অজু সমাপ্ত করার পর এই দোয়া (কালেমা শাহাদাত) বলা মুস্তাহাব।
উচ্চারণ : ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহ। ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ’।
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই।
অজু সমাপ্ত করার পর এই দোয়া (কালেমা শাহাদাত) বলা মুস্তাহাব।
উচ্চারণ : ‘আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহ। ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহ’।
অর্থ : আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই।
উপকারিতা : অজুর শেষে এই দোয়া পাঠকারীর জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেওয়া হয়।
অজু শেষে পড়ার আরেকটি দোয়া : অজুর শেষে এই দোয়া পড়ার কথাও সহিহ হাদিসে এসেছে।
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মাজ আলনি মিনাত তাওয়্যাবিনা ওয়াজ আলনি মিনাল মুতাত্বহহিরিন। ’
অর্থ : হে আল্লাহ, আমাকে আপনি তাওবাকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন, আমাকে পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন।
সম্পর্কিত খবর
তাওহিদ বা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস স্থাপন করা প্রত্যেক মুসলমানের অপরিহার্য কর্তব্য। ইসলামের মূল ও মৌলিক স্তম্ভ কালেমার সারমর্ম হচ্ছে তাওহিদ বা একত্ববাদ। ইসলাম মানুষকে সর্বপ্রথম তাওহিদের প্রতি আহবান জানায়। মুমিনের জীবনধারা নিয়ন্ত্রিত হয় একত্ববাদের শিক্ষার আলোকে।
মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও আধ্যাত্মিক জীবন থেকে তার সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবন পর্যন্ত সর্বত্র গড়ে উঠে এক পূর্ণ সাযুজ্য।
পবিত্র কোরআনে বিবেকসম্মত ও বৈজ্ঞানিক দলিলাদির পর্যালোচনা করে আল্লাহর একত্ববাদের প্রমাণ পেশ করা হয়েছে। এ ছাড়া আছে প্রকৃতির দলিল। আল্লাহ একত্ববাদের কয়েকটি প্রমাণ নিম্নরূপ :
অনুভবে আল্লাহর প্রমাণ : মানুষের অন্তর আল্লাহপ্রবণ।
নিয়ম-শৃঙ্খলাভিত্তিক প্রমাণ : এ বিশাল সীমাহীন বিশ্বলোক এবং তার অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ব্যবস্থা এক বিস্ময়কর ব্যাপার। রাত-দিনের বিবর্তন, প্রতিদিন একই নিয়মে সূর্য উঠা, সূর্য অস্তমিত হওয়া—জগতের সব কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও সিস্টেমের অধীনে চলাচল করা কোনো মহাশক্তিধরের শৃঙ্খলের প্রমাণ বহন করে।
ভারসাম্য ও সুসংবদ্ধতার প্রমাণ : প্রাণী ও জীবজগতে জন্তু-জানোয়ার ও উদ্ভিদের ভারসাম্যতা ও সুসংবদ্ধতা আল্লাহর একত্ব প্রমাণ করছে। কোরআনে পাকের বহু স্থানে আল্লাহর একত্বের প্রমাণ পেশ করতে গিয়ে বলা হয়েছে, ‘নভোমণ্ডলে ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করে। তিনি শক্তিধর, প্রজ্ঞাময়। তিনি জীবন দান করেন ও মৃত্যু ঘটান। তিনি সব কিছু করতে সক্ষম। তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত।’ (সুরা : হাদিদ, আয়াত : ১-৩)
দুই স্রষ্টা থাকলে যে অসুবিধা হতো
যদি তর্কের খাতিরে এ কথা মেনে নেওয়া হয় যে একাধিক সৃষ্টিকর্তা আছেন, তাহলে এ বিষয়টিও মেনে নিতে হবে যে তাদের সবাই নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী। তারা প্রত্যেকেই স্বীয় ইচ্ছা কার্যকর করতে পারেন। এ অবস্থায় তাদের একজন যদি সূর্যকে পূর্ব দিক থেকে উদিত করেন, অন্যজন তা না চাইলে একই সময়ে সূর্যকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত করবেন। একজন যদি দিনের পর রাতের আবর্তন কার্যকরী করেন, অন্য একজন ইচ্ছে করলে চিরকালের জন্য দিন করেই রাখতে পারেন। একজন যদি