কোচিং সেন্টারে শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে শিক্ষার্থী আহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
কোচিং সেন্টারে শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে শিক্ষার্থী আহত
ফরিদপুরে কোচিং সেন্টারে শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাতে শিক্ষার্থী আহত

ফরিদপুর শহরের একটি কোচিং সেন্টারের এক শিক্ষক ছুড়ে মারা ডাস্টারের আঘাতে এক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক চিরঞ্জিত ওই কোচিং সেন্টারের পরিচালক বলে জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী এলাকায় অগ্রদূত কোচিং সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষকের ডাস্টারের আঘাত লেগে অল্পের জন্য ওই ছাত্রের চোখ রক্ষা পেয়েছে।

 

ওই শিক্ষার্থী ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত মাহফিল মোস্তাক সামি ফরিদপুর পুলিশ লাইন্স স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শহরের ঝিলটুলী চৌরাঙ্গীর মোড় এলাকার অগ্রদূত কোচিং সেন্টারের পরিচালকের হাতে আগেও ছাত্র পেটানোর অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে পড়ানোর সময় শিক্ষার্থীরা গল্প করছিল, এক পর্যায়ে শিক্ষক চিরঞ্জিত শিক্ষার্থীদের ডাস্টার ছুড়ে মারেন।

এ সময় ওই শিক্ষার্থীর চোখের নিচে লেগে কেটে যায়। ওই শিক্ষার্থী ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছে।

আহত ছাত্রের বাবা শহরের টেপাখোলা এলাকার বাসিন্দা মোস্তাক আহমেদ বলেন, তার ছেলে আজ কোচিংয়ে আসলে পড়ার মাঝে ছাত্ররা গল্প করলে শিক্ষক উত্তেজিত হয়ে তার হাতে থাকা ডাস্টার ছাত্রদের উদ্দেশ্যে ছুড়ে মারেন। এ সময় আমার ছেলের চোখের নিচে আঘাত লাগে।

তবে হাসপাতালে কোচিং জানানো হয়েছে যে, সে বেঞ্চ থেকে পড়ে তার কেটে গেছে। সত্য বিষয়টা আমরা জানার পর সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি। 

অভিযোগের বিষয়ে সরেজমিনে এই কোচিং সেন্টারে গিয়ে শিক্ষককে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদউজ্জামান বলেন, আজ সন্ধ্যায় ছাত্রের পরিবার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে।

বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বিএনপি কার্যালয়ে ককটেল হামলা, আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
শেয়ার
বিএনপি কার্যালয়ে ককটেল হামলা, আ. লীগ নেতা গ্রেপ্তার
ছামিদুল ইসলাম।

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিএনপির কার্যালয়ে ককটেল হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের অভিযোগে করা মামলায় ছামিদুল ইসলাম (৫২) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পর উপজেলার বাহালগাছা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছামিদুল ইসলাম বহালগাছা গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে। তিনি উপজেলার চৌকিবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য।

 

আরো পড়ুন
রডমিস্ত্রীকে জবাই করে হত্যা, খুনিদের ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

রডমিস্ত্রিকে জবাই করে হত্যা, খুনিদের ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

 

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০২৩ সালের ৭ জুন সন্ধ্যায় ধুনট পৌর এলাকার পশ্চিম ভারনশাহী গ্রামে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা কর্মিসভা করতে থাকেন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে বিএনপির কর্মিসভায় হামলা চালায়। তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের পিটিয়ে আহত করে। হামলাকারীরা বিএনপির কার্যালয় ও কার্যালয়ে রক্ষিত চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে দেড় লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে।

 

এ ঘটনায় গত ২৬ জানুয়ারি উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশাদুল ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের ৭৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছামিদুল ইসলাম।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম বলেন, এ মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে।

মন্তব্য

রডমিস্ত্রিকে জবাই করে হত্যা, খুনিদের ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
শেয়ার
রডমিস্ত্রিকে জবাই করে হত্যা, খুনিদের ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
খুনিদের ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন। ছবি : কালের কণ্ঠ

টাঙ্গাইলে এক রডমিস্ত্রিকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় খুনিদের ফাঁসির দাবিতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া লাবু, টাঙ্গাইল জেলা রাজ ও রডমিস্ত্রি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদ মিয়া, নিহত ফুলচানের বাবা স্বন্দেশ মিয়া প্রমুখ। এ সময় দাইন্যা ইউনিয়নের এলাকাবাসী উপস্থিত ছিল।

জানা যায়, গত ৩০ জানুয়ারি রাতে সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের ছোট বিন্নাফৈর এলাকায় রডমিস্ত্রি ফুলচান মিয়া (১৮) হত্যার ঘটনা ঘটে। তিনি ওই এলাকার স্বন্দেশ মিয়ার ছেলে। 

