এবার ব্রিটিশ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় আঘাত হানার দাবি

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
এবার ব্রিটিশ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় আঘাত হানার দাবি
যুক্তরাজ্যের স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার ভিতরে এবার যুক্তরাজ্যে তৈরি স্টর্ম শ্যাডো মিসাইল দিয়ে হামলা করল ইউক্রেন। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, গতকাল বুধবার দূরপাল্লার ব্রিটিশ ক্ষেপণাস্ত্র স্টর্ম শ্যাডো দিয়ে রাশিয়ার গভীরে আঘাত করেছে ইউক্রেন। তবে শুধু ব্লুমবার্গ নয়, দ্য গার্ডিয়ান, দ্য ফিনান্সিয়াল টাইমসও সূত্র উদ্ধৃত করে এবং সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও দেখে একই খবর করেছে। এর আগে মঙ্গলবার আমেরিকার তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার ভিতরে আঘাত করার চেষ্টা করেছে ইউক্রেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের অফিস জানিয়ছে, তারা এই প্রতিবেদনে নিয়ে কোনো মন্তব্য করবে না। রাশিয়াকে যুক্তরাজ্য গত বছর স্টর্ম শ্যাডো দূরপাল্লার মিসাইল দিয়েছিল। কিন্তু শর্ত ছিল, তা ইউক্রেনের ভিতরেই ব্যবহার করতে হবে। গত কয়েক মাস ধরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ায় আঘাত করার অনুমতি চাইছিলেন।

স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র ২৫০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যে গিয়ে আঘাত করতে পারে। ফলে এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেন রাশিয়ার গভীরে আক্রমণ করতে পারে।

আরো পড়ুন
এবার উ. কোরিয়াকে ৭০টিরও বেশি প্রাণী উপহার দিলেন পুতিন

এবার উ. কোরিয়াকে ৭০টিরও বেশি প্রাণী উপহার দিলেন পুতিন

 

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এর আগেই বলেছেন, মার্কিন ও ব্রিটিশ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে যদি রাশিয়ার ভিতরে আক্রমণ চালানো হয়, তার অর্থ হবে, ন্যাটো সরাসরি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল। 

এদিকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অনুমতির পর এবার ইউক্রেনকে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অ্যান্টি-পার্সোনেল ল্যান্ড মাইন বা স্থলমাইন দিতে রাজি হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

গতকাল বুধবার একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছিল বিবিসি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা জানান, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ান সেনাদের মোকাবেলা করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই এসব মাইন ইউক্রেনে পাঠানো হবে। ওয়াশিংটন আশা করছে, ইউক্রেনের তাদের ভূখণ্ডে এসব মাইন ব্যবহার করবে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য মার্কিন ল্যান্ডমাইন খুবই জরুরি।

এর আগে আমেরিকার এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, তারা ইউক্রেনকে ল্যান্ডমাইন দিচ্ছেন। তবে এই ল্যান্ডমাইনগুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবহার করতে হবে। না হলে এর ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যাবে। জেলেনস্কি বলেছেন, এর ফলে ইউক্রেনের সেনা আরো শক্তির সঙ্গে লড়াই করতে পারবে।

সূত্র: ডয়চে ভেলে বাংলা
 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ

ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের
মিসর, জর্দান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা শনিবার কায়রোতে এক বৈঠকে যোগ দেন। ছবি : এএফপি

মিসর, জর্দান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব ও কাতারের শীর্ষ কূটনীতিকরা ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছেন। কায়রোতে শনিবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বৈঠকটি হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি প্রস্তাবের পর, যেখানে তিনি গাজা উপত্যকায় থাকা ফিলিস্তিনিদের মিসর ও জর্দানে স্থানান্তরের ধারণা দিয়েছিলেন।

আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ফিলিস্তিনিদের ‘অখণ্ড অধিকার’ লঙ্ঘন করার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, যা ‘বসতি স্থাপন, বিতাড়ন, বাড়ি ধ্বংস, সংযুক্তকরণ, বাস্তুচ্যুতির মাধ্যমে জনগণকে ভূমি থেকে উচ্ছেদ, উচ্ছেদকে উৎসাহিত করা বা ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে উৎখাতের’ মতো যেকোনো প্রকার চেষ্টা হতে পারে।

ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র মিসর ও জর্দান বারবার ট্রাম্পের গাজা ‘পরিষ্কারকরণ’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতেহ আল-সিসি বুধবার বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ একটি অবিচার, এতে আমরা অংশীদার হতে পারি না।’

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা শনিবার আরো বলেন, ‘আমরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে ন্যায্য ও পূর্ণাঙ্গ শান্তি অর্জনের জন্য কাজ করতে আগ্রহী, দ্বিরাষ্ট্র সমাধান অনুযায়ী।’

বৈঠকে আরব লীগ সচিবালয়ের মহাসচিব আহমেদ আবুল গেইথ ও ফিলিস্তিন মুক্তি সংগঠনের কার্যনির্বাহী কমিটির মহাসচিব হুসেইন আল-শেইখ উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া ইসরায়েল জাতিসংঘের মূল সাহায্য সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করার দুই দিন পর মন্ত্রীরা সংস্থাটির ‘মৌলিক, অপরিহার্য ও অপরিবর্তনীয় ভূমিকা’ ফের তুলে ধরেন এবং ‘এটিকে এড়িয়ে যাওয়ার বা এর ভূমিকা সীমিত করার যেকোনো প্রচেষ্টাকে পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান’ করেন।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সুদানে গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলায় নিহত ৫৬

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সুদানে গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলায় নিহত ৫৬
সুদানের ওমদুরমান শহরে হামলার পর ধোঁয়া উড়ছে। ফাইল ছবি : এএফপি

সুদানের বৃহত্তর খার্তুমে শনিবার গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলায় কমপক্ষে ৫৬ জন নিহত হয়েছে। একটি চিকিৎসা সূত্র ও সুদানি অ্যাক্টিভিস্টদের বরাত দিয়ে এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

একটি চিকিৎসা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, এদিন ওমদুরমানে একটি ব্যস্ত বাজারে র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) গোলাবর্ষণে ৫৪ জন নিহত হয়েছে। শহরের আল-নাও হাসপাতাল হতাহত মানুষ দিয়ে ভরে গেছে।

অন্যদিকে নিল নদের ওপারে আরএসএফ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিমান হামলায় দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও অনেক মানুষ আহত হয়েছে বলে স্থানীয় জরুরি প্রতিক্রিয়া সংস্থা ইআরআর জানিয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ নিয়মিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে, যা এক ভয়াবহ সংঘর্ষে পরিণত হয়েছে। এর ফলে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে এবং এক কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। 

হামলা থেকে বেঁচে ফেরা এক ব্যক্তি এএফপিকে বলেছেন, গোলাগুলো সবজি বাজারের মাঝখানে পড়েছিল, তাই এত বেশি মানুষ হতাহত হয়েছে।

এ ছাড়া আল-নাও হাসপাতালে এক স্বেচ্ছাসেবক এএফপিকে জানিয়েছেন, আহতদের পরিবহনের জন্য কাফন, রক্তদাতা ও স্ট্রেচারের ঘাটতি রয়েছে। হাসপাতালটি ওই এলাকায় থাকা শেষ মেডিক্যাল স্থাপনাগুলোর একটি এবং এটি বারবার আক্রমণের শিকার হয়েছে। 

এদিকে রাজধানীতে কয়েক মাস ধরে আপাত অচলাবস্থার পর সেনাবাহিনী এই মাসে খার্তুম সদর দপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি আরএসএফকে তাদের অনেক শক্ত ঘাঁটি থেকে বিতাড়িত করে শহরের উপকণ্ঠে ক্রমবর্ধমানভাবে আক্রমণ করেছে।

তবে হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপিকে জানিয়েছেন, গোলাবর্ষণটি পশ্চিম ওমদুরমান থেকে করা হয়েছিল, যেখানে আরএসএফ এখনো নিয়ন্ত্রণ করছে।