বর্ষাকালের সূচনা করেন, অন্যজন একই সময়ে বসন্তকালের সূচনা করতে পারেন। একজন যদি নারীর গর্ভে সন্তান দান করেন অন্যজন পুরুষের গর্ভেও ইচ্ছে করলে সন্তান দান করতে পারেন। সুতরাং এ ক্ষেত্রে এটি সুসপষ্ট যে একাধিক সৃষ্টিকর্তা বিদ্যমান থাকলে নিখিল বিশ্বে শৃঙ্খলার পরিবর্তে বিশৃঙ্খলাই সৃষ্টি হবে, পরিণামে এ বিশ্বজগতের অস্তিত্বই হুমকির সম্মুখীন হবে। মহান আল্লাহ এ বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করেই পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘যদি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে আল্লাহ ছাড়া অন্য উপাস্য থাকত, তাহলে উভয়ের ধ্বংস সাধিত হতো। অতএব তারা যা বলে, তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ পবিত্র।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ২২)
মানুষ তার চারপাশে বিরাজমান বিশ্বজগতের দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখতে পায় যে সৃষ্টির আদি থেকেই নিখিল বিশ্বের সব কিছু একই নিয়মে চলে আসছে। যেমন—সূর্য অনাদিকাল থেকে একই নিয়মে উদিত হচ্ছে এবং অস্ত যাচ্ছে। দিনের পর রাতের আগমন একই নিয়মে হচ্ছে। অন্য কথায় কোনো ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম ঘটছে না। সৃষ্টিজগতের নিয়মের রাজত্বে কোথাও কোনো অনিয়ম নেই, নেই কোনো বিশৃঙ্খলা। এ নিয়মের ব্যাঘাত ঘটানোর ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া আর কারো নেই।
আবার যদি যুক্তির খাতিরে এ কথা বলা হয় যে একাধিক সৃষ্টিকর্তা আছেন, তবে তাঁদের কেউ সর্বগুণে গুণান্বিত নন। প্রত্যেকেই বিশেষ একটি গুণের অধিকারী। অন্য কথায় একজনের যে গুণ আছে অন্যজনের তা নেই। যেমন যিনি সৃষ্টি করেন, তাঁর ধ্বংস করার ক্ষমতা নেই। আবার যিনি ধ্বংস করতে জানেন তাঁর সৃষ্টি করার ক্ষমতা নেই। যিনি লালন-পালন করেন, তাঁর সৃষ্টি বা ধ্বংসের কোনোটারই ক্ষমতা নেই। বস্তুত এ ধরনের খণ্ডিত ক্ষমতাধর কোনো সত্তা কখনো নিখিল বিশ্বের স্রষ্টা হতে পারে না। এ বিষয়টি থেকে সুস্পষ্ট ত্রুটিপূর্ণ কোনো সত্তা স্রষ্টা হতেই পারে না। বস্তুত আল্লাহর অস্তিত্ব স্বতঃস্ফূর্ত। এতে কোনো রূপ অস্পষ্টতার স্থান নেই।
মহান আল্লাহ তাঁর সত্তায় ও গুণাবলিতে একক অদ্বিতীয়। তাঁর সঙ্গে কাউকে তুলনা করা যায় না। তাঁর একচ্ছত্র আধিপত্য আসমান-জমিনে, সাগর-ভূধরে, প্রতিটি সৃষ্টিলোকে। তাঁর একচ্ছত্র শক্তিতে কারো অধিকার নেই। কর্মে, গুণে, মর্যাদায় তথা সর্ব বিষয়ে তিনি অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়।
তাই তাওহিদ বা একত্ববাদের শাশ্বত বাণী—‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই।’ আর এটাই তাওহিদের মূল বিষয়।
আজ রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ শাবান ১৪৪৬
ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি নিম্নরূপ—
জোহরের সময় শুরু ১২টা ১৬ মিনিট।
আসরের সময় শুরু - ৪টা ২০ মিনিট।
মাগরিব- ৬টা ০২ মিনিট।
এশার সময় শুরু - ৭টা ১৬ মিনিট।
আগামীকাল ফজর শুরু - ৫টা ১৩ মিনিট।
আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত ৫টা ৫৭ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ২৮ মিনিটে।
সূত্র : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।
প্রশ্ন : আমি যদি মাগরিব বা এশার নামাজের সময় মসজিদে গিয়ে দেখি যে নামাজ শেষ হয়ে গেছে, তাহলে কি নামাজের কিরাত জোরে পড়ব, নাকি আস্তে পড়ব। উল্লেখ্য, আমি যখন বাসায় একাকী এসব নামাজ পড়ি, কিরাত জোরে পড়ি, যা অন্য রুম থেকে শোনা যায়। এভাবে নামাজ পড়লে শুদ্ধ হবে?
