<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মিথ্যারও মহত্ত্ব আছে। হাজার হাজার মানুষকে পাগল করিয়া দিতে পারে মিথ্যার মোহ। চিরকালের জন্যে সত্য হইয়াও থাকিতে পারে মিথ্যা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুতুলনাচের ইতিকথা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গ্রন্থে এভাবেই মিথ্যাকে সঙ্গায়িত করেছেন বাংলা সাহিত্যের মানিক-প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ পিতৃপ্রদত্ত এই নামে বিখ্যাত এই সাহিত্যিককে চেনে না বেশির ভাগ পাঠক, চেনে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় নামে। তাঁর জন্ম ১৯০৮ সালের ১৯ মে তৎকালীন বিহারের সাঁওতাল পরগনার দুমকা শহরে। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল ঢাকার বিক্রমপুরের কাছে মালবদিয়া গ্রামে। কলেজে থাকাকালে বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে গল্প লেখার সূচনা করেন মানিক। ১৯২৮ সালে তাঁর প্রথম গল্প </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অতসী মামী</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ছাপা হয় বিচিত্রা পত্রিকায়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাবার বদলির চাকরি। সে কারণে মানিককে দুমকা, আড়া, সাসারাম, কলকাতা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বারাসাত, টাঙ্গাইল ও মেদিনীপুরের বিভিন্ন স্কুলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। তিনি টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী স্কুলেও পড়েছেন। পাঠ্য বিষয়ে অনাগ্রহ, গল্প-উপন্যাস পাঠে অধিক সময় ব্যয় করার কারণে পর পর দুবার বিএসসিতে ফেল করেন। একাডেমিক পরীক্ষায় ফেল করা সেই মানিকই পরে জয় করেন অসংখ্য পাঠকের হৃদয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মানিক বন্দোপাধ্যায়ের রচনায় সমাজের নানা অসংগতি, মানুষের জীবনযাপন এবং অভিজ্ঞতার জটিলতা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে প্রতিফলিত হয়েছে।  তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে আছে পুতুলনাচের ইতিকথা, দিবারাত্রির কাব্য, পদ্মানদীর মাঝি, জননী ইত্যাদি। এসব গ্রন্থে তিনি তুলে ধরেছেন মানব জীবনের সংকট, আশা ও হতাশার এক বিচিত্র চিত্র। বিশেষ করে গ্রামীণ জীবনের বাস্তব চিত্র অত্যন্ত সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তুলতে দক্ষ ছিলেন তিনি। তাঁর রচনা বহু বিদেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখালেখিকে মানিক মূল পেশা হিসেবে বেছে নিলেও ১৯৪৩ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিওর কলকাতা কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধবিষয়ক নানাবিধ বেতার অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন। আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টি ও পার্টির সাহিত্য ফ্রন্টের সঙ্গে। ১৯৩৮ সালে তিনি সুরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে কমলা দেবীকে বিয়ে করেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জীবনের শেষ দিকে তীব্র আর্থিক কষ্টে ভুগেছেন তিনি। দীর্ঘদিন রোগভোগের পর ১৯৫৬ সালের ৩ ডিসেম্বর মাত্র ৪৮ বছর বয়সে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শক্তিশালী এই কথাসাহিত্যিকের জীবনাবসান ঘটে। এই স্বল্প সময়েও বাঙালি পাঠককে মানিক বন্দ্যোপাধ্যয় অর্ধশতাধিক উপন্যাস ও ২২৪টি গল্প উপহার দিয়ে গেছেন।</span></span></span></span></p>