এ হামলার এক দিন আগে আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগলো সেনাবাহিনীর কাছ থেকে রাজধানী পুনরুদ্ধারের হুমকি দিয়েছেন। তিনি সেনাদের উদ্দেশে একটি বিরল ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমরা তাদের (খার্তুম থেকে) আগে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম এবং আমরা আবারও তাদের তাড়িয়ে দেব।’

এএফপি জানিয়েছে, প্রথম গোলাবর্ষণ শুরু হওয়ার প্রায় ২২ মাস পর সুদানের রাজধানী খার্তুম তার আগের রূপ হারিয়ে ফেলেছে। দেশজুড়ে হাজারো মানুষের মধ্যে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত রাজধানীতেই ২৬ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের একটি প্রতিবেদনে এ পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, কমপক্ষে ৩৬ লাখ মানুষ রাজধানী ছেড়ে চলে গেছে। সম্পূর্ণ এলাকা ফাঁকা হয়ে গেছে এবং যোদ্ধারা দখল করেছে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সুদানের সেনাবাহিনী প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্কুল, বাজার ও হাসপাতাল আক্রমণ এবং খাবারের অভাবকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ করেছিল। এক সপ্তাহ পর ওয়াশিংটন সুদানের দারফুর অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগে আরএসএফের দাগলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যেখানে বাহিনীটির আধিপত্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, দাগলোর বাহিনী ‘জাতিগত নিধন’ সংঘটিত করেছে।

মন্তব্য

সিরিয়ায় আসাদের সম্প্রদায়ের গ্রামে হামলা, নিহত ১০

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
সিরিয়ায় আসাদের সম্প্রদায়ের গ্রামে হামলা, নিহত ১০
সিরিয়ার মানচিত্র। ফাইল ছবি : আলজাজিরা

সিরিয়ার হামা প্রদেশের আরঝাহ গ্রামে বন্দুকধারীদের হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের আলাওইত সম্প্রদায়ের সদস্যরা রয়েছে। একটি পর্যবেক্ষক সংস্থা শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে।

ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, শুক্রবারের হামলায় আলাওইত সম্প্রদায়ের নাগরিকরা বাস করা উত্তরাঞ্চলীয় হামার আরঝাহ গ্রামে ১০ জন নিহত হয়েছে। হামলাকারীরা বাড়ির দরজায় টোকা দিয়ে মানুষের দিকে সাইলেন্সারযুক্ত পিস্তল দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়।

 

সংস্থার প্রধান রামি আবদেল রাহমান জানিয়েছেন, হামলার শিকারদের মধ্যে একটি শিশু ও এক বৃদ্ধা নারীও রয়েছেন।

এ ছাড়া সিরিয়ার আল-ওয়াতান পত্রিকা হামার এক নিরাপত্তা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী আরঝাহ অঞ্চলের চারপাশ ঘেরাও করে হত্যাকারীদের ধরার চেষ্টা করছে। হামলায় সাবেক কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যরা নিহতদের মধ্যে ছিলেন।  

একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, দুটি গাড়িতে সাতজন বন্দুকধারী গ্রামে প্রবেশ করে এবং অস্ত্র পরিদর্শনের অজুহাতে বাড়িগুলোতে হানা দেয়।

হামলাকারীরা পুরুষদের বাড়ি থেকে বের করে এনে তাদের হাঁটু গেড়ে বসিয়ে ‘ঠাণ্ডা মাথায়’ হত্যা করে। এরপর হামলাকারীরা পালিয়ে যায় এবং নিহতদের হামা ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর লাশগুলো দাফন করা হয়।

বাশার আল-আসাদকে ডিসেম্বরের প্রথম দিকে উৎখাত করা সিরিয়ার নতুন শাসকরা আশ্বস্ত করার পরও আলাওইত সম্প্রদায়ের সদস্যরা প্রতিশোধের ভয় পায়।

আসাদকে উৎখাতের পর থেকে আলাওইতদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বেড়ে গেছে। অবজারভেটরি অন্তত ১৬২টি হত্যাকাণ্ডের খবর জানিয়েছে।  

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

পাকিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর ১৮ সদস্য ও ২৩ সন্ত্রাসী নিহত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
পাকিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর ১৮ সদস্য ও ২৩ সন্ত্রাসী নিহত
পাকিস্তানে একটি রাস্তায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। ফাইল ছবি : এএফপি

