‘স্যার, ওরা তো খুব ছোট। তাই আমি সবসময় চেষ্টা করি, যেন ওরা বেশি ব্যথা না পায়। আমি তো ওদের শিক্ষক, ওরা ব্যথা পেয়ে কান্নাকাটি করলে আমার খুব কষ্ট লাগে।’ ভাষ্যটি রাঙ্গুনিয়ার একটি কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক নাছির উদ্দিনের (৩৫)।
‘স্যার, ওরা তো খুব ছোট। তাই আমি সবসময় চেষ্টা করি, যেন ওরা বেশি ব্যথা না পায়। আমি তো ওদের শিক্ষক, ওরা ব্যথা পেয়ে কান্নাকাটি করলে আমার খুব কষ্ট লাগে।’ ভাষ্যটি রাঙ্গুনিয়ার একটি কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক নাছির উদ্দিনের (৩৫)।
নিয়মিত অগণিত শিশুকে তার লালসার শিকারে পরিণত করলেও গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার শিশুদের প্রতি এমনই সদয় হওয়ার কথা জানান তিনি।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আনোয়ার হোসেন তার ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাসে তুলে ধরেছেন এসব তথ্য।
তিনি লিখেছেন, ‘নাছিরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ফিরিস্তি শুনলে এ মায়াবাক্যাকে আপনার কাছে পরিহাসই মনে হবে। মাদ্রাসার হোস্টেলের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্বে থাকার সুযোগ নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে অনেক শিশু ছাত্রকেই নিয়মিত বিছানার সঙ্গী করে সে।
ধর্ষণ করার জন্য মূলত দশ বছরের নিচে বয়সী ছেলেশিশুদেরকেই টার্গেট করত সে। কোন শিশু তার আহ্বানে সাড়া না দিলে তাকে বাধ্য করার জন্য কারণে অকারণে তাকে বেধড়ক মারধর করা হতো। যেহেতু সেখানে বেশিরভাগ শিশুই এতিম/দরিদ্র পরিবার থেকে আসা, শেষ পর্যন্ত তার পক্ষে হুজুরের প্রস্তাবে হ্যাঁ বলা ভিন্ন কোনো উপায় থাকতো না।
নির্যাতনের শিকার ওইসব শিশুর প্রতি সহমর্মি হবার পাশাপাশি নাছির আবার ভীষণ রকম নিয়মনিষ্ঠও। বিশৃঙ্খলা তার একদমই অপছন্দ। তাই তো তিনি একেবারে রুটিন করে দিয়েছেন, ওস্তাদের খেদমতে কবে কখন কোন শিশু হাজির হবে। যেন সেই গল্পের অত্যাচারী সিংহের মতো, যে কিনা বনের পশুদের সাথে চুক্তি করেছিল যে, প্রতিদিন একটি করে প্রাণী খাবার হিসেবে তার নিকট চলে আসলে সে আর যার তার ওপর অত্যাচার করবে না।
কিন্তু গ্রেফতারের পর রীতিমতো ভোল পালটে ফেলে সে। বারবার পুলিশের নিকট দাবি করতে থাকে, তিনি নাকি কাউকে জোর করে বিছানায় নিতেন না, ছাত্ররাই নাকি স্বেচ্ছায় তার সঙ্গ নিতে আসতো। যদিও গরিব ঘরের অসহায় ছেলেগুলোর সাথে দিনের পর দিন কোন কৌশলে, কি কি ঘটিয়েছে নরপশু নাছির সেটা বলেনি।
মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সকালে আদালতে পাঠানো হলে নাছির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে তার বিরুদ্ধে আনীত বলাৎকারের অভিযোগ স্বীকার করেছে। পাশাপাশি বলাৎকারের শিকার শিশুদের মধ্যে চারজনও আদালতে উপস্থিত হয়ে তাদের ওপর চালানো নির্মমতার বর্ণনা দেয়।
ইনশাআল্লাহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই হবে তার। অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ, আপনার শিশু ছেলে বা মেয়ে যাই হোক, তার নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনায় রাখুন। শিক্ষক হোক, আত্মীয় হোক কিংবা হোক প্রতিবেশী, আপনার সন্তানকে কারো অরক্ষিত শিকারে পরিণত হবার সুযোগ দিবেন না প্লিজ।
সম্পর্কিত খবর
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, দেশ ও দেশের বাহির থেকে ষড়যন্ত্র চলছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশ গঠনের কাজে সকলের আত্মনিয়োগ করতে হবে।
সোমবার (৩ মার্চ) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন ও অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহর সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখেন, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি প্রমুখ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক কর্ণফুলীর সম্পাদক আফছার উদ্দিন চৌধুরী, প্রবীণ সাংবাদিক মঈনুদ্দিন কাদেরি শওকত, সিরাজুল করিম মানিক, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহনেওয়াজ প্রমুখ।
