রাজশাহী মহানগর বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় ছুরিকাঘাতে আহত রিকশাচালক গোলাম হোসেন রকি (৪৮) মারা গেছেন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি মারা যান। তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. শংকর কে বিশ্বাস জানান, রিকশাচালক গোলাম হোসেনের বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছিল।
এছাড়া তার মাথায় আঘাত ছিল। তাকে মারাত্মক আহত অবস্থায় রামেক হাসপাতালে আনা হয়েছিল। ঘটনার পর থেকেই তার জ্ঞান ফেরেনি। আজ সন্ধ্যার পর তিনি মারা গেছেন।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক হাসান বলেন, ‘সংঘর্ষে এ রকম কেউ আহত হয়েছিল বলে আমার জানা নেই। তিনি মারা গেছেন বলে শুনেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ৭ মার্চ সন্ধ্যায় নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
আগের দিন রাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতার ফ্ল্যাটে অভিযান এবং তার ভাইকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ান বিএনপির দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে ওই সংঘর্ষ। তখন ককটেল ফাটানো হয়, গুলিরও শব্দ শোনা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিকশাচালক গোলাম হোসেন ওই রাতে রিকশা রেখে হেঁটে ভাড়া বাসায় যাচ্ছিলেন। তখন একটি গ্রুপ তাকে আরেক গ্রুপের লোক ভেবে ছুরিকাঘাত করে।
পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নিহত গোলাম হোসেনের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার সাহেবপাড়ায়। রাজশাহী নগরীর দড়িখড়বোনা মহল্লায় তিনি স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন। শহরে রিকশা চালিয়ে তিনি সংসার চালাতেন।
রিকশাচালক গোলাম হোসেন আহত হওয়ার ঘটনায় দুইদিন পরে গত ৯ মার্চ তার স্ত্রী পরীবানু নয়জনকে আসামি করে নগরীব বোয়ালিয়া থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ সেটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেনি।
নিহতের স্ত্রী পরিবানুর দেওয়া লিখিত অভিযোগটি কালের কণ্ঠের হাতে এসে পৌঁছেছে। এতে তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় তার স্বামী গোলাম হোসেন রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসছিলেন। কিন্তু তাকে ছুরিকাঘাত আহত করা হয়। হামলার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন ৯ জন।
এ প্রসঙ্গে জানতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা ও সদস্য সচিব মামুনুর রশিদকে মোবাইলে ফোন করা হলে তারা ধরেননি।