ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
৩ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

খাগড়াছড়িতে দুই পক্ষের গোলাগুলি, গৃহবধূ নিহত

প্রতিনিধি, পানছড়ি (খাগড়াছড়ি)
প্রতিনিধি, পানছড়ি (খাগড়াছড়ি)
শেয়ার
খাগড়াছড়িতে দুই পক্ষের গোলাগুলি, গৃহবধূ নিহত
ছবি: কালের কণ্ঠ

খাগড়াছড়ি পানছড়ির দুর্গম দুদুকছড়া হাতিমারা এলাকায় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে এক গৃহবধূ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, এলাকায় আঞ্চলিক দুটি গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, সোমবার পানছড়ির উত্তর দুদুকছড়ার দুর্গম এলাকায় পাহাড়ের দুই আঞ্চলিক সংগঠন প্রসিতপন্থী ইউপিডিএফ ও সন্তু লারমাপন্থী জেএসএস-এর মধ্যে গোলাগুলির খবর পাওয়া যায়।

সূত্রটি জানিয়েছে, গোলাগুলিতে দুই পক্ষের কেউ হতাহত না হলেও হাতিমারা গ্রামের হেমন্ত চাকমার স্ত্রী রূপসি চাকমা নামে একজন গৃহবধূ নিহত হয়েছেন।

ইউপিডিএফ-এর জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা জানান, ‘ইউপিডিএফ কর্মীদের লক্ষ্য করে জেএসএস-এর সন্ত্রাসীরা গুলি করে পালিয়ে গেছে। এতে একজন সাধারণ গৃহবধূ মারা গেছে বলে শুনেছি।’

পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন জানান, পানছড়ির সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকায় বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। নেটওয়ার্ক সংযোগ অত্যন্ত দুর্বল তাছাড়া এলাকাটি দুর্গম হওয়ার কারণে সেখানে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে পরিবারটির সঙ্গে পুলিশ যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

‘পুলিশরে ২ হাজার দিয়া ৩ হাজার পকেটে থুইতাম’, আরো যা বললেন বিএনপি নেতা

বামনা (বরগুনা) প্রতিনিধি
বামনা (বরগুনা) প্রতিনিধি
শেয়ার
‘পুলিশরে ২ হাজার দিয়া ৩ হাজার পকেটে থুইতাম’, আরো যা বললেন বিএনপি নেতা
মো. হাবিবুর রহমান খলিফা। ছবি : সংগৃহীত

বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বৈশাখী উৎসব ও হালখাতা উপলক্ষে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। ওই নেতা প্রকাশ্যে মাইকিং করে জানিয়েছেন চাঁদাবাজির টাকা তিনি পুলিশকে দিয়েছেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

অভিযুক্ত ওই নেতার নাম মো. হাবিবুর রহমান খলিফা। তিনি ডৌয়াতলা ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ডৌয়াতলা বাজার কমিটির স্ব-ঘোষিত সেক্রেটারি।

আরো পড়ুন
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯ এপ্রিল খাল খনন শুরু করবে জামায়াত

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯ এপ্রিল খাল খনন শুরু করবে জামায়াত

 

জানা গেছে, দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে ২ বৈশাখ ডৌয়াতলা বাজারের ব্যবসায়ীরা হালখাতা ও নববর্ষ উৎসব পালন করে থাকেন। প্রতিবছর এ দিনে ডৌয়াতলা বাজারে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। দোকানিদের কেনাবেচা চলে গভীর রাত পর্যন্ত।

অভিযোগ উঠেছে, বাজার কমিটির সেক্রেটারি ও স্থানীয় বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান খলিফার নেতৃত্বে হালখাতা উৎসবে ডৌয়াতলা বাজারে আসা ভাসমান বিক্রেতা ও স্থানীয় দোকানিদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা হয়েছে।

ওই বিএনপি নেতাকে দোকান ভেদে সর্বনিম্ন এক শ টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

