পাকিস্তানে এক আত্মঘাতী নারী হামলাকারী আধাসামরিক বাহিনীর গাড়িবহর লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত একজন সেনা সদস্য নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। দেশটির অস্থির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানে সোমবার এ হামলা হয়। এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিলাল শব্বির এএফপিকে বলেন, বেলুচিস্তানের কালাত জেলায় ফ্রন্টিয়ার কর্পস (এফসি) বাহিনীর একটি গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে এক আত্মঘাতী নারী হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে অন্তত একজন এফসি সদস্য নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা হাবিব বাবাইও হতাহতের সংখ্যার বিষয়টি এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে এ হামলার দায় এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী স্বীকার করেনি।
তবে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ওই অঞ্চলের সবচেয়ে সক্রিয় বিদ্রোহী সংগঠন হিসেবে পরিচিত এবং তারা প্রায়ই নিরাপত্তা বাহিনী ও অন্যান্য প্রদেশ থেকে আসা পাকিস্তানিদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা চালায়।
অন্যদিকে পাকিস্তানে নারী আত্মঘাতীর হামলার ঘটনা বিরল। তবে বিএলএ আগে নারী যোদ্ধাদের ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছে। প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালের এপ্রিলে করাচিতে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের প্রবেশপথে একটি গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক নারী আত্মঘাতী হামলাকারী তিনজন চীনা শিক্ষাবিদ ও তাদের পাকিস্তানি চালককে হত্যা করে।
ওই হামলার দায় বিএলএ স্বীকার করেছিল।
এ ছাড়া বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন জ্বালানি প্রকল্পেও বিএলএ হামলা চালিয়েছে, বিশেষ করে চীনের বিনিয়োগে পরিচালিত প্রকল্পগুলোতে। তাদের অভিযোগ, দেশের সবচেয়ে দরিদ্র অঞ্চল বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ বহিরাগতরা শোষণ করছে, অথচ স্থানীয় বাসিন্দাদের উন্নয়ন থেকে বাদ রাখা হচ্ছে।
এএফপি বলেছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক, জাতিগত ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে। আফগানিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী বেলুচিস্তান খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ হলেও অর্থনৈতিকভাবে অবহেলিত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত।
এ ছাড়া গত বছর পাকিস্তানে এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর ছিল, যেখানে সহিংসতার ঘটনায় এক হাজার ৬০০ জনের বেশি নিহত হয়। এদের মধ্যে ৬৮৫ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন বলে ইসলামাবাদভিত্তিক সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ জানিয়েছে। সহিংসতার বেশির ভাগই আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘটিত হয়েছে, আর বড় শহরগুলোতে হামলার ঘটনা এখন তুলনামূলক কমে এসেছে।
এএফপির হিসাবে, চলতি বছরে পাকিস্তানে অন্তত ৮১ জন হামলায় নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। তাদের ওপর রাষ্ট্রবিরোধী গোষ্ঠীগুলো হামলা চালিয়েছে।