<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমান বিশ্বে মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য রীতিমতো হুমকি হয়ে উঠেছে পলিথিনের যথেচ্ছ ব্যবহার। সাগর, নদী, জলাশয়, কৃষিজমি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই অপচনশীল বস্তুতে। মানুষসহ প্রাণিজগতের ক্ষতি হচ্ছে। উন্নত দেশগুলো এর ব্যবহার বহুলাংশ হ্রাস করলেও আমাদের মতো অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশে ২০০২ সালে প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে পরবর্তীকালে সরকারগুলোর উদ্যোগের অভাবে পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ হয়নি, বরং আরো বেড়েছে। বাজার থেকে শুরু করে গলির দোকান</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সর্বত্রই এর ছড়াছড়ি। শহরাঞ্চলে পরিত্যক্ত ব্যাগ জমে ড্রেন আটকে যায় এবং জলাবদ্ধতা হয়। গ্রামে ফসলি জমি, জলাশয়ের সর্বনাশ হয়। এ ছাড়া নানাভাবে তা পরিবেশের ক্ষতি করে। নানা উপায়ে মানবদেহেও ঢুকছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। বাড়ছে ক্যান্সারসহ নানা রোগ। বর্তমানে ডেঙ্গুর যে বিস্তার তার জন্যও বহুলাংশে দায়ী এই পলিথিন ব্যাগ। এহেন সর্বনাশা পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে অন্তর্বর্তী সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী। কিন্তু গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাজারগুলোতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পলিথিনের এমন বিস্তার খুব বেশিদিনের নয়। স্বাধীনতার পরও মোটামুটি দীর্ঘ সময় পলিথিনের ব্যবহার সীমিত ছিল। সবাই পাটের কিংবা কাপড়ের ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে বাজারে গেছে। গ্রামাঞ্চলের মানুষ বাঁশের তৈরি ডুলা নিয়ে বাজারে গেছে। এগুলো নিছকই অভ্যাসের ব্যাপার। এটি সত্য যে পলিথিন খুবই সুলভ ও সহজলভ্য। কিন্তু এর ক্ষতিকর দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। নদী, জলাশয়, এমনকি সামুদ্রিক যে মাছ আমরা খাই, সেগুলোতেও প্রচুর পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যায়। মাছ থেকে সেগুলো মানবশরীরে আসে। পরীক্ষায় মানুষের রক্তে মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে প্রতিনিয়ত নানা ধরনের উদ্বেগজনক তথ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা দ্রুত এর ব্যবহার বন্ধ করার কথা বলছেন। তা সত্ত্বেও আমরা কি এমন উদাসীনই থেকে যাব? ২০১৮ সালে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছিলেন ঢাকায় অবস্থানরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদলের প্রধান ও রাষ্ট্রদূত রেঞ্চা টিয়েরিংকসহ ইইউ মিশনের কর্মীরা। তাঁরা হাতিরঝিল লেক এলাকায় ঘুরে ঘুরে ১০ বস্তা প্লাস্টিক-পলিথিন দ্রব্য সংগ্রহ করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল পলিথিনের অপব্যবহার সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। কিন্তু আমরা কি সচেতন হয়েছি?</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকাশিত খবরে জানা যায়, কয়েক দিনের সচেতনতামূলক প্রচার ও অভিযান শেষে আজ রবিবার থেকে সারা দেশে পলিথিনের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান শুরু হবে। প্রয়োজন অনুযায়ী শাস্তিও দেওয়া হবে। আমরা মনে করি, পলিথিন ব্যবহার বন্ধে কঠোরই হতে হবে। এর উৎপাদন, বিপণন, পরিবহনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে মানুষকে সচেতন করতে হবে এবং পরিবেশসম্মত সহজ ও বিকল্প ব্যবহারযোগ্য বস্তুর সরবরাহ বাড়াতে হবে।</span></span></span></span></p>