<p style=\"text-align:justify\">ঢাকার আশুলিয়ায় একটি হোটেলে কাচ্চি বিরিয়ানির মাংস নিয়ে সন্দেহ হলে ভুক্তভোগীর অভিযোগ ছাড়াই এক হোটেল মালিককে আটক করেছে পুলিশ।</p> <p style=\"text-align:justify\">পুলিশ বলছে, উপস্থিত লোকজনের ক্ষোভের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হোটেল মালিককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।</p> <p style=\"text-align:justify\">গ্রেপ্তার হোটেল মালিক ও সন্দেহভাজন ব্যক্তি রাজীবকে আজ সোমবার দুপুরে আশুলিয়া থানা থেকে আদালতে পাঠানো হয়।</p> <p style=\"text-align:justify\">এর আগে গতকাল রবিবার রাত ১২টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন আল্লাহর দান বিরিয়ানি হাউজ-৫ নামের দোকান থেকে রাজীবকে আটক করা হয়। রাজীবের বাড়ি বরিশালের মুলাদি উপজেলার নুনচর গ্রামে।</p> <p style=\"text-align:justify\">ভোক্তা রুপালী বেগম বলেন, 'গতকাল দুপুরে ছেলের জন্য এই দোকান থেকে কাচ্চি বিরিয়ানি কিনে বাসায় নিই। বিরিয়ানি ভালো না বলে ছেলে খেতে পারছিল না। এরপর দেখি মাংসের হাড় খুব চিকন। আমার সন্দেহ হয়, এটা গরুর মাংস কি না? পরে তাদের দোকানে যাই। শুধু জানতে চেয়েছি, এটা কি গরু নাকি খাসির মাংস। তারা বলেন, গরুর মাংস দিয়ে কাচ্চি রান্না করেন। এরপর চলে আসি। পরে স্থানীয় ওষুধের দোকানদার শরীফ ভাইয়ের কাছে বলেছিলাম। তিনি দেখে বলেন, তিনি বলতে পারছেন না।'</p> <p style=\"text-align:justify\">অপরজন আলমগীর হোসেন বলেন, 'তেহারি খাওয়ার সময় দেখি হাড় চিকন ও মাংস দেখতে অনেকটা কালো। তারা বলেন, বেশি রান্না করা হয়েছে বলে মাংস একটু কালো হয়েছে। পরে আমি না খেয়ে দাম দিয়ে চলে যাই।'</p> <p style=\"text-align:justify\">আল্লাহর দান বিরিয়ানি হাউজ দোকানের একটি শাখার মালিক সায়েদ হোসেন বিল্লাল বলেন, 'অন্য কিছুর মাংস বলে কিছু মানুষ চক্রান্ত করে আমাদের ফাঁসিয়েছে। শাখা-৫ দোকানটি এক বছর হলো। এখানে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি হয়। আশুলিয়ায় আমাদের সাতটি শাখা। এমনকি আমরা ভারতের কোনো মাংসও আনি না। কাঠগড়া বাজারে আলিম কসাইয়ের কাছ থেকে গরুর মাংস কিনি। কোনো দিন কোনো ধরনের অভিযোগ পাইনি। আমরা বলেছি, ল্যাবে পরীক্ষা করে যদি অন্য কিছু পাওয়া যায়, যে শাস্তি দেবেন আমরা তা-ই মাথা পেতে নেব। কিন্তু কিছু উৎসুক মানুষ ও স্থানীয় কিছু সাংবাদিক এই কাজ করেছে। অনেক অনুরোধ করেছি। মিটমাটের জন্য টাকা দাবি করে তারা। না দিলে তারা পুলিশ এনে দোকানের মালিক রাজীবকে আটক করতে বাধ্য করে।' </p> <p style=\"text-align:justify\">ভোক্তা রুপালী বেগম আরো বলেন, 'আমি কোথাও কোনো অভিযোগ করিনি। কোথাও এটাও বলিনি কুকুরের মাংস কি না বা কুকুরের মাংস নিয়ে সন্দেহও করিনি। আমি তো বলেছি এটি গরু বা খাসির মাংস কি না। যদি হয় তাহলে মাংসের হাড় কি এত চিকন হয়? তদন্ত না করে পুলিশের হাতে তাকে (রাজীব) এভাবে তুলে দেওয়া ঠিক হয়নি।'</p> <p style=\"text-align:justify\">কাঠগড়া বাজারের আলিম কসাই বলেন, 'প্রায় ১২ বছর ধরে আল্লাহর দান বিরিয়ানি হাউজে মাংস বিক্রি করে। এখন তারা প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কেজি গরুর মাংস কিনে। এক দিন মিস গেলে দুই দিনের মাংস এক দিনে নিয়ে যায়। ফ্রিজে রাখে। গত শুক্রবার (১৩ মে) দেশি ছোট গরু জবাই করেছিলাম। সেই মাংস নিয়েছে তারা। সেখানে হাড় চিকন হতে পারে। গরু জবাইয়ের ক্ষেত্রে আমাদের বাজার কমিটি প্রতিদিন যাচাই-বাছাই করে এখানে। অন্য কিছু করার কোনো সুযোগ নেই।'</p> <p style=\"text-align:justify\">ওষুধ দোকানি শরীফুল বলেন, 'রুপালী বেগম এসেছিলেন। কুকুরের মাংস কি না এ নিয়ে সন্দেহ করে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা কিভাবে করা যায় আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন। বলেছি, আমার জানা নেই। তখন দোকানে আরো দুই-তিনজন লোক ছিলেন। তারা শুনেছেন।'</p> <p style=\"text-align:justify\"><img alt=\"\" src=\"http://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/ckfinder/innerfiles/images/savar%202(1).jpg\" style=\"height:483px; width:800px\" />এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত রায় বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্তকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। আলামত হিসেবে মাংস জব্দ করে পরীক্ষার জন্য উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জনের কাছে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।</p> <p style=\"text-align:justify\">এসআই সুব্রত রায় বলেন, কোনো অভিযোগকারী না থাকায় রাজীবকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। যেহেতু বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নই, তাই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তীতে মামলা ও আইনগত প্রক্রিয়া নেওয়া হবে। যদি পরীক্ষায় গরুর মাংস হয়ে থাকে তাহলে আসামি অব্যাহতি পাবেন। তারা চাইলে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করার সুযোগ আছে।</p> <p style=\"text-align:justify\">সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, 'আশুলিয়া থানার এক কর্মকর্তা মাংস পরীক্ষার জন্য যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু এখনো আলামত হাতে পাইনি। আমাদের এখানে সম্ভব না হলে প্রয়োজনে ঢাকায় ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠাব।'</p>