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের কালাত জেলায় পৃথক অভিযানে ২৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এর আগে শুক্রবার রাতে মাঙ্গোচর শহরে অভিযানের সময় সন্ত্রাসীরা রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করলে আধাসামরিক বাহিনী ফ্রন্টিয়ার কর্পসের (এফসি) ১৮ সদস্য নিহত হন। দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে।

আইএসপিআরের মতে, শত্রু শক্তির ইন্ধনে চালানো এই কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলার উদ্দেশ্য ছিল প্রদেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্নিত করা এবং মূলত নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করা।

হামলার পর নিরাপত্তা বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সংস্থাগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মোতায়েন হয় এবং সন্ত্রাসীদের এই ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়।

প্রথমে অভিযানে ১২ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে বলে জানানো হয়। তবে পাশাপাশি আইএসপিআর জানায়, এই অভিযানের সময় ‘দেশের ১৮ সাহসী সন্তান বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে’ নিহত হয়েছেন। এরপর শনিবার হরনাই জেলায় পরবর্তী অভিযানে আরো ১১ জন সন্ত্রাসীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

ফলে নিহত সন্ত্রাসীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩-এ।

এই কাপুরুষোচিত হামলার পরিকল্পনাকারী ও সহযোগীদের বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে আইএসপিআর জানিয়েছে। পাশাপাশি তারা বলেছে, ‘নিরাপত্তা বাহিনী বেলুচিস্তানের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতি ব্যাহত করার প্রচেষ্টা রুখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের সাহসী সেনাদের এই আত্মত্যাগ আমাদের সংকল্প আরো দৃঢ় করেছে।

এদিকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি নিরাপত্তা বাহিনীর ১৮ সদস্যের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তিনি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন এবং তাদের উচ্চ মর্যাদার জন্য প্রার্থনা করেছেন। একই সঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর ধৈর্য ধারণের জন্য প্রার্থনা করেছেন।

এই ঘটনা এমন এক সময় ঘটল, যখন এর আগের দিন খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশে পাঁচটি আলাদা অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনী ১০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে বলে শুক্রবার আইএসপিআর জানায়।

২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর পাকিস্তানে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী খাইবারপাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে।

২০২৪ সাল পাকিস্তানের বেসামরিক ও সামরিক বাহিনীর জন্য এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর ছিল। সেন্টার ফর সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (সিআরএসএস) বার্ষিক নিরাপত্তা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে পাকিস্তানে নিরাপত্তা বাহিনীর কমপক্ষে ৬৮৫ সদস্য নিহত হয়েছেন এবং ৪৪৪টি সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।

সিআরএসএসের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বেসামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মিলিয়ে মোট এক হাজার ৬১২ জন নিহত হয়েছে, যা ওই বছরের মোট প্রাণহানির ৬৩ শতাংশ। একই সময়ে ৯৩৪ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৭৩ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া ২০২৪ সালে পাকিস্তানে সহিংসতায় মোট দুই হাজার ৫৪৬ জন নিহত এবং দুই হাজার ২৬৭ জন আহত হয়েছে, যার মধ্যে বেসামরিক নাগরিক, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও সন্ত্রাসীরা অন্তর্ভুক্ত।

এদিকে ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সহিংসতায় প্রাণহানির হার ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। গড় হিসাবে প্রতিদিন প্রায় সাতজন নিহত হয়েছে। বছরের অন্যান্য মাসের তুলনায় নভেম্বর ছিল সবচেয়ে প্রাণঘাতী। এই সহিংসতা সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশে, যেখানে এক হাজার ৬১৬ জন নিহত হয়েছে। এর পরেই রয়েছে বেলুচিস্তান, যেখানে নিহতের সংখ্যা ৭৮২।

২০২৪ সালে পাকিস্তানে এক হাজার ১৬৬টি সন্ত্রাসী হামলা ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের ঘটনা ঘটে, যা দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য এক অশুভ বছর হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

সূত্র : জিও নিউজ

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