এ সময় সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেন, জাতির বিবেক কলম সৈনিকেরা দেশপ্রেম উদ্বুদ্ধ হয়ে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইসলামের খেদমতে এগিয়ে যেতে হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে ‘জিন তাড়ানোর’ নামে নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে কবিরাজকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল ররবিবার রাতে উপজেলার চৌডালা ইউনিয়নের হরিণগণ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, হত্যার কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।
নিহত ব্যক্তি চৌডালা ইউনিয়নের সাহেবগ্রাম এলাকার মৃত জয়নাল মিস্ত্রির ছেলে মো. মতি তেলী (৪০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হরিণগণ এলাকার এক রাজমিস্ত্রির স্ত্রীর ওপর ‘জিন ভর’ করেছে বলে তার চিকিৎসা করতে ররিবার রাতে মতি তেলী কবিরাজ সেখানে যান। ‘জিন তাড়ানোর’ কথা বলে ওই রাজমিস্ত্রির স্ত্রীকে নিয়ে ঘরে ঢোকেন কবিরাজ। কিছুক্ষণ পর তাদের ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন রাজমিস্ত্রি ও তার ছেলে। এ সময় ক্ষুব্ধ হয়ে কবিরাজকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে ঘরের দরজা লাগিয়ে পালিয়ে যান বাবা-ছেলে।
এ ব্যাপারে গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইস উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় আনে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিদর্শন করেছেন।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
গাজীপুরের মাদক ব্যবসা ও সেবনের প্রতিবাদ করায় রাসেল ইসলাম (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে রিপন ও নুরনবী নামে দুই মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে কালিয়াকৈর উপজেলার বোর্ডমিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার ওই ব্যক্তি বাদী হয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রিপন ও নুরনবী নামের দুজন দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসা করে আসছিল।
কালিয়াকৈর উপপরিদর্শক পলি আক্তার বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শরীয়তপুরের সদর উপজেলার টুমচর এলাকায় কীর্তিনাশা নদী থেকে সোমবার দুপুরে আরো এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গণপিটুনির ঘটনায় এ নিয়ে মোট পাঁচজনের মৃত্যু হলো।
নিহত ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৪০-৪২ বছর বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত শুক্রবার রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার ডোমসার ইউনিয়নের তেঁতুলিয়া ও মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রাজারচর এলাকায় ডাকাতি করতে গিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় জনতার হাতে গণপিটুনির শিকার হন ডাকাতদলের সদস্যরা।
পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে কীর্তিনাশা নদীতে ভাসতে থাকা আরেকটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এখন পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে শুধু একজনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। তিনি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কানারগাঁও এলাকার এবাদুল বেপারী (৪৮)।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ডাকাতি করে পালানোর সময় গণপিটুনির ঘটনায় ৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা যায় উত্তেজিত জনতা একটি ট্রলারে কয়েকজন ডাকাতকে পেটাচ্ছে এবং পরে তাদের নদীতে ফেলে দিচ্ছে।