<p>প্রতারণার নানা কৌশলে বিভ্রান্ত সাধারণ মানুষ। প্রতারকচক্র নানা ছুতায় মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সহজ-সরল মানুষকে প্রলুব্ধ করছে এবং তাদের টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যাচ্ছে। এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের খবর মাঝেমধ্যেই আসে গণমাধ্যমে। কিন্তু তার পরও থেমে নেই প্রতারকচক্র। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীগুলোর নানা পর্যায়ের নজরদারির কারণে এরই মধ্যে ছোট-বড় অনেক প্রতারককে আটক করা হয়েছে। তাদের প্রতারণার নানা কাহিনিও বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু তার পরও থেমে নেই প্রতারকচক্রের কারসাজি।</p> <p>এ ধরনের অনেক প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন স্থানে সক্রিয়। সবার কাছে এসব প্রতিষ্ঠান ‘হায় হায় কম্পানি’ নামে পরিচিত। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে এনে জনপ্রতি এক লাখ টাকা করে সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হবে, এই ঋণ পেতে হলে এক হাজার টাকা ফি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, তারপর প্রত্যেককে অংশ নিতে হবে শাহবাগের সমাবেশে—এমন শর্ত দিয়ে গত সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানীর শাহবাগে শত শত মানুষকে জড়ো করার চেষ্টা করে ‘অহিংস গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশ’। পুলিশ ও শিক্ষার্থীরা এসব লোকজনকে বুঝিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে। সুদমুক্ত ঋণের প্রলোভন দেখানো অহিংস গণ-অভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ‘অহিংস গণ-অভ্যুত্থান’ সারা দেশের খেটে খাওয়া গরিব মানুষকে লক্ষ্য করে বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত এনে সেগুলো বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। এর বিনিময়ে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ জনপ্রতি এক হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। রবিবার রাত ১টার পর সারা দেশ থেকে বাস, পিকআপ ও মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় আসতে শুরু করে সাধারণ মানুষ। তবে বেশির ভাগই জানত, শাহবাগে গেলে সুদমুক্ত ঋণ পাওয়া যাবে।</p> <p>সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, তারা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারে, রবিবার রাতে ঢাকায় অনেক বাস ঢুকেছে। শাহবাগে আন্দোলন করতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এসব লোকজনকে আনা হয়েছে। এটা হতেই পারে যে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত একটি চক্র। প্রশ্ন হচ্ছে এমন একটি ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে, সেটা কেউ জানতে পারল না কেন? পুলিশ বলছে, অহিংস গণ-অভ্যুত্থান নামের সংগঠনটি আমাদের কাছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ লাখ লোকের সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়েছিল। অতীত ঘেঁটে দেখা গেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা আছে। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ অনুমতি দেয়নি। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এরা এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।</p> <p>মানুষের সরলতার সুযোগ নিয়ে সারা দেশে এমন অনেক প্রতিষ্ঠান সমবায় সমিতির নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব অনিয়ম দেখার দায়িত্ব কাদের? তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।</p>