আরো পড়ুন
গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে রফিক আজাদের স্মৃতিস্মারক বাড়ি

গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে রফিক আজাদের স্মৃতিস্মারক বাড়ি

 

এদিকে ওই নেতার চাঁদাবাজির ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তিনি স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী ও নেতাকর্মী নিয়ে জরুরী সভা ডাকেন। ওই সভায় প্রকাশ্যে তিনি ডৌয়াতলা বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলা ও ওই চাঁদার টাকা থেকে কিছু টাকা পুলিশকে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তার স্বীকারোক্তীমুলক একটি ভিডিও গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, তিনি প্রকাশ্যে একটি মাইক্রোফোন নিয়ে মাইকে কথা বলছেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সকালে ৪ জন পুলিশ আইছে, তাদের কয় টাকা ভাত খেতে দেওয়া লাগে? অন্তত দুই হাজার টাকা দেওয়া লাগে, এক হাজার টাকা দিয়েছি। রাতে যারা আইছে (পুলিশ) তাদের তো এক হাজার দেওয়াই লাগে।’

আরো পড়ুন
কফি হাউজের সামনে পিটুনির শিকার সেই নারীকে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ

কফি হাউজের সামনে পিটুনির শিকার সেই নারীকে খুঁজে পেয়েছে পুলিশ

 

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বাজারে লক্ষ লক্ষ টাকা কালেকশন হইছে। আমি যদি প্রত্যেক দোকানে যাইতাম প্রত্যেকে আমারে এক শ টাকা দিত।

সেখানে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা উঠত। ৫ হাজার তো উঠত। সেখানে পুলিশরে ২ হাজার দিয়া ৩ হাজার আমার পকেটে থুইতাম। আমি চিন্তা করছি ওই টাকা উঠাইতে গিয়া আমার দোকানের বেশি ক্ষতি হইয়া যায়। তাই পকেট থেকে ৫০০ পুরাইয়া আমি পুলিশকে দিয়া দিছি। আমি আপনাগো কাউরে ডিস্টাব না কইরা থাকি তাহলে আমার নামে যদি এত বড় বদনাম দেয়, আপনারা কি বিচার চান? আমার নেতা আইবে, দরকার হলে মনি ভাই আইবে।’

ডৌযাতলা বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, বাজার কমিটি অনেক দোকান থেকেই চাঁদা তুলেছে। তবে এ ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তারা চাঁদা তোলা বন্ধ করে দেয়।

বাজারের গার্মেন্সে ব্যবসায়ী মো. খলিল জানান, বাজার কমিটি অনেক দোকান থেকে টাকা নিয়েছে। আমার এই গলিতে আসার আগেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তাই আমার এখানে আসেনি।

আরো পড়ুন
ধানমন্ডিতে চাঁদা আদায়ের দায়ে আটক যুবককে নিয়ে যা বললেন আরিফ সোহেল

ধানমন্ডিতে চাঁদা আদায়ের দায়ে আটক যুবককে নিয়ে যা বললেন আরিফ সোহেল

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমানে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা মূলত অবৈধ কমিটি। এরা বিভিন্ন দোকান থেকে মাঝে মাঝে টাকা তোলে। টাকা তোলার কারণও রয়েছে। দেখা গেছে, বাজারের একটি টিউবঅয়েলের ওয়াশার দরকার, সেখানে যা টাকা খরচ হয় তারা তার অধিক তুলে। আর হালখাতা উপলক্ষে টাকা তুলেছে, এ ঘটনাটি সত্য তবে টাকা তুলে পুলিশকে দিয়েছে সেটা ভিডিও দেখে জেনেছি।

ডৌয়াতলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি রাজিব হাওলাদার বলেন, ‘হাবিব খলিফা নিজের বক্তৃতায় স্বীকার করেছেন তিনি চাঁদা তুলেছেন। তিনি অবৈধভাবে সেক্রেটারি হয়েছেন। বাজারের ব্যবসায়ীরা তাকে সেক্রেটারি নির্বাচিত করেননি। নববর্ষে তিনি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেছেন আর সেই টাকাই তিনি পুলিশকে দিয়েছেন।’

