<p>পাবনার ভাঙ্গুড়ায় রেললাইনের পাশে জলাশয়ে গর্ত করা হচ্ছে। রেললাইনের ওপর থেকে ২৫ ফুট নিচের এই জলাশয়ে আরো সাত থেকে আট ফুট গর্ত করা হলে রেললাইনসহ সড়ক ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। পূর্ব থেকেই এই জলাশয়ের একটি অংশে প্রতিবছর সড়কে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। পৌরসভা থেকে নিয়মিত এটি সংস্কার করা হয়। জানা যায়, ভাঙ্গুড়া বড়াল ব্রিজের পশ্চিম পাশে প্রায় ১০ একর আয়তনের রেলের জলাশয় রয়েছে। ভাঙ্গুড়া হাজি জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. শহিদুজ্জামানসহ প্রায় ১০ জন ব্যক্তি রেলের কাছ থেকে এই জলাশয় দীর্ঘদিন ধরে লিজ নেন। পরে গোবিন্দ হালদার নামের এক ব্যক্তির কাছে দ্বিগুণ মূল্যে এই জলাশয় সাব লিজ দেন। মাছ চাষের ফলে জলাশয়ের তলদেশ অনেকটা ভরে গেছে। এ ছাড়া জলাশয়ের পার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে রেল কর্তৃপক্ষ থেকে জলাশয়ের পার সংস্কারের অনুমতি নিয়ে জলাশয়ের মাটি কাটছেন ইজারাদার।</p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈশ্বরদী-জয়দেবপুর রেললাইনের বড়াল ব্রিজের পশ্চিমে প্রায় ১০ একর আয়তনের এই জলাশয়। রেললাইনের ৮ থেকে ১০ ফুট নিচে পাশ দিয়ে আঞ্চলিক মহাসড়ক রয়েছে। মহাসড়ক থেকে জলাশয়ের গভীরতা ১৫ ফুটেরও বেশি। রেল থেকে লিজ নেওয়া ব্যক্তিরা এক্সকাভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে কয়েক দিন আগে পার সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন। এতে পাকা সড়ক থেকে ১০ ফুট পরেই তারা সাত-আট ফিট করে গর্ত করেছেন। বৃষ্টি মৌসুমে ওই গর্ত পূরণ হতে সড়কের পাশের মাটি সরে যাবে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে রেললাইন ও সড়ক। অথচ এই রেললাইন ও সড়ক রক্ষায় ১২ বছর আগে জলাশয়ের পার দিয়ে গাইডওয়াল নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিছুদিন পরে গাইডওয়াল ধসে পড়ার উপক্রম হলে কাঠ পুঁতে গাইডওয়ালে ঠেকনা দেওয়া হয়। এ অবস্থায় এই জলাশয় খনন রেললাইন ও সড়কের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকির সৃষ্টি করবে।</p> <p>ভাঙ্গুড়া হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান প্রভাষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাটির ধাপে ধাপে স্তর থাকে। ওপরের স্তর কেটে ফেললে নিচের অংশ দুর্বল হয়ে পড়ে। শুনেছি কিছুদিনের মধ্যে ডাবল রেললাইনের কাজ শুরু হবে। এ অবস্থায় ওই জলাশয় থেকে মাটি কাটলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে রেললাইন ও সড়ক। কেননা ওই জলাশয়ের একটি অংশে আগে থেকেই ঝরনা নির্গত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।</p> <p>ইজারাদার সাবেক অধ্যক্ষ মো. শহিদুজ্জামান বলেন, রেল থেকে পার সংস্কারের অনুমতি নিয়ে এসে কাজ করা হচ্ছে। তবে ভেকু মেশিন চালক জলাশয়ের কোন অংশে কাজ করছে জানা নাই। তাকে শুধু পার সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। জলাশয়ের মাঝখানে কাটতে নিষেধ করা হয়েছে। এরপরও কাটলে বন্ধ করে দেওয়া হবে। রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে অবগত করা হয়েছে। তাঁরা এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।</p>