নিহত ফুলচানের বাবা স্বন্দেশ মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে কী দোষ করেছিল যে তাকে নির্মমভাবে মেরে ফেলল। আমি এই হত্যার সঠিক বিচার চাই।

খুনিদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসির আওতায় আনতে হবে।’ 

ঘটনাটি এলাকায় বেশ আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এদিকে নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। 

টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীর আহম্মেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ নৃশংস হত্যা মামলায় সৌরভ এবং আজিজুল নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

আমাদের তদন্ত ও অভিযান চলমান আছে।’

মন্তব্য

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাসহ ৪২ জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাসহ ৪২ জন গ্রেপ্তার
ছবি : কালের কণ্ঠ

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন থানায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৪২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে করা মামলাসহ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।

রবিবার দুপুর ২টা থেকে আজ সোমবার দুপুর ২টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাহমুদা বেগম কালের কণ্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন । তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও সন্ত্রাসীবিরোধী আইনে এক বা একাধিক মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন ইপিজেড থানার আসামি মামনুর রশিদ মামুন (৩৬), তারিকুল ইসলাম (২৬), চকবাজার থানার আসামি মো. আশেকুল আলম আশিক (৩৮), মোহাম্মদ এরশাদ (৪৫), ডবলমুরিং মডেল থানার আসামি ইরাত শরীফ বিজয় (২৪), আব্দুল আজিম অপু (২৪), ইয়াছিন আরাফাত (৩৪), এস এম নাজমুল আলম শুভ (৩১), মো. আসরাফ উদ্দিন সাদমান (১৯), সাজেদা বেগম (৪৩), সদরঘাট থানার আসামি মো. ইশতিয়াক মুন্না (৩৫), মো. ইলিয়াছ (৫১), মো. মজনু (৫৩), রাজীব দে (৩৮), চান্দগাঁও থানার আসামি আদিত্য পাল (২৮), সাইদ ইমতিয়াজ সানি (৩০), আহমদ আলী (৫৪), খুলশী থানার আসামি মো. শাহারিয়ার শাওন (২৮), আব্দুল হান্নান (হিরা) (৫৩), মো. মাসুদ রানা (৪৬), মেহেদী হাসান (২৩), বন্দর থানার আসামি মো. ফরহাদ (২৮), শাহাদাত হোসেন রুমান(৩০), কোতোয়ালি থানার আসামি জামালখান ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ২ নং ইউনিটের প্রচার সম্পাদক মো. জহির উদ্দিন (৪৭), চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আবির সেন (৩০), চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্র লীগের উপ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক অনিক সেন গুপ্ত (৩০), চট্টগ্রাম স্টেশন রোড হকার্স লীগের সভাপতি মো. কবির (৪০),তানভীর রহমান নওশাদ (৩২), আলী আকবর (৪৭), রেজাউল করিম (৬১), মোহাম্মদ ফারুক (৫৫), মো. ইকবাল হোসেন (৩৪), পাহাড়তলী থানার আসামি মো. রাজু (৩০), বাকলিয়া থানার আাসামি আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নওয়াব আলী (৫৫), ১৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মো. সেলিম (৫৫), ১৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মো. ওবায়েদ (৩৪), মো. আলমগীর (৩৪), মো. হাসান (৩৫), কর্ণফুলী থানার আসামি চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ আলী (৩৯), পতেঙ্গা মডেল থানার মো. সোহাগ (৩৪) ও সাইফুল ইসলাম (৩০)।

মন্তব্য

বাদীই জানেন না তিনি মামলার বাদী

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
বাদীই জানেন না তিনি মামলার বাদী
বিএনপি নেতা নজরুল মাদবর। ছবি : সংগৃহীত

বাদী নিজেই জানেন না সে মামলার বাদী। চেনেন না আসামিকেও। গত ৫ আগস্টের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত-আহতদের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত কয়েকটি মামলার ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বাদীর কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নিয়ে দায়ের করা হচ্ছে মামলা।

ফলে প্রকৃত আসামিরা পার পেয়ে যাওয়ার শঙ্কা করা হচ্ছে। 

সম্প্রতিক নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাতেও অসংখ্য হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই দুই মামলার বাদীর অভিযোগ, নজরুল মাদবর নামের এক বিএনপি নেতা সরকারি সহায়তার কথা বলে সাদা কাগজে তাদের সই নেন।

পরে থানায় জমা দেওয়ার কথা বলে মামলা করেন।

মামলার নথি পর্যালোচনা করে জানা যায়, গত ২২ জুলাই আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ফতুল্লার ভুঁইগড় কাজীবাড়ি এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুর রহমান (৬০) নামের এক ভাঙারি ব্যবসায়ী মারা যান। পরে এ ঘটনায় গত ৮ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলার বাদী ছিলেন তার ছেলে ফয়সাল (৩৪)।