অভিযুক্ত বাজার কমিটির স্ব-ঘোষিত সেক্রেটারি ও বিএনপি নেতা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ডৌয়াতলা বাজারে আমি টাকা তুলিনি। আমার বিরুদ্ধে চাঁদাতোলার অভিযোগ উঠলে আমি ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করি। ওই সভায় ভুল করে বলেছি- আমি পুলিশকে টাকা দিয়েছি। আসলে আমি কথাটা বুঝিয়ে বলতে পারিনি। হালখাতা উপলক্ষে ডিউটিরত পুলিশদের নিয়ে দুপুরে ও রাতে আমি একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করি। আমি তাদেরকে কোনো টাকা পয়সা দেইনি এবং কোনো টাকা-পয়সা আদায়ও করিনি।’

বামনা থানার ওসি হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, ‘আমি আদৌ কিছু জানি না। টাকা তুলেছে কিনা তাও জানি না। আমাকে দেওয়ার তো কিছুই নাই। আপনি তাদেরকে চার্জ করেন- কোন পুলিশকে টাকা দিয়েছেন।’

মন্তব্য

বগুড়া পুলিশ লাইনে ‘আয়নাঘর’

বগুড়া অফিস
বগুড়া অফিস
শেয়ার
বগুড়া পুলিশ লাইনে ‘আয়নাঘর’
ছবি: কালের কণ্ঠ

শারীরিক, মানসিক নির্যাতন শেষে দেওয়া হতো ভুয়া জঙ্গি মামলায়। সাদা পোশাকে মানুষকে রাতের আঁধারে তুলে এনে বন্দিশালায় আটকে রাখতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্যাতনের এমন অনেক নির্মম চিত্র উঠে এসেছে ভাগ্যহত বন্দিদের মুখে, যারা শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর জীবিত ফিরে এসেছেন। তাদের মতে, এটা ছিল এক ধরনের ‘আয়নাঘর’, যেখানে মানুষ শুধু হারিয়ে যেত, ফিরে আসার নিশ্চয়তা ছিল না।

 

চাঞ্চল্যকর এমন সব ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গুম কমিশন অব ইনকোয়ারিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী। নাম প্রকাশ না করলেও বিষয়গুলো স্বীকার করেছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। প্রকাশ হওয়া এসব তথ্য দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। গভীর উদ্বেগ জানিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তসহ অবিলম্বে দোষীদের বিচারের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

বগুড়া পুলিশ লাইনে ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ-পশ্চিম কোণার দোতলার ভবনটিতে এমন ঘটনা ঘটেছে।

সম্প্রতি ঢাকায় গুম কমিশন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন জানিয়েছেন, বগুড়া পুলিশ লাইন্সে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে বিভিন্ন জায়গা থেকে বন্দিদের নির্যাতন করা হতো। পুলিশ লাইন্সে গোপন বন্দিশালার বিষয়ে তাদের কাছে অনেক অভিযোগ এসেছে। তদন্ত চলছে, তদন্তাধীন বিষয়ে এ বিষয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না।

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ২০১৪ ও ২০১৮ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে শেখ হাসিনা সারা দেশে যেসব পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ দিয়েছেন, তারা আওয়ামী লীগকে জিতিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সব কিছুই করেছেন। বগুড়া ও এর আশপাশের এলাকার আতঙ্কের নাম ছিল তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল। 

