<p>গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের কাছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)’র দাবি করা আয়কর চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রেফারেন্স মামলা করতে হলে স্বীকৃত দাবির ২৫ শতাংশ জমা দিতে হবে ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে।</p> <p>বিচারপতি মো. খুরশীদ আলম সরকার ও বিচারপতি রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রায় দেন। আদালতে ড. ইউনুসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি। </p> <p>আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এনবিআর যে আয়কর দাবি করেছে, সে দাবিটি হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে হলে স্বীকৃত দাবির ২৫ শতাংশ জমা দিয়ে সেটি করতে হয়। আমরা এনবিআর’র কাছে এই ২৫ শতাংশ জমা দেওয়ার বিষয়ে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছিলাম। এনবিআর সেটি প্রত্যাখ্যান করেছিল। এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করলে আদালত রুল দিয়েছিলেন, সে রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের এনবিআরের দাবি করা আয়কর চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রেফারেন্স মামলা করতে হলে ২৫ শতাংশ দিতে হবে।’</p> <p>মোট দাবির ২৫ শতাংশ হিসাবে ড. ইউনূসকে ৫০ কোটি টাকা ড. ইউনূসকে দিতে হবে বলে জানান সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তাহমিনা পলি।</p> <p>এ আইন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘২০১১-১২ ও ২০১২-২০১৩ করবর্ষে ২৫০ কোটি টাকা আয়কর দাবি করে গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে নোটিশ দেয় এনবিআর। এ নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে প্রথমে কর কমিশনারের কাছে আপিল করেছিলেন ড. ইউনূস। কর কমিশনার তা খারিজ করলে আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করা হয়। ট্রাইব্যুনাল ড. ইউনূসের আপিল খারিজ করে দিলে তিনি হাইকোর্টে তা চ্যালেঞ্জ করতে আসেন।’</p> <p>আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৬০(১) ধারা অনুসারে আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে হলে স্বীকৃত দাবির (এনবিআর যে পরিমাণ আয়কর দাবি করছে গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের কাছে) ২৫ শতাংশ আয়কর জমা দিয়ে তা করতে হয়। এই ২৫ শতাংশ পরিমাণ টাকা তখন গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের ব্যাংক হিসাবে নেই উল্লেখ করে তার থেকে অব্যাহতি চেয়ে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই এনবিআরে আবেদন করেন ড. ইউনূস। আবেদনটি নাকচ হলে সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই বছর ২০ অক্টোবর অপারগতা প্রকাশ করে সেটিও নাকচ করে দেয় এনবিআর। পরে এনবিআরের এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ড. ইউনূস। </p> <p>প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এর ১৬০(১) ধারার বিধান নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুল জারি করেন। কেন এই বিধানটি আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। চূড়ান্ত শুনানির পর সে রুলটিই খারিজ করে দিলেন উচ্চ আদালত। </p> <p>রায়ে বলা হয়েছে, হাইকোর্টে রেফারেন্স মামলা করার ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী যে পরিমাণ আয়কর এনবিআরকে দিতে বলা হয়েছে। সে পরিমাণ আয়কর দিয়েই রেফারেন্স মামলা করতে হবে। এক্ষেত্রে অনুকম্পা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। </p>