<p>রংপুর জেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে শিক্ষা অঙ্গন উচ্চ বিদ্যালয়ের এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। এতে  স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।</p> <p>অনুষ্ঠানে রংপুর জেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের জেলা শাখার সভাপতি ও রংপুর সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. সাদাকাত হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শিক্ষা অঙ্গন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আয়শা সিদ্দিকা, বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষা অঙ্গন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল আলম।</p> <p>এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘের রংপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তানজিম হাসান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক রবি দাশ, অর্থ সম্পাদক সোহাগ কুমার দাশ, বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের সমন্বয়ক গোলজার রহমান প্রমুখ।</p> <p>সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, আমরা যে সহজলভ্য পলিথিন ব্যবহার করি, তা আমাদের বাস্তুসংস্থানের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। পলিথিন মাটিতে মিশে যেতে পারে না, ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায় এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি আমাদের সমতল ভূমিতে আমাদের আবাদি জমি বিনষ্ট করে; আমাদের প্রিয় ধরিত্রী তার স্বাভাবিক রূপ হারিয়েছে। ফলে মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ে, সৃষ্টি হয় নতুন রোগ-ব্যাধি, বিলুপ্ত হয় বিপন্নপ্রায় অনেক প্রাণী, যা আমাদের বাস্তুসংস্থানের জন্য ক্ষতিকর। তাই তোমাদের মাধ্যমে পলিথিন ব্যবহারের অপকারিতা সবার মাঝে তুলে ধরতে আজকে আমাদের এই প্রয়াস। ‘পলিথিন ব্যবহার করব না, পরিবেশবান্ধব বিকল্প  ব্যবহার করব।’ এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার। পয়োনিষ্কাশনের জন্য রংপুর শ্যামাসুন্দরী খালটি পলিথিন দিয়ে ভরে গেছে। তাই আমরা পলিথিন ব্যবহারের পর যেন তা পুড়িয়ে ফেলি।</p> <p>সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেন, প্লাস্টিক হচ্ছে কৃত্রিমভাবে তৈরি পলিমার, যা মূলত জীবাশ্ম জ্বালানি বা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে রাসায়নিক উপায়ে তৈরি করা হয়। ফলে প্লাস্টিক সাধারণভাবে নমনীয়, যা সহজে বাঁকা করা যায়, ক্ষয়রোধী, দীর্ঘস্থায়ী ও কম দামি। এই সহজলভ্য প্লাস্টিক ব্যবহার করে আমরা আমাদের পরিবেশকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছি। আমরা নিত্যব্যবহার্য প্লাস্টিকের অধিকাংশ একবার ব্যবহার করে ফেলে দিই, যা জলজ প্রাণী, খাদ্য চেইন এবং মানবজগতের জন্য এক বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কারণ খাল, নালা, পুকুর, নদী হয়ে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হলো সমুদ্র। প্লাস্টিকের দূষণ হলো পরিবেশ কর্তৃক প্লাস্টিকের বর্জ্য আহরণ, যা পরে সামুদ্রিক ও বন্য প্রাণীসহ তাদের আবাসস্থল, জল, স্থল এবং সর্বোপরি মানবগোষ্ঠীর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।</p> <p>তারা বলেন, প্লাস্টিকের দূষণ রোধে সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন-দৈনন্দিন বাজারের ক্ষেত্রে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিনের পরিবর্তে কাপড় অথবা পাটের ব্যাগের ব্যবহার করতে হবে। প্লাস্টিক বর্জনের ক্ষেত্রে নাগরিকদের সচেষ্ট হওয়া এবং যত্রতত্র প্লাস্টিক না ফেলে এর ব্যবহার ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে।</p>