<p>ইসলাম সবক্ষেত্রে মধ্যাবস্থার প্রতি লক্ষ রেখেছে। আকিদা-বিশ্বাস, ইবাদত-বন্দেগি, আখলাক-চরিত্র, আচার-ব্যবহার, আয়-ব্যয়, লেনদেন সব কিছুতেই ইসলামের এ বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। সুতরাং ইসলামের প্রকৃত অনুসারী তার জীবনের সব ক্ষেত্রে হবে মধ্যপন্থারই প্রতিকৃতি। সে জন্য ঈমানদারকে প্রথমেই ইসলামের প্রতিটি বিষয় গভীরভাবে উপলব্ধি করতে হবে। কোন বিষয়ে ইসলামের কী নির্দেশনা, সেদিকে লক্ষ রেখে পথ চলতে হবে, যাতে কোনো ক্ষেত্রেই বাড়াবাড়ি বা শিথিলতা প্রদর্শিত না হয়।</p> <p>পবিত্র কোরআনে আসমানি জ্ঞানশূন্য মানুষকে অন্ধের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। কোরআনের ভাষ্যমতে, এরাই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, মতান্ধ ও সত্যবিমুখ। অন্যদিকে ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা ও ব্যবহার না জেনে নিজের স্বল্প জ্ঞানের ওপর গোঁড়ামি করাকে ধর্মান্ধতা বলা হয়।</p> <p>‘ধর্মান্ধ’ শব্দটি প্রকৃত মুসলিমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। বাংলা একাডেমির ভাষ্যমতে, ধর্মান্ধ শব্দের অর্থ হলো, নিজ ধর্মে অন্ধের মতো বিশ্বাসী ও পরধর্মবিদ্বেষী। খাঁটি মুসলমান অন্যের ধর্মে বিদ্বেষী হয় না। ইসলামের রাষ্ট্রনীতি হলো আন্তর্ধর্মীয় সম্প্রীতি। এ বিষয়ে কোরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতিসহ মদিনা সনদের ঐতিহাসিক দলিল আছে। ইসলামের খলিফাদের রাষ্ট্রীয় নীতি ছিল ধর্মীয় সহাবস্থান।</p> <p>অন্যদিকে ধর্মভীরু হলেন, যাঁরা যথাযথ ধর্ম অনুসরণ করেন। বাংলা একাডেমি লিখেছে, ধর্মভীরু হলেন যার ধর্মে ভয় আছে, ধর্মপালনে সতর্ক, ধর্মপালন না করলে শাস্তি ভোগ করতে হবে—এরূপ বিশ্বাসী। এমন বিশ্বাসী মানুষকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানও বলা হয়। ধর্মকে যে প্রাণস্বরূপ মনে করে, ধর্মে একান্ত অনুরক্ত, পরম ধার্মিক—সে-ই ধর্মপ্রাণ।</p>