বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল এখন আইসিসির ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। সদ্যঃসমাপ্ত এশিয়া কাপে বাংলাদেশের চরম ব্যর্থতার পর তিনি দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতি এবং বোর্ডের সমালোচনা করেন। কালের কণ্ঠকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের ভূমিকা নিয়ে। দলের ব্যর্থতায় খালেদ মাহমুদকে কেন বাদ দেওয়া হবে না―সেই প্রশ্নও তোলেন।
এবার তার জবাব দিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন।
আজ সোমবার থেকে মিরপুর শেরে বাংলায় শুরু হয়েছে ত্রিদেশীয় সিরিজ এবং বিশ্বকাপ উপলক্ষে তিন দিনের ক্যাম্প। এই ক্যাম্প শেষেই ঘোষণা করা হবে বিশ্বকাপ দল। অনুশীলন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের বক্তব্যের কড়া জবাব দেন সুজন।
তিনি বলেন, ‘আমি বিসিবিতে আছি, আমি তো নির্বাচিত পরিচালক। ওখান থেকে আমাকে টিম ডিরেক্টর করা হয়েছে। বোর্ডের প্রেসিডেন্ট আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, উনি কেন আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলতে পারব না। এটা তো আমি চেয়ে নিইনি। আমি তো বাচ্চা না যে কান্না করে নেব।’
আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সাক্ষাৎকারটি পড়ুন : ওরা খোলা মনে খেলতে পারে না
এ সময় তিনি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন, ‘উনার কী যোগ্যতা আছে আমার ব্যাপারে কথা বলার, সেটাই আমি জানি না আসলে। উনার যোগ্যতা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে। বাংলাদেশে সত্যি বলতে, আমি যখন খেলা ছাড়ি তার পর থেকে ক্রিকেটের সঙ্গেই আছি। ন্যূনতম একটা বেতনে সাড়ে চার বছর বিসিবিতে কাজ করেছি।
আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমেই সব সময় শুনি, উনি বাংলাদেশে কাজ করতে চান। আমার তো এগুলো সম্পর্কে অনেক অভিজ্ঞতা। আমি নিজেই উনাকে অফার দিয়েছি বাংলাদেশে কাজ করতে। উনি কোনো দিনই আমাকে জানাননি যে কাজ করতে চান।’
টিম ডিরেক্টর সুজন আমিনুলের বিরুদ্ধে রীতিমতো অভিযোগ করে বলেন, ‘উনি প্রতিবারই এ রকম হাইপ তোলেন। কিন্তু আমাকে বলেন, উনি আসলে কোন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কাজ করেছেন? উনি আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের সঙ্গে একবারই কাজ করেছেন, যেবার আবাহনীর সঙ্গে কাজ করেছেন। এ ছাড়া উনি চীন, ব্যাংকক, ফিলিপাইন ওখানে অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৫ ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে কাজ করেন। ওখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কোথায় পেলেন? সুতরাং উনার যোগ্যতাটা কোথায়? আমি অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ করেছি। বাংলাদেশের হেড কোচও ছিলাম।’
আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সাক্ষাৎকারটি পড়ুন : ওরা খোলা মনে খেলতে পারে না
একসময়ের জাতীয় দলের সতীর্থকে তীব্র আক্রমণ করে সুজন বলেন, ‘আমি এ নিয়ে আর কিছু বলতে চাই না। একটা মানুষকে নিয়ে যখন বলব, তখন নিজের যোগ্যতা নিয়েও চিন্তা করা উচিত যে, আমি কতটুকু পারি না পারি। কে ভালো কে খারাপ এটা বিচার করার অধিকার তার যেমন নেই, আমারও নেই। তাই এটা নিয়ে আমি বলতেও চাই না। উনি বড়, উনাকে সেই শ্রদ্ধাটা আমি সব সময় করি এবং করব। কিন্তু উনি যেভাবে কথা বলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে...উনি আসুন, আমাদের সঙ্গে বসুন। বাংলাদেশ দলকে বদলানোর কোনো পরিকল্পনা থাকলে আমাদের দিন, আমরাও যেন তেমন পরিকল্পনা করতে পারি।’
উল্লেখ্য, আরব আমিরাতে কালের কণ্ঠকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আমিনুল ইসলাম বুলবুল সুজনকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, “টিম ডিরেক্টর হিসেবে তিনি ব্যর্থ। পারফরম্যান্স খারাপ হলে ক্রিকেটারদের যদি ধরা হয়, তাহলে ওনাকে নয় কেন? ওনাকে দলের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে নিশ্চয়ই পারফরম্যান্স বাজে হওয়ার জন্য নয়। বলতে চাইছি, শুধুই খেলোয়াড়দের ঘাড়ে দোষ না দিয়ে দায় যেন উনিও নেন। খেলোয়াড় টানা খারাপ খেলতে থাকলে একসময় বাদ দেওয়া হবে। এমনকি ‘মি. ডিপেন্ডেবল’কে নিয়েও এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠে গেছে যে ওকে বিশ্বকাপে নেওয়া হবে কি না। খালেদ মাহমুদও যখন ব্যর্থ, তখন একই নিয়ম তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না কেন? তার কথাবার্তাগুলো দলকে বরং বিরক্তই করে।”