<p>নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় পরিকল্পিতভাবে ছুরিকাঘাতে মাশরুল নামে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় পলাতক আসামি আপন দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে র‌্যাব বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে তাদের দুর্গাপুর থানায় হস্তান্তর করলে বিকেলে আদালতে প্রেরণ করে থানা পুলিশ।</p> <p>এর আগে গত ২৩ মে দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নের একতা বাজার এলাকায় এ হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটে।</p> <p>গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- দুর্গাপুর উপজেলার পাথারিয়া গ্রামের ফিরোজ মিয়ার ছেলে আবু রায়হান (১৯) ও মো. নাইম (২১)। আর হত্যার শিকার যুবক মাসরুল একই গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে।</p> <p>উত্তরা র‌্যাব-১ এর সহযোগিতায় ময়মনসিংহ র‌্যাব -১৪ র‌্যাব এর (সিপিসি-২) কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার মো. আশরাফুল কবিরের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব -১৪ র‌্যাব এর কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার মো. আশরাফুল কবির বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।</p> <p>মামলার বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, নিহত মাশরুল ও আসামিরা একই গ্রামের একই জ্ঞাতিগোষ্ঠির। কয়েক মাস আগে পারিবারিক বিরোধ নিয়ে এলাকায় সালিশ বসে। সালিস দরবারের পর হতে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। এক পর্যায়ে মাশরুল ও তার ভাই মাসুমকে হত্যার পরিকল্পনায় ২৩ মে সন্ধ্যায় স্থানীয় একতা বাজারের কাছে ওঁৎ পেতে থাকে রায়হান, নাইম ও অন্যান্যরা। এসময় মাশরুল ও মাসুম বাজারের দিকে গেলে প্রথমে মাশরুলকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তিনি বাজারের একটি দোকানের সামনে গিয়ে পড়ে ছটফট করতে থাকেন। ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে মাসুমের পেটে-বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে হামলাকারী আবু রায়হান ও নাইমকে আটক করে। তবে সহযোগীরা জোরপূর্বক তাদেরকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। </p> <p>এদিকে গুরুতর আহত মাশরুল ও মাসুমকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাশরুলকে মৃত ঘোষণা করেন। আর মাসুমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। </p> <p>এ ঘটনার একদিন পর মাশরুলের বাবা চাঁন মিয়া বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এতে আবু রায়হান ও নাইমসহ ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫/৬ জনকে আসামি করা হয়৷ তবে ঘটনার পর আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহসহ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র‌্যাব। এক পর্যায়ে গত বুধবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে ওই দুই সহোদরকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। </p> <p>দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম চন্দ্র দেব জানান, গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ মামলার বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।</p>