<p style="text-align:justify">কিয়ামতের আগে ঘরে ঘরে দেশে দেশে পৌঁছে যাবে ইসলাম—এ বিষয়ে বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। মিকদাদ (রা.) বলেন, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন যে পৃথিবীতে এমন কোনো মাটির ঘর বা পশমের ঘর (তাঁবু) বাকি থাকবে না, যেখানে আল্লাহ ইসলামের বাণী পৌঁছে দেবেন না। সম্মানিত ব্যক্তির ঘরে সম্মানের সঙ্গে এবং অসম্মানিত ব্যক্তির ঘরে অসম্মানের সঙ্গে। আল্লাহ যাদের সম্মানিত করবেন, তাদের স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণের উপযুক্ত করে দেবেন। পক্ষান্তরে তিনি যাদের অসম্মানিত করবেন, তারা (করদানের মাধ্যমে) ইসলামের বশ্যতা স্বীকারে বাধ্য হবে।</p> <p style="text-align:justify">রাবি মিকদাদ (রা.) বলেন, ‘(এ কথা শুনে আমি বললাম) তখন তো তাহলে গোটা দ্বিন আল্লাহর হয়ে যাবে।’ (অর্থাৎ সব দ্বিনের ওপর ইসলাম বিজয়ী হবে)। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২৩৮৬৫; মুসতাদরাক হাকেম, হাদিস : ৮৩২৪)</p> <p style="text-align:justify">উল্লিখিত হাদিস ইসলামের বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক বিজয়ের ইঙ্গিত প্রদান করে এবং এটিকে পবিত্র কোরআনের সুরা সফ-এর ৯ নম্বর আয়াতের ব্যাখ্যা হিসেবে অনেক হাদিস বিশারদ মন্তব্য করেছেন। (মিরআত ১/৬৮)</p> <p style="text-align:justify">মহান আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি তাঁর রাসুল (মুহাম্মদ)-কে প্রেরণ করেছেন পথনির্দেশ ও সত্য দ্বিনসহকারে। যাতে তিনি একে সব দ্বিনের ওপর বিজয়ী করে দেন। যদিও অংশীবাদীরা এটা পছন্দ করে না।’ (সুরা : সফ, আয়াত : ৯)</p> <p style="text-align:justify">অনেকেই বলে, এই আয়াতের মর্মার্থ রাসুলুল্লাহ (সা.), খুলাফায়ে রাশিদিন বা পরবর্তী নেককার খলিফাদের আমলে বাস্তবায়িত হয়ে গেছে। কিন্তু প্রকৃত অবস্থা তা নয়। বরং তাঁদের মাধ্যমে ওই ভবিষ্যদ্বাণীর কিয়দংশ বাস্তবায়িত হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন যুগে আল্লাহর সৎকর্মশীল মুজাহিদ বান্দাদের মাধ্যমে ওই ওয়াদা বাস্তবায়িত হতে থাকবে এবং একসময় ইমাম মাহদি ও ঈসা (আ.)-এর আগমনের পরে বিশ্বব্যাপী ইসলামী শাসন কায়েমের মাধ্যমে ওই ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণভাবে কার্যকর হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪২৮৪)।</p> <p style="text-align:justify">অন্য হাদিসে ইসলামের রাজনৈতিক বিজয়ের কালানুক্রমিক বর্ণনা দিয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে (১) নবুয়ত থাকবে যত দিন আল্লাহ ইচ্ছা করবেন। অতঃপর তা উঠিয়ে নেবেন (২) এরপরে নবুয়তের তরিকায় খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে। আল্লাহ যত দিন ইচ্ছা সেটা রেখে দেবেন। অতঃপর উঠিয়ে নিবেন (৩) অতঃপর অত্যাচারী রাজাদের আগমন ঘটবে। আল্লাহ যত দিন ইচ্ছা তাদের রেখে দেবেন। অতঃপর উঠিয়ে নেবেন (৪) অতঃপর জবরদখলকারী শাসকদের যুগ শুরু হবে। আল্লাহ যত দিন ইচ্ছা তাদের রেখে দেবেন। অতঃপর উঠিয়ে নেবেন (৫) এরপর নবুয়তের তরিকায় পুনরায় খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে। এই পর্যন্ত বলে আল্লাহর রাসুল (সা.) চুপ হয়ে গেলেন।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ১৮৪৩০)</p> <p style="text-align:justify">১১ হিজরিতে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মৃত্যুর পর নবুয়তের যুগ শেষ হয়। অতঃপর তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী খেলাফতে রাশেদাহর ৩০ বছর অতিক্রান্ত হয়। (তিরমিজি, হাদিস : ২২২৬)</p> <p style="text-align:justify">এরপরে উমাইয়া ও আব্বাসীয় ও তৎপরবর্তীদের মাধ্যমে অত্যাচারী রাজাদের যুগ শেষ হয়। অতঃপর বর্তমানে বিভিন্ন দেশে নামে-বেনামে জবরদখলকারী শাসকদের যুগ চলছে। গণতন্ত্রের নামে দলীয় স্বৈরাচার ও নেতৃত্বের লড়াই এখন ঘরে ঘরে।</p>