<p>চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার হাতিমারা কৃত্রিম জলাশয় ও চুনতি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য সুরক্ষায় সবুজ প্রহরী (গ্রিন গার্ডস) গঠনসহ সমন্বিত পরিকল্পনা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, এ বিষয়ে জনসম্পৃক্ত ও বিজ্ঞানভিত্তিক সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে স্বচ্ছ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। ওই বনাঞ্চলে এরই মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর ন্যায্য বিশ্লেষণ ও দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।</p> <p>গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ দাবি তুলে ধরা হয়। ধরার সহ-আহ্বায়ক শারমীন মুরশিদের সভাপতিত্বে এতে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ‘চুনতি রক্ষায় আমরা’র সমন্বয়ক সানজিদা রহমান। সঞ্চালনায় ছিলেন ধরার সদস্যসচিব শরীফ জামিল।</p> <p>সানজিদা রহমান বলেন, বাংলাদেশের জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষায় চুনতি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর পরও প্রয়োজনের বেশি পাহাড় কেটে রেললাইন স্থাপন, বনের ভেতর অবৈধ বসতি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। হাজারো একর জমি বন্দোবস্ত ও বেআইনি কেনাবেচা, পাহাড় কাটা, প্রাকৃতিক বন ও বন্য প্রাণী নির্বিচারে নিধন করা হচ্ছে। অননুমোদিত ইটভাটায় মাটি সরবরাহ ও সামাজিক বনায়নসহ বিভিন্ন প্রকল্পের নামে সেখানে প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এমনকি হাতির চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও হাতি মেরে ফেলার মতো ঘটনা ঘটেছে। বনের বিশাল এলাকাজুড়ে বাঁধ দিয়ে কৃত্রিম জলাশয় তৈরির মতো গর্হিত কাজ চুনতিতে ঘটেছে। সরেজমিনে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত বনাঞ্চলের দৃশ্য দেখা গেছে। তাই ওই অভয়ারণ্য রক্ষায় দ্রুততম সময়ের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।</p> <p>শারমীন মুরশিদ বলেন, পরিবেশ রক্ষার জন্য গ্রিন গার্ডস বা সবুজ প্রহরী তৈরি করতে হবে। প্রশাসন খবরের কাগজ পড়ে কোনো পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া কিছু করে ফেলবে, পরবর্তীতে কী হতে পারে চিন্তাও করবে না, এভাবে চলতে পারে না। তাই নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ করে সবুজ প্রহরী গঠনের উদ্যোগ নিতে হবে।</p> <p>শরীফ জামিল বলেন, ‘আমি মনে করি না, চুনতির অবক্ষয় কারো অজানা নয়। সবার সামনেই এই বিরল বন, পাহাড় ও জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট করা হচ্ছে। যত দিন পর্যন্ত মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এই ধ্বংসযজ্ঞ রুখে না দাঁড়াবে, তত দিন চুনতিসহ দেশের বনাঞ্চলের অবক্ষয় চলতেই থাকবে।’</p>