<p>বিপিএল আর বিতর্কের বন্ধুত্ব নিয়ে গল্পটা বেশ পুরনো। দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছেই যে টুর্নামেন্ট ‘মাথাব্যথা’র আরেক নাম, সেটা নিশ্চয়ই ভালো বার্তা বহন করে না। তবে এদিক থেকে এবারের বিপিএলকে একটু আলাদা করাই যায়। মাঠে-মাঠের বাইরে নীতিবাচক আলোচনা তৈরি হওয়ার মতো কিছু ছিল না বললেই চলে। গত মৌসুমে যেখানে ‘বেফাঁস মন্তব্য’, ‘মাঠে মেজাজ হারানো’ নিয়ে জরিমানার স্রোত বয়ে গিয়েছিল। এই কর্মে এবার লিটন দাস একমাত্র ভুক্তভোগী। তবু অনেক ভালোর ভিড়ে শেষটায় কি একটু বিতর্কের ছাপ লেগেই গেল? ফাইনালের ট্রফির ফটোসেশন নিয়ে যত বিপত্তি। দর্শনীয় কোনো স্থানে ট্রফি নিয়ে দুই অধিনায়কের ফটোসেশন বর্তমান সময়ের ক্রিকেটে নিয়মই হয়ে দাঁড়িয়েছে।</p> <p>বিপিএল ফাইনালের ট্রফির ফটোশুট বর্ণিল করতে বিসিবি বেছে নেয় পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিল। আগের দিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানিয়েছিল, মিডিয়া সেশনও হবে আহসান মঞ্জিলে। কিন্তু কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ফরচুন বরিশালের দুই অধিনায়কের কেউই অনুষ্ঠানে আসেননি। কুমিল্লার প্রতিনিধি হয়ে আসেন জাকের আলী অনিক। বরিশালের প্রতিনিধিত্ব করেন মেহেদী হাসান মিরাজ।</p> <p>পরে বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও কুমিল্লার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তার সারমর্ম, দূরত্বই যত ঝামেলা বাধিয়েছে। পুরান ঢাকার ইসলামপুরে যেখানে আহসান মঞ্জিল অবস্থিত, তার আশপাশ যানজটের জন্য বেশ পরিচিত। সে যা-ই হোক, দশম আসরের ফাইনাল নিয়ে প্রস্তুত দুই দল। গ্যালারিতে কলরব তোলার অপেক্ষায় দর্শকরা।</p> <p>টিকিট নিয়ে কাল দিনভর স্টেডিয়াম এলাকায় ছিল দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায়ও জড়িয়েছে কিছু দর্শক। এবার বিপিএলে গ্যালারিতে সমর্থকদের উপস্থিতিতে কুমিল্লা-বরিশাল পাল্লা দিয়েছে সমানতালে। পারফরম্যান্সে অবশ্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই দলেরই ধার বেড়েছে। টুর্নামেন্টের শুরুটা বরাবরের মতো জুতসই ছিল না কুমিল্লার। লিগ পর্বে বরিশালের অবশ্য টুর্নামেন্টজুড়েই পারফরম্যান্সের ওঠা-নামা ছিল। তবে যে মুহূর্ত থেকে সেরাটা দরকার, বরিশাল যেন তখন থেকে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। এই যেমন শেষ তিন ম্যাচই নক আউট হিসেবে খেলল দলটি। প্লে-অফ নিশ্চিতের ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে জয়। প্লে-অফের দুই ম্যাচে বরিশালের কাছে হার মেনেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও টুর্নামেন্টের অন্যতম শক্তিশালী দল রংপুর রাইডার্স। প্রথমবার বিপিএল শিরোপা জয়ের অপেক্ষায় থাকা বরিশালের নৌকা ঘাটে ভেড়ানোর দায়িত্ব যথারীতি তামিম, মুশফিকুর রহিম, কাইল মায়ার্সদের কাঁধে। বাড়তি পাওনা দুই ম্যাচের জন্য আসা ডেভিড মিলারও থাকছেন ফাইনালের মহারণে।</p> <p>কুমিল্লা অবশ্য শিরোপা জেতার সঙ্গে বেশ অভ্যস্ত। বিপিএলের সবচেয়ে সফল দলটি হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে। এই কথার প্রতিফলন দেখা গেল জাকেরের কণ্ঠে, ‘পারফরম করেই প্রতিবার কুমিল্লা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ফাইনালেও আমাদের ভালো পারফরম করতে হবে। কুমিল্লা এসব বড় ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত, ফাইনাল খেলে অভ্যস্ত।’ উপভোগ্য এক ফাইনালের আশা বরিশালের প্রতিনিধি মিরাজের, ‘ক্রিকেট এমন এক খেলা, যেদিন যে ভালো করবে, সে-ই জিতবে। এর আগেও বরিশাল-কুমিল্লা ফাইনাল হয়েছে, বরিশাল এক রানে হেরেছে। আশা করি, এবার আরো একটা ভালো ম্যাচ উপহার দিতে পারব, সবাই উপভোগ করবে।’</p>