২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তীর্ণ হতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পূর্ণোদ্যমে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট করেছেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এখন দরকার পূর্ণোদ্যমে কাজ এগিয়ে নেওয়া, যেন কোনো খাত ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং সর্বোচ্চ সুবিধা আদায় করা সম্ভব হয়।
এ লক্ষ্যে একটি ডেডিকেটেড মনিটরিং টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে এলডিসি উত্তরণের সার্বিক দিক নিয়ে বিশেষ উপদেষ্টা আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “আমরা এখন ‘উৎক্ষেপণ মোডে’।
পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পেছানোর প্রয়োজন নেই, কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশ ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা চালু রাখবে বলেছে।”
তিনি বলেন, ‘ভুটান, সামোয়ার মতো দুর্বল অর্থনীতিও গ্র্যাজুয়েশন করেছে। আমরা কেন পারব না? আমাদের আত্মবিশ্বাস ও প্রস্তুতির ঘাটতি নেই।
’
বিশ্ববাণিজ্যে দর-কষাকষির জন্য একটি আলাদা ট্রেড নেগোসিয়েশন বডি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব কোনো বাণিজ্য সংস্থা না থাকায় প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা গড়ে তুলতে এই সেল কাজ করবে।’
ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অনুপাত এখনো ৬-৭ শতাংশ, যেখানে ভিয়েতনামে তা ১৯ শতাংশ। অনুপাত বাড়ালে বিদেশি সহায়তার প্রয়োজন থাকবে না।’
বিশেষ সহকারী জানান, কর্মসংস্থান ও বেসরকারি খাতের ওপর সম্ভাব্য চাপ মোকাবেলায় প্রস্তুতির অংশ হিসেবে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
এতে সরকারি কর্মকর্তার পাশাপাশি বেসরকারি খাত ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরাও যুক্ত থাকবেন।
বিদেশনীতি : প্রো-বাংলাদেশ
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশনীতি হলো ‘প্রো-বাংলাদেশ’। দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের নীতিতে অগ্রসর হচ্ছে সরকার।
তিনি জানান, পাকিস্তানসহ সার্কভুক্ত সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে নেপালের জন্য উত্তরবঙ্গে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।