<p>কক্সবাজারের চকরিয়ায় একটি বাড়িতে ডাকাতির খবর পেয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালাতে গেলে সশস্ত্র ডাকাতদল ও সন্ত্রাসীদের গুলি-ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন তানজিম ছরওয়ার নির্জন (২২) নামের এক সেনা কর্মকর্তা।</p> <p>আজ মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোররাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জন ডাকাত-সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। চকরিয়া থানার ওসি মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া কালের কণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি চকরিয়ায় যৌথ বাহিনীর আভিযানিক দলের সদস্য ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ড. ইউনূসের আগমনে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির আনন্দ সমাবেশ, আ. লীগের বিক্ষোভ" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/24/1727158967-a992f07d19721dbf74df68c1ed4e7c56.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ড. ইউনূসের আগমনে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির আনন্দ সমাবেশ, আ. লীগের বিক্ষোভ</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/09/24/1428419" target="_blank"> </a></div> </div> <p>পুলিশ জানায়, এ সময় ডাকাতরা ওই সেনা কর্মকর্তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গুলি করলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকে। এই অবস্থায় তাকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রামু এলাকায় মারা যান।</p> <p>সেনা কর্মকর্তা তানজিম ছরওয়ার নির্জনের বাড়িতে চলছে মাতম। পরিবার, স্বজন এবং এলাকাবাসীর কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা।</p> <p>পরিবারের সদস্য এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন তানজিম। পড়াশোনা করেছেন পাবনা ক্যাডেট কলেজে। এরপর সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। চলতি বছরের ডিসেম্বরে ক্যাপ্টেন হওয়ার কথা ছিল তার।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে বিএসএফ সদস্যকে আটক করল বিজিবি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/24/1727164039-a4dba9b67cf54c1c9da7b162dfbc1b74.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>অনুপ্রবেশের দায়ে বিএসএফ সদস্যকে আটক করল বিজিবি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/09/24/1428431" target="_blank"> </a></div> </div> <p>পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ডুলাহাজারার পূর্ব মাইজপাড়ার ওই বাড়িতে ডাকাত হানা দিয়েছে এমন খবর পেয়ে যৌথ বাহিনীর একটি দল অভিযানে যায়। এ সময় আভিযানিক দলে থাকা লেফটেন্যান্ট তানজিম সশস্ত্র এক ডাকাতকে জাপটে ধরে ফেলেন। তখনই ডাকাতের হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করা হয়। এমনকি অপরাপর ডাকাতরা উপর্যুপরি গুলি করতে থাকে যৌথ বাহিনীর টিমকে লক্ষ্য করে। সেখান থেকে একটি গুলি সেনা কর্মকর্তার শরীরে বিদ্ধ হয়।</p> <p>তানজিম তার বোনকে বলেছিলেন, ‘সামনে মিশনে যাব। তোমার কী লাগবে আপু?’ তিনি বাড়ির সবাইকে ঘুরতেও নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন।</p> <p>গতকাল সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) তানজিমের সঙ্গে কথা হয় তার বোনের। এ সময় তানজিম বলেন, ‘আপু, একটা অপারেশনের যাচ্ছি। অনেক অস্ত্র নিয়ে যেতে হচ্ছে। আমার জন্য দোয়া কোরো, আমাকে মাফ করে দিয়ো।’</p> <p>স্থানীয়রা জানায়, চকরিয়ার ডুলাহাজারার আলোচিত রিভার্জপাড়া, কাটাখালী, ডুমখালী এলাকাটি হচ্ছে সংরক্ষিত বনভূমি। কয়েক বছর ধরে সেই এলাকাটি ডাকাত-সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য এবং নিরাপদ আস্তানা হিসেবে গড়ে ওঠে। সেখান থেকে আশপাশের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র ডাকাতি, দস্যুতা, ধর্ষণসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছিল। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এসব অপরাধীদের তৎপরতা দমাতে আগে তেমন অভিযান চালাতে পারেনি। কারণ সংঘবদ্ধ এসব ডাকাত-সন্ত্রাসীদলের সদস্যসংখ্যা অর্ধশতাধিক। এমনকি তাদের হেফাজতে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র।</p> <p>চকরিয়া থানার ওসি মো. মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ডাকাতকবলিত একটি বাড়িতে অভিযান চালাতে গেলে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি করা হয় সশস্ত্র ডাকাত-সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে। এ সময় এক ডাকাতকে ধরা হলে সেই ডাকাত সেনাবাহিনীর অফিসার লেফটেন্যান্ট তানজিমকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। একটি গুলিও করা হয় তাকে লক্ষ্য করে। এই অবস্থায় তাকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রামু এলাকায় মারা যান। ঘটনার পর থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বেশ কয়েকজন ডাকাত-সন্ত্রাসীকে আটক করা হয় বলে শুনেছি। তবে এই বিষয়ে সবিস্তারে পরে জানানো হবে।’</p>