গুম কমিশনে দেওয়া অভিযোগ মতে, গুম করে জঙ্গি মামলায় ফাঁসানোর নেতৃত্বে ছিলেন বগুড়ার তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল ও মো. আব্দুল জলিল। জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ পরিদর্শক আমিরুল ইসলাম, পরিদর্শক ইমরান মাহমুদ তুহিন, উপ পরিদর্শক (এসআই) জুলহাস, মজিবর রহমান, আলমগীর হোসেন, এএসআই রাশেদ এএসআই রাসেল এবং কনস্টেবল সালাম ও গোবিন্দসহ গ্রুপের অনেকে। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফ মন্ডলের ঘনিষ্ঠজন (ভাই) হিসেবে পুলিশ বিভাগে পরিচিত কাহালু ডিগ্রি কলেজের একজন প্রভাষক তার অন্যতম প্রধান সোর্স।

বিনিময়ে বগুড়া, গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় পুলিশের নিয়োগসহ অবাধ বিচরণ ছিল তদবির বাণিজ্যে। শুধু তাই নয়, জুলাই আন্দোলনকালীন তার ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

বগুড়া পুলিশ লাইনে দায়িত্ব পালন করা এক পুলিশ সদস্য জানান, পুলিশ লাইন্সে যোগদানের পর তিনি বন্দিদের সেখানে দেখতে পান। ২০১৭ সালে কমপক্ষে ৩০ জন নিরপরাধ মানুষকে নেওয়া হয় সেখানে। যার নেতৃত্বে ছিলেন পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান। মূল দায়িত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফ মন্ডলের সঙ্গে কাজ করতেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল। টার্গেট আকটদের নির্যাতনে হত্যার পর রাতের আধারে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু দেখানো হতো। কখনও হত্যার পর পেট কেটে নদীতেও মরদেহ ফেলে দেওয়া হতো। 

ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে এই পুলিশ সদস্য বলেন, নির্বিচারে অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করে কীভাবে এখনো এসপির দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের তো ফাঁসি হওয়া উচিত।

সূত্র দাবি করে, গুম হওয়া অনেককেই ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলোচিত জঙ্গিবিরোধী অভিযান ‘ঈগল হান্ট’ মামলায় আসামি করা হয়েছিল।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাগপুর ইউনিয়ণের বাসিন্দা হাফিজ উদ্দিন দৈনিক কালের কণ্ঠকে জানান, ২০১৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে তার ছোট ভাই মফিজ উদ্দিন নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন পানামা হিলি পোর্ট লিমিটেডে কর্মরত থাকাবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উঠিয়ে নিয়ে যায়। এরপর থেকে অদ্যাবধি তার ভাইকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর শিবগঞ্জ থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি, আদালতে মামলা করলেও থানা পুলিশ তা এজাহার হিসেবে গণ্য করেনি।

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী বগুড়া শহর শাখার আমির আবিদুর রহমান হোহেল কালের কণ্ঠকে জানান, বিগত ১৬ বছর দেশে বহু অন্যায়, অত্যাচার হয়েছে। বহু মানুষ হত্যা হয়েছেন, গুম হয়েছেন মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করেছেন। বগুড়া পুলিশ লাইনে বন্দিশালার বিষয়টি তিনিও শুনেছেন। তার জানামতে, বগুড়াতে অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক, আলাউদ্দিন হোসেল, রাজ্জাক, সাব্বির শাহরিয়ার শুভ, রশিদুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান ও নাহিদুর ইসলামকে পুলিশ গুম করে নির্যাতন চালিয়েছেন। আল্লাহর অসীম কৃপায় কিছুদিন পরে পৃথকভাবে মামলা দিয়ে অন্য কোথাও পৃথকস্থানে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন দৈনিক কালের কণ্ঠকে জানান, বিগত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ দল-মতের বিরুদ্ধে গেলেই পুলিশকে দিয়ে নানাভাবে মিথ্যা মামলাসহ গুম-খুন করাতো। সবশেষ জাতীয় নির্বাচনের আগে বগুড়ার তৎকালীন পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী দায়িত্বরত অবস্থায় আগের মতোই পুলিশের একটি চক্র গুম, খুন ও অপহরণে ব্যস্ত ছিল। 