আর গত ৪ আগস্ট মাদরাসাছাত্র আবু তালহা (১৬) গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার ঘটনায় একইদিন অর্থাৎ গত ৮ সেপ্টেম্বর ফতুল্লা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের হয়। এই মামলার বাদী ছিলেন আহত তালহার বাবা এইচএম কামাল উদ্দিন (৪৫)। উভয় মামলাতেই ২২৭ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করা হয়।

এদিকে, দুই মামলারই বাদী নিজেদের দায়েরকৃত মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন বলে দাবি করেন এবং এর সঙ্গে নজরুল ইসলাম মাদবরকে দোষী করেন। অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম মাদবর ফতুল্লা থানা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি।

তিনি কুতুবপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন।

মামলার বাদী এইচএম কামাল উদ্দিন বলেন, আমার মামলা করার কোনো ইচ্ছে ছিল না। আমি মামলার বিষয়ে কিছুই জানি না। কিন্তু ওই নজু মাদবর আমার কাছে এসে বলেন, আপনার ছেলে যেহেতু গুরুতর আহত হয়েছে, এই বিষয়টা থানায় জানাবো। পরবর্তীতে অনেকেই আমাকে ফোন দিয়ে বলে আমি নাকি মামলা করেছি। কিন্তু আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। কয়জনের বিরুদ্ধে এবং কাকে আসামি করা হয়, তা আমি এখনো জানি না। পরবর্তীতে মামলা প্রত্যাহার করার বিষয়ে আমি থানায় যোগাযোগ করলে পুলিশ আমাকে জানায়, তদন্ত সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে এই মামলা বাদ করা হবে। তদন্ত শেষ করার আগেই মামলা প্রত্যাহার করা যাবে না।

হত্যা মামলার বাদী মো. ফয়সাল বলেন, আমার বাবা আন্দোলনে চলাকালীন সময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। তখন অনেকেই আমাকে মামলা করতে বলেছিল। কিন্তু আমি কোনো মামলা দায়ের করি নাই। তখন আমাদের এলাকার নজু মাদবর সরকারি সহায়তা, ত্রাণ হিসেবে আমাদের কিছু দিবেন। তখন তিনি আমার আইডি কার্ডের ফটোকপি আর একটা কাগজে আমার সই নেন। এরপর থেকেই আমি শুনে আসছি, আমি নাকি বাদী হয়ে মামলা করেছি। 

তিনি বলেন, মামলা প্রত্যাহার করে নিতে চাইলে পুলিশ আমাকে জানায়, যেহেতু তার বাবা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। সে কারণে এই ঘটনায় এমনিতেও মামলা দায়ের হতো।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আঙ্গকুর ভট্টাচার্য বলেন, আমি আব্দুর রহমান হত্যা মামলার তৃতীয় তদন্ত কর্মকর্তা। এর আগে দুজন এই মামলার তদন্ত কাজ করে। তার ছেলে ফয়সালকে না জানিয়েই এই মামলা দায়ের করা হয়েছে, এই ঘটনা আমি শুনেছি। তবে হত্যার ঘটনাটি সঠিক। তাই এই মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, তবে নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, আমরা সেক্ষেত্রে সতর্ক রয়েছি। এরই মধ্যে আমরা আব্দুর রহমানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছি। শিগগিরই এই মামলার চার্জশিট বিজ্ঞ আদালতে জমা দেওয়া হবে। যারা এই ঘটনায় জড়িত প্রমাণিত হবেন, শুধু তাদেরকেই অভিযুক্ত করে চার্জশিট প্রদান করা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম মাদবরকে একাধিক ফোন এবং খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।

ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নই। মামলা বাণিজ্যে আমাদের বিএনপির কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসন যেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আমরা সে সহযোগিতা প্রশাসনকে করবো।

ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, মামলা দায়ের হওয়ার পর যদি কোনো বাদী দাবি করেন তার অগোচরে মামলা দায়ের হয়েছে কিংবা মামলার বিষয়টি তিনি জানেন না, আমরা তা আমলে নিচ্ছি না। আমরা শুধু মামলার ঘটনা, এজাহারনামীয় আসামি এই বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখছি।

তিনি আরো বলেন, যদি ঘটনা সত্যি হয়ে থাকে এবং যারা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধে কোর্টে অভিযোগপত্র দায়ের করা হবে। পরে বাদী মামলা চালাবে কিনা তা কোর্ট দেখবে। আর মামলা বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত কারো বিরুদ্ধে থানায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