-হুমায়ূন, নারায়ণগঞ্জ
উত্তর : জামাতে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে যেসব নামাজে কিরাত জোরে পড়া হয়, সেই নামাজগুলো একাকী পড়ার সময় কিরাত আস্তে ও জোরে, উভয় পদ্ধতিতেই পড়া যায়। তবে অধিক জোরে না পড়ে স্বাভাবিক আওয়াজে পড়বে।
আর ওই নামাজ ওয়াক্তের পরে কাজা করার সময় কিরাত আস্তে পড়া আবশ্যক। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/২৫১)
সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা।
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দ্রুত উন্নত হচ্ছে প্রযুক্তি। খুলছে নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার। একসময় যেসব বিষয় মানুষের কাছে ছিল কেবল কল্পনা, এখন তা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। একসময় মানুষের কাছে যা মনে হতো নিছক রূপকথা, এখন তার অনেকগুলোই মানুষের কাছে স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।
কোরআন-হাদিসে বর্ণিত আল্লাহর সাহায্যে সংঘটিত হওয়া নবী-রাসুলদের মুজিজাগুলোও ঠিক এ রকম। মহান আল্লাহ বিভিন্ন সময় তাঁর মনোনীত বান্দাদের সাহায্য করতে বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনা সংঘটিত করেছেন, যা সে যুগের মানুষের কাছে অকল্পনীয় ছিল। যারা ঈমানদার ছিল, এসব ঘটনা তাদের ঈমান আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল, আর যারা ছিল বেঈমান, তারা মহান আল্লাহর এসব কুদরতের নিদর্শনকে জাদুটোনা কিংবা অন্য কোনো তকমা দিয়ে হেয় করার চেষ্টা করেছিল।
আর যেসব তথাকথিত জ্ঞানী পরবর্তী সময়ে এসেছে, তারা তো এসব ঘটনাকে নিছক রূপকথা বৈ কিছুই মনে করত না। অথচ মহান আল্লাহ পৃথিবীব্যাপী প্রযুক্তিগত উত্কর্ষ দান করে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন যে এখন একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায় যে মহান আল্লাহর বাণীগুলো কতটা নিখুঁত ছিল! কোরআন কত সত্য কিতাব, যা দেড় হাজার বছর আগে পৃথিবীর শুরু থেকে ঘটে যাওয়া আল্লাহর কুদরতের নিদর্শনগুলো সম্পর্কে আমাদের জানিয়ে গেছেন। অথচ আমরা জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে কোরআনের সেই বাণীগুলোর মর্মই বুঝতে পারিনি। তারই একটি ক্ষুদ্র উদাহরণ বর্তমান রোবটিক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং ও সুপারসনিক ফ্লাইট প্রযুক্তি।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর সুলাইমানের জন্য আমি বাতাসকে অনুগত করে দিয়েছিলাম, যা সকালে এক মাসের পথ এবং সন্ধ্যায় এক মাসের পথ অতিক্রম করত। আর আমি তার জন্য গলিত তামার প্রস্রবণ প্রবাহিত করিয়েছিলাম। আর কতিপয় জিন তার রবের অনুমতিক্রমে তার সামনে কাজ করত। তাদের মধ্যে যে আমার নির্দেশ থেকে বিচ্যুত হয়, তাকে আমি জ্বলন্ত আগুনের আজাব আস্বাদন করাব। তারা তৈরি করত সুলাইমানের ইচ্ছানুযায়ী তার জন্য প্রাসাদ, ভাস্কর্য, সুবিশাল হাউসের মতো বড় পাত্র ও স্থির হাঁড়ি।
