এ মাসেই ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব।
শনিবার টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্কের (টিআরএনবি) আয়োজনে ইন্টারনেট ‘সেবার সমস্যা, সম্ভাবনা ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, ‘দেশে ইন্টারনেট সেবার মান নিকৃষ্ট এবং দামও বেশি।’ এ সময় ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইথ সর্বনিম্ন ১০ এমবিপিএস করার ঘোষণা দেয় আইএসপি অ্যাসোসিয়েশন।
বৈঠকে ইন্টারনেটের দাম ও সেবাসংক্রান্ত নানা সমস্যার তুলে ধরেন অংশীজনরা। ইন্টারনেট সেবার লাইসেন্স জটিলতা নিরসন, পরিচালন ব্যয় কমানো, অ্যাকটিভ শেয়ারিং ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান তারা। বৈঠকে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইডথ বাড়ানো ঘোষণা দেন।
আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘সরকারের যে উদ্দেশ্য বিশেষ করে ২০ এমবিপিএস, আসলে অদূর ভবিষ্যতে ২০ এমবিপিএসও সম্ভব হবে না, আরো বেশি সেবা আমরা দিতে চাই।
আর আজ থেকে ৫ এমবিপিএসের প্যাকেজটা আমরা রাখব না। এটা ১০ এমবিপিএস হবে।’
ইন্টারনেট সেবার মান বাড়াতে সংস্কারের কথা জানান বিটিআরসির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী। তিনি জানান, এত দিন ইন্টারনেট ব্যবসার জন্য রাজনৈতিক বিবেচনায় লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সের বদলে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে ব্যবসার সুযোগ দেওয়া হবে।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফিক্সড টেলিকমিউনিকেশনের একটা লাইসেন্স হবে। এই লাইসেন্সে আপনি কোথায় ইন্টারনেট দেবেন, থানায় দেবেন নাকি জেলায় দেবেন, এটা আপনার ওপর নির্ভর করবে। যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, অত বিনিয়োগ নেই, তাদের জন্য আমরা লাইসেন্সিংও বাতিল করে দিতে চাই। আপমরা চাই, সিম্পলি রেজিস্ট্রেশন করে, কল সেন্টার যে রকম হয়, যাতে যে কেউ এ ব্যবসায় চলে আসতে পারে।
’
বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা নিকৃষ্ট উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, ‘ইন্টারনেট যেন আর কোনো সরকার চাইলেই বন্ধ করতে না পারে সে জন্য এটিকে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে নাগরিক অধিকার হিসেবে।’
ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, ‘বাংলাদেশে যে ইন্টারনেট কোয়ালিটি, এটা পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট। এই নিকৃষ্ট পণ্য আপনি একটা মধ্য মানের ভ্যালুতে বিক্রি করেন। আপনি যদি এখানে কোয়ালিটি বাড়ান তাহলে বর্তমান বেঞ্চমার্কে এলে এটার দাম অনেক বেশি পড়ে। পৃথিবীর বহু দেশ এটাকে বেসিক হিউম্যান রাইটস হিসেবে ডিক্লেয়ার করেছে। আমরাও আমাদের সাইবার সিকিউরিটি অর্ডিন্যান্সে, যেটা এ মাসে পাস হবে, সেখানে ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছি।’
বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘আগামী ৫ থেকে ১০ বছর পর সরকার ইন্টারনেট সেবার মান কোথায় নিতে চায় তার পরিকল্পনা এখনই নিতে হবে।’