সেই যাত্রা শুরু হলো। এখানকার শিক্ষার্থীরা বিনা খরচে দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে সাঁতার শিখতে পারবে। আমাদের প্রশিক্ষকরা জাতীয় পর্যায়ে সাঁতারে দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’
দেখা গেছে, সাঁতার শেখার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা। সুইমিংপুলের চারপাশে তারা উৎসাহ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল উদ্বোধনের সময়। উদ্বোধনের পর অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইস্রাফিল হাসান বলে, ‘আমি সাঁতার শেখার সুযোগ পাইনি। এখন স্কুলেই যদি এমন সুযোগ থাকে, তাহলে আর কোথাও যাওয়ার দরকার নেই।’
একই শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী বলে, ‘সাঁতার শেখাটা শুধু মজার নয়, প্রয়োজনীয়ও। স্কুলে এমন সুযোগ পাওয়া আমাদের জন্য বড় সুবিধা।’
শিক্ষার্থী নাফিস আল সাদ বলে, ‘এখন থেকে সাঁতার শেখার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারব। সব মিলিয়ে দারুণ লাগছে।’
কোরআন তিলাওয়াত ও স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর প্রশিক্ষক প্রমি আক্তার ও সেতু আক্তার শিক্ষার্থীদের সাঁতার কেটে দেখান এবং সাঁতার শেখানোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
জাতীয় পর্যায়ের এই দুই সাঁতারু প্রশিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাঁতার শেখানোর সুযোগ পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত। প্রমি আক্তার বলেন, ‘এত বড় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের। আমি চাই শিক্ষার্থীদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিতে যেন তারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে এবং বিজয়ী হয়।’
সেতু আক্তার বলেন, ‘আমি এর আগে একটি প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। এখানে আবেদন করার পর আল্লাহর রহমতে সুযোগ পেয়েছি। আমি চাই, এখানকার শিক্ষার্থীরা সুস্থ থাকুক এবং জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিতে সক্ষম হোক।’
বসুন্ধরা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী স্পোর্টস টিচার জাকিয়া সুলতানা সুবর্ণা বলেন, ‘এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাকটিভিটির মধ্যে খেলাধুলাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের দায়িত্বে আমি আছি। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পাবে।’