পবিত্র কোরআনের এই আয়াতে মহান আল্লাহ সুলাইমান (আ.)-কে দেওয়া কয়েকটি মুজিজার কথা উল্লেখ করেছেন। যার প্রতিটিই একসময়ের মানুষের কাছে রূপকথার মতো মনে হলেও বর্তমান প্রযুক্তির যুগে মহান আল্লাহ এটা মানুষের জন্য সম্ভব করে দিয়েছেন। যা কোনো ধরনের দৃশ্যমান মেশিন বা প্রযুক্তি ছাড়া তাঁর নবীর জন্য আরো বহুগুণ উন্নত পদ্ধতিতে সম্ভব করেছিলেন। উল্লিখিত এই আয়াতে বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত কয়েকটি উন্নত প্রযুক্তির ধারণা পাওয়া যায়। নিম্নে সেগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো—
সুপারসনিক ফ্লাইট
এই আয়াতের প্রথমাংশে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘আর সুলাইমানের জন্য আমি বাতাসকে অনুগত করে দিয়েছিলাম, যা সকালে এক মাসের পথ এবং সন্ধ্যায় এক মাসের পথ অতিক্রম করত।’ অর্থাৎ সুলাইমান (আ.) খুব দ্রুতগতিতে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সফর করতে পারতেন। বিমান আবিষ্কারের মাধ্যমে সুলাইমান (আ.)-এর এই মুজিজার মাহাত্ম্য মানুষের অনেক আগেই বুঝে এলেও তার নতুন প্রযুক্তি সুপারসনিক ফ্লাইট এখন তা আরো সহজে বুঝতে সাহায্য করছে।
গণমাধ্যমের তথ্যমতে, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বিশ্বের দ্রুততম বিমান তৈরি করেছে। সুপারসনিক বিমানের নাম এক্স-৫৯। এ বিমানে আট ঘণ্টার যাত্রায় সময় লাগবে মাত্র দেড় ঘণ্টা। খুব তাড়াতাড়িই নতুন প্রজন্মের এই বিমান বাজারে আসছে বলেই জানিয়েছে নাসা। সাধারণ বিমান বা ফাইটার জেটের গতি তো দূর, সুপারফাস্ট সুপারসনিক বিমান কনকর্ড টারবোজেটের গতিকেও হার মানাবে এটি। এ বিমানে করে নিউইয়র্ক থেকে লন্ডনে যাওয়া যাবে নিমেষেই। এই তথ্য আমাদের কিছুটা হলেও অনুমান করতে সাহায্য করে যে সুলাইমান (আ.) কিভাবে সকালে এক মাসের পথ আর সন্ধ্যায় এক মাসের পথ পাড়ি দিতেন।
লিকুইড থ্রিডি মেটাল প্রিন্টিং
আয়াতে উল্লেখ আছে যে মহান আল্লাহ সুলাইমান (আ.)-এর জন্য গলিত তামার ঝরনা প্রবাহিত করেছিলেন, যা দিয়ে তিনি বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস তৈরি করতেন। বর্তমান যুগেও তামার ব্যবহার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, বৈদ্যুতিক তার থেকে শুরু করে প্রযুক্তির বহু খাতে ব্যাপকভাবে রয়েছে। তবে বর্তমান যুগে এতে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি যোগ করে একে আরো গতিশীল করার চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে এমআইটির গবেষকরা একটি নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, যেখানে গলিত অ্যালুমিনিয়ামকে সূক্ষ্ম কাচের গুঁড়ার মধ্যে প্রবাহিত করে দ্রুত কঠিন বস্তু তৈরি করা যাচ্ছে। এই পদ্ধতিতে বড় আকারের বস্তু, যেমন—টেবিলের পা বা চেয়ারের ফ্রেম, মাত্র কয়েক মিনিটে তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। ভবিষ্যতে এর মাধ্যমে বড় আকারের ধাতব বস্তু দ্রুত তৈরি করে শিল্প খাতে নতুন বিপ্লব ঘটাবে এই প্রযুক্তি। (সূত্র : https://shorturl.at/DdD7k)
