<article> <p style="text-align: justify;">কাঙ্ক্ষিত পদমর্যাদা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ জানিয়েছেন ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ৮১৬ জন কর্মকর্তা। পদটি আগে সহকারী তহশিলদার হিসেবে ১৭তম গ্রেডভুক্ত ছিল। নাম পরিবর্তনের সঙ্গে পদটি ১২তম গ্রেডে উত্তীর্ণ করা হয়। এরপর দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে একটি গেজেট প্রকাশ করা হলেও পরে তা বাতিল করে ভূমি মন্ত্রণালয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">গেজেট বাতিলের কারণে কাঙ্ক্ষিত পদমর্যাদা হারাতে বসেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।</p> <p style="text-align: justify;">ভুক্তভোগীরা জানান, এই পদ দ্বিতীয় শ্রেণিতে বা ১২তম গ্রেডে উত্তীর্ণ করার কারণে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) থেকে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবেই তাঁরা এই পদে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ গেজেট বাতিলের কারণে নন-গেজেটেড কর্মকর্তা হওয়ার পাশাপাশি তাঁদের শীর্ষ পদে যাওয়ার সুযোগও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মাঠ প্রশাসন) জিয়াউদ্দীন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০১৫ সালের পর থেকে শ্রেণি বলতে কিছু নেই। এখন সব গ্রেডভিত্তিক পদ। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ১ থেকে ২০তম গ্রেড আছে। এই পদটি ১৭তম গ্রেড থেকে ১২তম করা হয়েছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">পিএসসি থেকে নিয়োগ পাওয়ার কারণে তাঁরা নিজেদের ‘গেজেটেড কর্মকর্তা’ ভাবছেন, এটি তাঁদের ভুল ধারণা।</p> <p style="text-align: justify;">গত ২ মার্চ বিজি প্রেস থেকে প্রকাশিত একটি গেজেট কালের কণ্ঠ’র কাছে এসেছে। ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তাদের পদের উন্নীত স্কেল ও বেতন নির্ধারণ নিয়ে সেই গেজেট প্রকাশ করা হয়। সেখানে এসব কর্মকর্তাকে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। পরে ৭ মার্চ গেজেটটি বাতিল করে ভূমি মন্ত্রণালয়।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এ বিষয়ে জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর ছাড়া একটি গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এরই মধ্যে আমরা তা বাতিল করেছি। মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষর ছাড়া এই গেজেট প্রকাশ করায় বিজি প্রেসকেও নোটিশ দেওয়া হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">ভুক্তভোগীদের দাবি, গেজেটে কোনো ভুল থাকলে তা বাতিল না করে সংশোধন করা যেত। গেজেট বাতিলের এই প্রক্রিয়া একটি গভীর চক্রান্ত। পদটিকে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে বাতিল করার ষড়যন্ত্র। এখানে একটি বিশেষ মহলের সিন্ডিকেট রয়েছে। পিএসসি নয়, বরং আগের মতো নিজেদের অধীনে নিয়োগের ব্যবস্থা চায় ওই সিন্ডিকেট।</p> <p style="text-align: justify;">জানা যায়, ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডার ৮১৬ জন সম্প্রতি ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। তবে এসব জটিলতার কারণে যোগদানের তিন মাস পার হলেও তাঁরা কোনো বেতন-ভাতা তুলতে পারেননি। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, সার্ভিস বুক দিয়ে বেতন তোলার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়েছে।</p> <p style="text-align: justify;">নাম প্রকাশ না করে একজন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘তৃতীয় শ্রেণি বা ১৩তম গ্রেড ও নিচের গ্রেডে কর্মরতদের বেতন-ভাতা উত্তোলনের জন্য সার্ভিস বুক ব্যবহার করতে হয়। ১২তম গ্রেডের কর্মকর্তা হয়ে এই সার্ভিক বুক ব্যবহার করলে ভবিষ্যতে জটিলতা তৈরি হতে পারে। তবে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি আকারে নির্দেশনা দিলে আমরা তা মেনে নেব।’</p> <p style="text-align: justify;">অন্য একজন ভুক্তভোগী বলেন, ‘নিয়োগের আগে এই পদ দ্বিতীয় শ্রেণি হিসেবে উত্তীর্ণ করা হয়েছিল। সেই হিসাবে আমরা এই পদে আবেদন করি। যদি জানতাম নিয়োগের পর গেজেট বাতিল করা হবে, তাহলে পছন্দক্রমে এই পদ উল্লেখ করতাম না। অন্য পদের জন্য আবেদন করার সুযোগও ছিল।’</p> <p style="text-align: justify;">এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের শূন্যপদের চাহিদার বিপরীতে যোগ্য প্রার্থী দিয়ে থাকে পিএসসি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’</p> <p style="text-align: justify;">বাংলাদেশ ল্যান্ড অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এনামুল হক পলাশ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নতুন নিয়োগবিধি একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। এর ফলে মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। কারো ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা চিন্তার কারণে সার্বিক বিষয়টিকে পেছনে নিয়ে যাওয়ার অযাচিত সিদ্ধান্ত দুঃখজনক। এতে মাঠ পর্যায়ে কর্মরতদের মধ্যে হতাশা আসবে এবং এর প্রভাবে গতিশীলতা নষ্ট হবে।’</p> </article>