<article> <p style="text-align: justify;">জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নাট্যকলা বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে বাড়ছে সেশনজট। চার বছরের স্নাতক ও এক বছরের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করতে সময় লাগছে ব্যাচভেদে সাড়ে সাত থেকে ৯ বছর। বিভাগের চেয়ারম্যানের দাবি, শিক্ষকসংকটে বাড়ছে সেশনজট। অনেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, শিক্ষকসংকট থাকলেও বিভাগ চাইলে নির্দিষ্ট সময়ে কোর্স শেষ করতে পারে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">হঠাৎ ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত, শিক্ষকদের সিন্ডিকেটের কারণে এই জট আরো বাড়ছে। আবার কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় কমবেশি নম্বর দেন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠার ১০ বছরেও বিভাগে নেই কোনো পূর্ণ অধ্যাপক। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ হওয়ার কথা, কিন্তু তা হয় না।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের (বিভাগের প্রথম ব্যাচ) স্নাতক ফলাফল ২০২১ সালে এবং স্নাতকোত্তর ফলাফল ২০২২ সালে প্রকাশিত হয়। পাঁচ বছরের দুটি ডিগ্রি নিতে ওই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সময় লেগেছে ৯ বছর। একইভাবে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ফলাফল প্রকাশিত হয় যথাক্রমে ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি এবং ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল। তাঁদের সময় লাগে আট বছর চার মাস।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে সময় লেগেছে সাড়ে সাত বছর। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হলেও এখনো ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক পরীক্ষা গত বছরের ২১ ডিসেম্বর শেষ হলেও এখনো ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস চলছে। তাঁরা দেড় বছরের সেশনজটে রয়েছেন।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এ ছাড়া ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরাও প্রায় দেড় বছরের সেশনজটে রয়েছেন। তাঁরা তৃতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস করছেন। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরাও টানা এক বছরের সেশনজটে রয়েছেন। বর্তমানে তাঁরা দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা দিচ্ছেন। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস গত বছরের জানুয়ারিতে শুরু হলেও শেষ হয়নি প্রথম বর্ষ। তাঁদের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা চলছে। সর্বশেষ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস গত বছরের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়। এ বছরের ৭ মার্চ স্নাতক প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রগ্রামের কারণে একটি পরীক্ষা পিছিয়েছে বলে বিভাগ জানিয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">শিক্ষার্থীরা জানান, বিভাগের প্রথম দিকের ব্যাচগুলোতে সেশনজট বেশি ছিল। অনার্স শেষ করতেই আট বছর পার হয়ে যেত। তবে এখন জটিলতা কমে এলেও শেষ হয়ে যায়নি। প্রতি ব্যাচের জট রয়েছে। এ ছাড়া অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন পেলেও এই বিভাগের কেউ সমাবর্তন পাননি। বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জুয়েল রানা (ছদ্মনাম) বলেন, বিভাগে অনেক সমস্যা রয়েছে। বিভাগের অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীকে অপছন্দের কারণে কম নম্বর দেন। এ ছাড়া বিভাগের চার শিক্ষকের একটি সিন্ডিকেট আছে। তাঁদের বিরোধী শিক্ষার্থীদের নম্বর কম দেওয়া ও হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। বিভাগের চেয়ারম্যান ক্যাথরিন পিউরিফিকেশন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নাট্যকলা বিভাগের মূল সমস্যা হলো শিক্ষকসংকট। তবে বর্তমানে সেশনজট কমে আসছে। আমরা আগামী বছরের কোর্সগুলো আরো কম সময়ের মধ্যে শেষ করতে সেভাবে পরিকল্পনা করছি।’</p> <p style="text-align: justify;">শিক্ষকের সিন্ডিকেট হয়ে পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া, নিয়মিত ক্লাস না নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগকে গুজব বলে মন্তব্য করে বিভাগের চেয়ারম্যান আরো বলেন, এসব অভিযোগ যাঁরা দিচ্ছেন, তাঁরা মূলত বিভাগের কল্যাণ চান না। নয়তো বিভাগে ছাত্র উপদেষ্টা থাকতে তাঁরা আগে সাংবাদিকদের কাছে যেতেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘নাট্যকলা বিভাগের সেশনজটসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে এরই মধ্যে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছি। মনে হচ্ছে, মূল সমস্যা হচ্ছে শিক্ষকস্বল্পতা। বিষয়টি সমাধানে আমরা নিয়মিত ইউজিসিতে চিঠি পাঠাচ্ছি। শিক্ষক চেয়ে বারবার চিঠি পাঠালেও তারা সার্কুলার ছাড়ছে না।’ </p> </article>