এআই রোবট
আয়াতে উল্লেখ আছে যে ‘আর কতিপয় জিন তার রবের অনুমতিক্রমে তার সামনে কাজ করত।’ বর্তমান যুগেও মহান আল্লাহ মানুষের মাথায় এমন বুদ্ধি দিয়েছেন যে মানুষ তাদের অনেক কঠিন কাজ এআই রোবটের মাধ্যমে খুব দ্রুত ও সহজে করিয়ে নিচ্ছে। এআইয়ের কাজকর্ম দেখলে মনে হয় যে তাকে হুকুম করলে সে অনেকটা জিনের মতোই কাজ করছে। গত বছর সিএনএনে ইলন মাস্কের একটি ভবিষ্যদ্বাণী প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে তিনি বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্থান চাকরিগুলোকে ‘ঐচ্ছিক’ করে তুলবে, কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রোবটগুলো বেশির ভাগ পরিষেবা প্রদান করবে। (সূত্র : https://shorturl.at/XLn9Q)
অ্যাডভান্স থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি
আয়াতে উল্লেখ আছে যে ‘তারা তৈরি করত সুলাইমানের ইচ্ছানুযায়ী তার জন্য প্রাসাদ, ভাস্কর্য, সুবিশাল হাউসের মতো বড় পাত্র ও স্থির হাঁড়ি।’
বর্তমানে এআই, মেশিন লার্নিং ও অ্যাডভান্স থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তির সাহায্যে এ রকম কাজগুলো খুব দ্রুত ও সহজে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিশ্বের কয়েকটি দেশে থ্রিডি প্রিন্টেড মসজিদ ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মিত হয়েছে, যা কয়েক হাজার বছর আগে সুলাইমান (আ.)-এর জিনদের দ্বারা তৈরি স্থাপনার কথা মনে করিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, কারখানাগুলোতে অটোমেটিক মেশিনে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় বহু পণ্য তৈরি করা হচ্ছে। একসঙ্গে অনেক মানুষের রান্না করার জন্য এখন বড় বড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল কুকার আবিষ্কৃত হয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে একসঙ্গে বহু মানুষের জন্য রান্না করা যায়।
বর্তমান যুগের এই প্রযুক্তিগুলোকে কোরআনের আয়নায় দেখলে মহান আল্লাহর সেই বাণীটি হৃদয়ে উঁকি দেয়, ‘অতএব, তোমরা তোমাদের রবের কোন কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবে?’ (সুরা : আর রহমান, আয়াত : ১৩)
উল্লেখ্য, কোরআনের কোনো তথ্য বিজ্ঞানের আলোকে না বোঝা গেলে বুঝতে হবে, বিজ্ঞান এখনো সে বিষয়ে সঠিক জায়গা পর্যন্ত আসতে পারেনি, তবে কোরআন চির উন্নত ও চির আধুনিক। মুমিন তাঁর রবের সব বাণী কোনো যুক্তি ছাড়াই মেনে নেবে।
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর পবিত্র কোরআন বোঝা ও আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।