<p>ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেছেন, মধুখালার পঞ্চপল্লীতে বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনাকে পুঁজি করে কোনো বিশেষ মহল আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর চেষ্টা চালায়। তারা চেয়েছে যাতে বৃহস্পতিবারের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত ব্যাহত হয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত ধৈর্য সহকারে পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছে। এ ঘটনায় দু’জন মারা গেছেন বলে ফেসবুকে গুজব ছড়ানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কেউ মারা যায়নি।</p> <p>মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার একথা বলেন তিনি। জেলা পুলিশের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।</p> <p>এ সময় পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার পর থেকে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো অবহেলা নাই। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নাই। সরকারের পক্ষ থেকেও নাই।</p> <p>তিনি বলেন, এ ঘটনায় কেউ নিহত হয়নি। এদের মধ্যে একজন ভ্যানচালক আহত হন। মধুখালী থানার ওসি তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তাকে হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি সুস্থ আছেন। আমরা তার সঙ্গে কথা বলেছি। এ ছাড়া মহাসড়কে নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে পুলিশের শটগানের গুলিতে একজন সামান্য আহত হন। তিনিও সুস্থ রয়েছেন।</p> <p>পুলিশ সুপার আরো বলেন, পঞ্চপল্লীর ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গৃহিত পদক্ষেপ সম্বন্ধে কোনোরকম সন্দেহ সংশয়ের অবকাশ ছিল না। তারপরেও যদি কারো কোনো সংশয় থাকতো, কারো কোনো প্রশ্ন থাকতো, তাহলে আমাদের কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারতো। সেটি না করে আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে ঢাকা-যশোর-মাগুরা রুটের যানবাহন অবরুদ্ধ করে সারাদিন নারী-শিশু ও পুরুষ যাত্রীদের অবর্ণনীয় কষ্ট দেওয়া হয়েছে। মধুখালী বাজার থেকে বাগাট পর্যন্ত ৬ থেকে ৭টি স্থানে আগুন জ্বালিয়ে, গাছের গুড়ি ফেলে তারা মহাসড়ক অবরুদ্ধ করে রাখে। পুলিশকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আহত করা হয়।</p> <p>সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মানবন্ধন ও রাস্তা অবরোধে আনুমানিক ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার মানুষ অংশ নেয়। বিভিন্ন ইউনিট হতে আগত ডিউটিরত পুলিশ শটগান ও গ্যাসগানের ফায়ার করে রাস্তা হতে বিক্ষোভকারী ও ব্যারিকেড সরিয়ে দেয়। বেলা অনুমান ৩টা ৩৫ মিনিটের দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। পুলিশের হস্তক্ষেপে রাস্তা হতে মানববন্ধনকারীরা সরে যায়। বর্তমানে ফরিদপুর হতে খুলনাগামী সকল যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। এ ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে উত্তেজিত জনতার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় ১২ জন পুলিশ সদস্যসহ কয়েকজন সাধারণ জনগণ আহত হয়।</p> <p>পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কক্ষে নির্মাণ শ্রমিকদের পিটিয়ে হতাহত করার ভিডিও প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, আমরাও সেই ভিডিও দেখেছি। মামলার আলামত হিসেবে সেটি রেকর্ড রাখা হয়েছে। ভিডিওতে সেদিন যাদের ওই কক্ষে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে তাদের প্রত্যেকের নাম পরিচয় আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। এদের মধ্যে উজ্জ্বল ও বিনয় নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।</p> <p>পুলিশ সুপার বলেন, পঞ্চপল্লীর ঘটনায় থানায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ পর্যন্ত এ ঘটনায় মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজন আদালতে প্রেরণের পর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের কাছে থেকে সেদিনের ঘটনায় যারা যারা জড়িত ছিল তাদের নামও পাওয়া গেছে।</p>