তিনি বলেন, কাহালু উপজেলার মদনাই ইউনিয়নের বীরকেদার নিবাসী মদনাই ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনকে দুপচাচিয়া এবং বীরকেদার গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য হৃদয়কে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ) এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায় সাদা পোশাকধারী পুলিশ। গণমাধ্যমের সহযোগিতা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করলে কয়েকদিন পরে পুলিশ তাদেরকে সবকিছু গোপন রাখার শর্তে কৌশলে পৃথক স্থানে ছেড়ে দেয়।

বগুড়ার তৎকালীন এসপি মো. আসাদুজ্জামানকে সবশেষ কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট প্রধানের দায়িত্ব থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। 

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল জলিলকে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। আরিফুর রহমান মন্ডলের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। 

তবে ইন্সপেক্টর ইমরান মাহমুদ তুহিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি এ ধরনের কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন না, মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। 

এসআই জুলহাসের ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তৎকালীন বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি। ওসি ডিবি আমিরুল ইসলাম পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। 

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা দৈনিক কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি বিষয়গুলো সম্পর্কে শুনে থাকলেও গুম কমিশনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় কোনোরকম বক্তব্য দিতে পারবেন না।
 

মন্তব্য

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯ এপ্রিল খাল খনন শুরু করবে জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
শেয়ার
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯ এপ্রিল খাল খনন শুরু করবে জামায়াত
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর দায়িত্বশীল ও জলাবদ্ধতা নিরসনে গঠিত টেকনিক্যাল টিম সদস্যদের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আগামী ১৯ এপ্রিল (শনিবার) সকাল ৯টায় এই প্রকল্পের উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) দেওয়ান বাজারস্থ মহানগরী জামায়াত  কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী বর্ষার পূর্বেই চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকার ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে সার্বিক সহযোগিতার লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী বাকলিয়ার বির্জাখাল খনন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি দল ও নগর জামায়াতের গঠিত টেকনিক্যাল টিম প্রকল্প স্থান পরিদর্শন ও ফিজিক্যাল স্টাডি করেছেন।

আরো পড়ুন
সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে জরুরি নির্দেশনা

সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে জরুরি নির্দেশনা

 

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগরী আমীর ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরীর বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীর দুঃখ বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা। সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে জামায়াতে ইসলামী দেশের বর্তমান সরকারকে এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে দেশের উন্নয়নের কাজে সহযোগিতার লক্ষ্যে জামায়াতের অর্থায়নে এ প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

এলাকার সব জনগণ, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সর্বস্তরের লোকদের বাকলিয়া বির্জাখাল খনন কাজে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।

খাল খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাজে লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়ার জন্য শাহজাহান চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকেও আহ্বান জানান।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ, মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুছ, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক ওর্য়াড কাউন্সিলর ও চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান প্রমুখ।

মন্তব্য

আশুলিয়ায় ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
শেয়ার
আশুলিয়ায় ৬ দফা দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ছবি: কালের কণ্ঠ

কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় এবং উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ ছয় দফা দাবিতে সারা দেশের ন্যায় সাভারের আশুলিয়ার সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টাব্যাপী সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সময় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরে কর্মসূচি শেষে শিক্ষার্থীরা চলে গেলে সড়কটিতে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১১ টায় টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের ঘোষবাগ এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করেন বোরাক পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে পাসকরা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে, ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে, জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কতৃর্ক বাতিল করতে হবে, কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।

এ ছাড়া কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) এর পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) হতে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও, যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বোরাক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মনির, সাজ্জাদ ও মারুফ বলেন, আমাদের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট কোনো বয়স সীমা নেই। যেকোনো বয়সের মানুষ আমাদের সঙ্গে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা করতে পারে।

তাই আমরা ডিপ্লোমাতে ভর্তির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বয়সসীমার দাবি জানিয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য একটি উন্নতমানের পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