টাঙ্গাইলের কাঁসা ও পিতলের তৈরি তৈজসপত্রের চাহিদা একসময় বেশ ছিল। বিলুপ্তির পথে জেলার প্রসিদ্ধ এই শিল্পটি। একসময় দেশে-বিদেশে এর সুখ্যাতি ছড়িয়ে ছিল। স্থানীয় প্রয়োজন মিটিয়ে রপ্তানি হতো।
বর্তমানে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।
জেলার মগড়া, কাগমারী, নারান্দিয়া ও সাকরাইলসহ কয়েকটি গ্রামে কাঁসা-পিতল শিল্পীরা তৈরি করেন নানা দ্রব্যাদি। একসময় গ্রামগুলোয় শত শত পরিবার কাঁসা ও পিতল শিল্পী ছিলেন। দিনরাত কাঁসা পেটানোর টুং টাং শব্দে গ্রামগুলো মুখর থাকত।
তাঁরা অত্যন্ত নিপুণ কৌশলে নিরলস শ্রম দিয়ে তৈরি করে থাকেন থালা, বাটি, কলসি, গ্লাস, জগ, দনা, ঘটি, বোল, খুন্তি, বাটি, পুতুল, ঝুনঝুনিসহ নানা জিনিসপত্র।
আরো পড়ুন
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে কাজ না হওয়ায় মৃত্যুদণ্ড, তবুও কেন থামছে না ধর্ষণ
মগড়া ও দশকিয়া এলাকায় দেখা যায়, একসময় ১০৫/২০০টি পরিবার এবং কারখানায় পিতলের জিনিসপত্র তৈরি হতো। এখন এর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৫/২০টিতে। এখানে শুধু পিতলের গামলাই তৈরি হয়।
সুদেব, মহাদেব, রনজিৎ, অমূল্য, তপন, স্বপন, সুব্রত, তাপস কর্মকার এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। তবে মগড়া কাংস্যশিল্পের সুনাম ছিল এবং এখনো আছে। মগড়ায় পিতলের কাজের প্রাধান্য রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আধুনিক প্লাস্টিক, অ্যালুমিনিয়ামের ও মেলামাইনের তৈজসপত্রের যুগে এই শিল্পের চরম দুঃসময় চলছে। ফলে এতিহ্যবাহী এই লোকশিল্পটি আজ বিলুপ্তির পথে।
কাঁসার তৈরি জিনিসপত্রের দাম বর্তমানে এত বেশি যে, সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।
আরো পড়ুন
সিদ্ধিরগঞ্জের আগুনের ঘটনায় আরো একজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৩
স্কুল শিক্ষিকা ও নারী সংগঠক সিমা কর্মকার কালের কণ্ঠকে বলেন, মগড়ার ঐতিহ্যের শিল্পটি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। এর মূল কারণ শিল্পীদের ন্যায্য মজুরি না পাওয়া এবং প্রয়োজনীয় পুঁজি না থাকা।
বিসিক টাঙ্গাইলের সহকারী মহাব্যবস্থাপক শাহনাস বেগম বলেন, সময়ের পরিবর্তনে এই শিল্প বিলুপ্তির পথে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং শিল্পকে বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুলাহ আল মামুন বলেন, এই পেশার সঙ্গে জড়িতদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।